Monday, November 18

মিরপুরে গৃহকর্মীকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা


ঢাকা : রাজধানীর মিরপুরের পূর্ব শেওড়াপাড়ার একটি বাড়ির 'ছাদ থেকে ফেলে এক গৃহকর্মীকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

সোমবার এ ঘটনায় বাড়ির মালিক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের স্ত্রী তানিয়া আক্তার মুন্নি ও শ্যালককে পুলিশ গ্রেফতার করেছ।

পুলিশ ধারণা করছে, গৃহকর্মীকে হত্যা করে লাশ ফেলে দেয়া হয়েছে। তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ জনতার সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। নিহত গৃহকর্মীর নাম রিতা বেগম (২০)। তার বাড়ি সুনামগঞ্জে।

পল্লবী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) কামাল হোসেন বলেন, খবর পাওয়ার পর পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে স্থানীয় জনতার সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এক পর্যায়ে টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে। রিতার মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত থাকা সন্দেহে দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসীর জানান, পূর্ব শেওড়াপাড়ার ৯১১ নম্বর বাড়ির অষ্টম তলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের বাসায় কাজ করতেন রিতা। কুতুব উদ্দিন বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে সুদান মিশনে কর্মরত। চার মাস আগে রিতা এ বাসায় কাজে যোগ দেয়। আজ সকাল ৮ টার দিকে কে বা কারা বাড়ির ছাদ থেকে রিতাকে ফেলে দেয়। এসময় পাশের একটি নির্মাণাধীন ভবনে কাজে নিয়োজিত কিছু শ্রমিক তা দেখে চিত্কার করতে থাকে। তারা বাসার নীচে এসে দেখে একজন নারীর রক্তাক্ত দেহ পড়ে আছে। পরে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে ঐ বাড়ির গেট ও সামেন থাকা একটি প্রাইভেট কার ভাংচুর করে। এসময় তারা অভিযুক্তদের 'ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই' বলে মিছিল করে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ ছুটে আসে। বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশকে ঘেরাও করে রাখে। তারা ঐ বাড়ির গৃহকর্ত্রীকে গ্রেফতারের দাবি জানায়। এসময় পুলিশ বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে প্রথমে লাঠিচার্জ করে। একপর্যায়ে জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। বিক্ষুব্ধ জনতা লাশ ঘিরে রাখে। বিক্ষুব্ধ জনতার সঙ্গে হাতাহাতির পর লাশ পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়।

পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ঐ গৃহকর্মীর গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জে পরিবারের কাছে খবর পাঠানো হয়েছে। তারা ঢাকায় এসে অভিযোগ দেয়ার পর মামলা দায়ের কবে। এছাড়া এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা ময়না তদন্তের রিপোর্টের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।

এদিকে, পুলিশের কাছে গ্রেফতারকৃত গৃহকর্ত্রী মুন্নি দাবি করেছেন, কাজের মেয়ে রিতা বাসার বাথরুমের ভেনটিলেটর দিয়ে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে পুলিশ ঐ বাড়ির বাথরুম সরজমিন পরিদর্শন করে এরকম কোন আলামত পায়নি।

কাফরুল থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী বলেন, এটা হত্যা না আত্মহত্যা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে, ঘটনা সর্ম্পকে জানতে বাসার গৃহকর্ত্রী ও তার ভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে।---ডিনিউজ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়