গত শনিবার অবাধ জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিয়েছে দেশটির জনগণ। আগামীকাল সোমাবার নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ করা শুরু হবে বলে জানিয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনী ফলাফলের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে লিবিয়ার নাগরিকরা। গত শনিবার সকাল ৮ টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে টানা রাত ৮ টা পর্যন্ত চলে। ত্রিপোলিসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট দিয়েছে মানুষ। তবে পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান শহর বেনগাজিতে ছিল বিপরীত অবস্থা। আরো স্বায়ত্বশাসনের দাবীতে ভোট বর্জনকারী গোষ্ঠিগুলো বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। কয়েকটি ভোট কেন্দ্রের ব্যালট পেপার আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।সহিংসতা সত্বেও ৬০ বছর পর প্রথম অবাধ জাতীয় নির্বাচন শেষ হওয়ার পর উৎসবে মেতে উঠে লিবিয়ার নাগরিকরা। গাদ্দাফির একনায়কত্বের পতনের পর গণতান্ত্রিকতার প্রথম ধাপ হিসেবে এ নির্বাচনকে বিবেচনা করা হচ্ছে।এখানে নির্বাচন বর্জনকারী পক্ষগুলোর সঙ্গে নির্বাচন সমর্থনকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন মারা গেছে।ত্রিপোলিতে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২৮ লাখ তালিকাভুক্ত ভোটারের মধ্যে ১৬ লাখ ভোটার ভোট দিয়েছে। সারা দেশে মোট ৬০ শতাংশ ভোট পড়েছে।এ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশটিতে ২০০ সদস্যের একটি অস্থায়ী জাতীয় পরিষদ গঠিত হবে। আর এ পরিষদই একজন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের মাধ্যমে মন্ত্রীসভা গঠন করবে।নতুন সরকার দেশের জন্য একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করবে। আর ওই সংবিধানের আলোকে আগামী বছর একটি পূর্ণাঙ্গ পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।নির্বাচনে ৩ হাজার ৭০০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে ইসলামপন্থী দলগুলোই নির্বাচনে ভালো করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে আরব বিশ্বের গণতান্ত্রিক আন্দোলন �আরব বসন্তে�র প্রভাবে গণতন্ত্রের পথে অগ্রসর হওয়া তিউনিসিয়া ও মিশরেও ইসলামপন্থীরা নির্বাচনে ভালো ফলাফল করেছেপরিবার পরিজন নিয়ে উৎসবরত শহরটির এক নারী চিৎকার করে বলছিলেন, �আল্লাহ মাহান, আমরা এখন স্বাধীন- প্রথমবারের মতো সির্তে মুক্ত হয়েছে।�ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর উৎসবমুখর ত্রিপোলির জনতা বাজি পুড়িয়ে আনন্দ প্রকাশ করে। আর বেনগাজির নির্বাচন বিরোধীরা সাগরের দিকে রকেট চালিত গ্রেনেড ছুঁড়ে তাদের ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করে। তবে গাদ্দাফির জন্ম শহর সির্তে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।এছাড়া পূর্বাঞ্চলীয় আরেক শহর আজদাবিয়ায় ব্যালট বাক্স চুরির চেষ্টাকালে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেছে নিরাপত্তারক্ষীরা।ভোট শেষে সরকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশব্যাপী ৯৮ শতাংশ ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে।নির্বাচন কমিশনের প্রধান নূরি আল আব্বার জানিয়েছেন, সোমবার থেকে ফলাফল প্রকাশ শুরু করবেন তারা।এ সময় তিনি বলেন, �প্রথম বিজয়ী লিবিয়ার জনগণ।�কিন্তু কয়েকটি এলাকায়, বিশেষ করে পূর্বাঞ্চলে বিশৃঙ্খলার কারণে ভোট গ্রহণ বাধাগ্রস্থ হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১ হাজার ৫০০�র বেশি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১০১ টি ভোট কেন্দ্র খোলা সম্ভব হয়নি। তবে সার্বিকভাবে ভোটাভুটিতে জনগণের ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন তারা। ১৯৬৯ সালে কর্ণেল গাদ্দাফি ক্ষমতা গ্রহণের পর এই প্রথম সরকার নির্বাচন করছেন লিবিয়ানরা। খবর:-ফেয়ার নিউজ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়