Wednesday, November 20

নরসিংদীর ডিসি, ম্যাজিষ্ট্রেট ও তিতাসের কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ

নরসিংদী: ৪ জন আনসার সমন্বয়ে অবৈধ গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে অবৈধ গ্রাহক-শ্রমিক-জনতার অবরোধের শিকার হয়েছে নরসিংদীর ডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মাহবুবুল করিমের নেতৃত্বাধীন তিতাস গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নকারী দল। বুধবার সকালে নরসিংদী সদর উপজেলার চৈতাব ও কবিরাজপুর এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। সহস্রাধিক নারী-পুরুষ রাস্তায় টায়ার ও কাঠে আগুন ধরিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেছে। এর ফলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ৩ ঘন্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থেকেছে। তিতাস গ্যাস অফিসের একটি ওয়েল্ডার মেশিন ভাংচুর করে। এ অবস্থায় নরসিংদীর ডিসি মোঃওবায়দুল আজম অবৈধ গ্রাহক-জনতার কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়ে পরে তিনি পূনরায় সংযোগ পূনঃস্থাপন করলে অবরোধকারীরা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়। 
জানা গেছে, নরসিংদীর মাধবদী, পাইকারচর, শেখেরচর, পাঁচদোনা, ঘোড়াশাল ইত্যাদি এলাকায় এক শ্রেণীর তিতাস গ্যাসের ঠিকাদার ও অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীর যোগসাজসে এলাকার কিছু অসাধু শিল্পপতি ও প্রভাবশালী ব্যক্তি ১৬টি সার্ভিস লাইন থেকে অবৈধ গ্যাস সংযোগ লাইন নির্মাণ করে দীর্ঘ দিন ধরে অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করতে থাকে। ব্যাপারটি জানাজানি হয়ে গেলে সদ্য নিযুক্ত নরসিংদী তিতাস গ্যাসের ডিজিএম ও ম্যানেজারের নেতৃত্বে এলাকাসমূহে একটি জরীপ চালানো হয়। গত ৪ নভেম্বর নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় নরসিংদীর ডিজিএম জানান, এসব এলাকা সমূহে ২৬ হাজার ৬শ মিটার অবৈধ গ্যাস লাইন রয়েছে। যা থেকে শত শত অবৈধ গ্রাহক দিনের পর দিন অবৈধ গ্যাস ব্যবহার করছে। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি হচ্ছে। এ অবস্থায় নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোঃ ওবায়দুল আজম এ সব অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত প্রদান করেন। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী  বুধবার নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মাহবুবুল করিম, তিতাস গ্যাসের ম্যানেজার তৌহিদুল ইসলাম, ডেপুটি ম্যানেজার আনোয়ার পারভেজ, উপ-সহকারী প্রকৌশলী অকিল উদ্দিন ও খালেদ হোসেন ৪জন সশস্ত্র আনসারকে নিয়ে সকাল সাড়ে ১০ টায় চৈতাব এলাকায় গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে যায়। সেখানে ড্রীম হলিডে পার্কের সন্নিকটে একটি গ্যাস লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর এলাকায় হৈ চৈ পড়ে যায়। অবৈধ গ্রাহকরা সংঘবদ্ধভাবে মিছিল নিয়ে রাস্তায় উঠে আসে। তাদের সাথে শরিক হয় অবৈধ গ্যাস ব্যবহারকারী এক শ্রেণীর শ্রমিক-জনতা। মূহূর্তের মধ্যে সহস্রাধিক লোক রাস্তায় নেমে এসে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে। তারা টায়ার ও কাঠে আগুন লাগিয়ে রাস্তায় অবরোধ সৃষ্টি করে। এসময় কিছু সংখ্যক উশৃংখল জনতা তিতাসের টে নেশিয়ান আরিফ চৌধুরী, শরিফুল ইসলাম, শের মোহাম্মদ ও রকিব উদ্দিনকে মারধর করে এবং তাদের নিয়ন্ত্রনাধীন ওয়েল্ডিং মেশিনটি ভাংচুর করে পার্শ্ববতী রাস্তার খাদে ফেলে দেয়। এসময় রাস্তার দুপাশে শত শত বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন আটকা পড়ে। সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত দীর্ঘ ৩ ঘন্টা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। খবর পেয়ে নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোঃ ওবায়দুল আজম ঘটনাস্থলে গেলে শত শত জনতা তাকে ঘিরে ফেলে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়। অবরোধকারীদের দাবীর মুখে বাধ্য হয়ে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নরসিংদী থেকে রাইজারহেড নিয়ে গিয়ে পূনরায় সংযোগ স্থাপন করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে গ্রাহক-জনতা অবরোধ ছেড়ে চলে যায়। এব্যাপারে তিতাস গ্যাসের ম্যানেজার তৌহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিচ্ছিন্নকৃত অবৈধ লাইনটিতে কমবেশী ৪০টি অবৈধ আবাসিক সংযোগ ছিল। সরকারী কাজে বাঁধাদানের অপরাধে অবৈধ গ্রাহক ও বাঁধাদানকারীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।----ডিনিউজ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়