নাটোর: নাটোরের বড়াইগ্রামে উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নূর বাবুর পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের হামলায় এবার নিহত হলো বাবুর চাচা উপজেলা যুবদলের সহ-সভাপতি আবুল বাশার মাষ্টার (৩৩)। এসময় ৫জন গুলিবিদ্ধসহ ১০জন আহত হয়েছে। শুক্রবার মাগরিবের নামাজের সময় স্থানীয় মেরিগাছা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষনিক শনিবার বড়াইগ্রাম উপজেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহবান করেছের জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক মোঃ আমিনুল হক।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানায়, কয়েকদিন আগে উপজেলা যুবদলের সহ-সভাপতি আবুল বাশার মাষ্টারের স্ত্রী রিক্তা মারা যায়। শুক্রবার মাগরিবের নামাজের সময় নিহত উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নূর বাবুর চাচা উপজেলা যুবদলের সহ-সভাপতি আবুল বাশার মাষ্টার তার ১০/১২জন কর্মী সমর্থকসহ শশুড় বাড়ির একটি অনুষ্ঠান থেকে ফেরার সময় মেরিগাছা বাজারের পাশে হাইস্কুলের পিছনে নগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক বকুলের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা তাদের উপর দুই দিক থেকে হামলা চালায়। হামলায় আবুল বাশার মাষ্টার, সেলিম (২৫), জিন্নাহ (৩০), বাবলু (৩৫) মোস্তাফা (৩০) ও তাজুল (২৯) গুলিবিদ্ধ হয়। এ সময় হামলাকারীরা আহত আবুল বাশার মাষ্টারকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েও জখম করে। এ সময় তার পায়ের রগ কেটে দেয়া হয়। পরে তাকে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, হামলাকারী নগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক বকুল মেরিগাছা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ছিলো। নিহত আবুল বাশার একই স্কুলের কম্পিউটার বিষয়ের সহকারী শিক্ষক। সম্প্রতি বকুল সভাপতির পদ থেকে গোপনে পদত্যাগ করে ঐ স্কুলের সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নেয়। এর পরপরই তাকে রাতের অন্ধাকারে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা মারপিট করে। এই মারপিটের অভিযোগে বকুল বাদী হয়ে নিহত আবুল বাশার মাষ্টারসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা করে। এর জের ধরেই শুত্রবারের এই হামলার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে তাদের ধারনা। এ দিকে নিহত উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নূর বাবুর চাচা উপজেলা যুবদলের সহ-সভাপতি আবুল বাশার মাষ্টারকে বাবুর মতো একই কায়দায় হত্যার নিন্দা ও দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছে নিহত বাবুর সহধর্মীনি মহুয়া নূর বাবু, উপজেলা যুবদল সভাপতি সরদার রফিকুল ইসলাম ও জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক এমপি অধ্যাপক কাজী গোলাম মোর্শেদ।
এ ব্যাপারে নাটোরের পুলিশ সুপার ডক্টর নাহিদ হোসেন বলেছেন, এটা রাজনৈতিক হত্যাকান্ড নয়। বকুল সম্প্রতি রাস্তায় পাট শুকানোর একটি ঘটনা নিয়ে স্থানীয় নসিমন চালকদের সাথে তার বিরোধ ছিলো। এ ঘটনায় নিহত বাশারের বিরুদ্ধে একটি মামলাও ছিলো। এ সব বিরোধেই বকুল হোসেনদের হামলায় এ ঘটনা ঘটেছে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
প্রসঙ্গত ২০১০ সালের ৮ অক্টোবর প্রকাশ্যে বনপাড়া বাজারে মিছিলের ওপর হামলা করে পিটিয়ে ও রগ কেটে উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নূর বাবুকে হত্যা করে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মিরা। এদিকে বাবুর মামলার কোন সুরাহা না হতেই ঘটনার ৩ বছরের মাথায় বাবুর চাচাকেও হত্যা করলো সরকার দলীয় নেতাকর্মিরা। ---ডিনিউজ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়