Sunday, June 2

উদয়ন স্কুলের অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি

ঢাবি: গত ২২ মে তারিখে শিক্ষার্থীদের জামার হাতা কাটার নির্দেশদাতা হিসেবে অধ্যক্ষকে দায়ী করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত রাজধানীর স্বনামধন্য উদয়ন উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ডঃ উম্মে সালেমা বেগমের পদত্যাগের দাবিতে প্রতিদিন মানববন্ধন করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির অভিভাবক পরিষদ। অধ্যক্ষ তদন্ত কাজকে প্রভাবিত করছে বলে উল্লেখ করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে তারা। শনিবার সকালে বিদ্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানব বন্ধনে একথা ঘোষণার পাশাপাশি তাদের সাত দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়।  

দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- তদন্তে প্রভাব বিস্তারকারী ও বিদ্যালয় পরিচালনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ অধ্যক্ষ ডঃ উম্মে সালেমা বেগমের অপসারণ, ঘটনার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক মাহবুবা খানম কল্পনার চুক্তি বাতিল ও উক্ত কর্মকাণ্ড সহ অন্যান্য অপকর্মে প্ররোচনাকারী, উৎসাহদাতা কিংবা সহযোগিতাকারী শিক্ষকদের সুষ্ঠু তদন্তে সাপেক্ষে যথাযথ শাস্তি প্রদান; শালীনতা বিবেচনায় ছাত্রীদের ড্রেস কোডে নমনীয়তা এনে জামার হাতা ন্যূনতম সাত ইঞ্চি লম্বা রাখার বিধান চালু, সরকারী নীতিমালার আলোকে দুর্বল ও পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়েই কোচিং নিশ্চিতকরন; সকল পাবলিক পরীক্ষা সহ একাডেমিক পরীক্ষার(সাময়িক ও শ্রেণী পরীক্ষা) ফলাফল মুল্যায়নোত্তর অবক্ষয়ের কারণ ব্যাখায়ন পূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ, পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলে সেরা হওয়ার সংখ্যাতাত্ত্বিক পয়েন্ট বাড়াতে এবং সহোদরকে ভর্তির সুযোগ দিতে অবিলম্বে ডে শিফট চালু ইত্যাদি।

উল্লেখ্য, বিদ্যালয়ের ড্রেস কোড ভঙ্গের অভিযোগ এনে প্রতিষ্ঠানটির সহকারী প্রধান শিক্ষিকা মাহবুবা খানম কল্পনা গত ২২ মে তারিখে ফুলহাতা জামা পড়ে আসা নবম শ্রেনির  প্রায় অর্ধশত ছাত্রীর জামার হাতা কাচি দিয়ে কেটে দেন। ঘটনাটিকে ‘বর্বর’ ও ‘ন্যাক্কারজনক’ বলে অভিহিত করে অভিভাবকরা সহকারী প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি তোলে। ইতোমধ্যে ঘটনায় সরাসরি জড়িত মাহবুবা খানম কল্পনাকে বিদ্যালয় থেকে অপসারণ করা হয়েছে। কল্পনা শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর স্ত্রী এবং কয়েক বছর আগে প্রতিষ্ঠানটিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “এ বর্বর ঘটনা অধ্যক্ষের নির্দেশেই ঘটেছে। আমরা ভেবেছিলাম অধ্যক্ষ নিজ থেকে পদত্যাগ করে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিবে। কিন্তু তিনি তা করেনি। অভিযুক্ত অধ্যক্ষ নিজ পদে বহাল থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত সম্ভব নয়” অধ্যক্ষের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে তারা জানান। পাশাপাশি তাদের সাত দফা দাবি আদায়ে অভিভাবকদের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে দাবিগুলো স্কুল গভর্নিং বডি, ঢাবি উপাচার্য এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে পেশ করা হবে। 

এদিকে শনিবার সকালে উপরোক্ত দাবিতে মানব বন্ধন চলাকালেই অভিভাবকদের আরেকটি অংশ স্কুলের সামনে রাস্তার বিপরীত পাশে দাঁড়িয়ে স্কুলের অতিরিক্ত দুই হাজার টাকা উন্নয়ন ফি কমানোর দাবিতে মানববন্ধন শুরু করে। এতে মিনারুল হোসেন ভুঁইয়া নামে এক অভিভাবক বলেন, “২২ তারিখের ঘটনার জন্য শিক্ষক কল্পনাকে অপসারণ করা হয়েছে এবং আরও যারা দায়ী তাদের খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত কমিটি কাজ করছে। এই কমিটির প্রতি আমাদের আস্থা আছে। আমাদের দাবি উন্নয়ন ফি বৃদ্ধি বাতিল করতে হবে।” তবে অভিভাবক ফোরাম পক্ষ অভিযোগ করেন, তাঁদের ন্যায্য দাবিকে বানচাল করার জন্যই আরেকটি পক্ষ সেখানে দাঁড়িয়েছে।

একই স্থানে একই সময়ে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে দুই পক্ষ মানব বন্ধন করায় ঘটনাস্থলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে উদ্দেশ্য করে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই মানববন্ধন শেষ হয়।(ডিনিউজ)

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়