Sunday, March 20

কানাইঘাটে যুবকের পা কেটে নেয়ার ১দিন পর উদ্ধার করলো পুলিশ


নিজস্ব প্রতিবেদক  :সিলেটের কানাইঘাটে গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের জের ধরে কামাল উদ্দিন নামের( ৪৩) এক ব্যক্তিকে এলোপাতাড়ী ভাবে কোপিয়ে গুরুতর জখমের পর ডান পা বিচ্ছিন্ন করে নিয়া যাওয়ার পর পুলিশ একদিন পর কেটে নেওয়া পায়ের অংশ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। এ ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার(১৯ মার্চ)বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার দক্ষিণ বানীগ্রাম ইউনিয়নের ছত্রপুর গ্রামে। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার দায়ে ফাতেহা বেগম নামে এক মহিলাকে আটক করেছে। এছাড়া জিজ্ঞাসা বাদের জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্য আফতাব উদ্দিনও থানা পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। প্রতক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায় গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের জের ও গ্রামের আদিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের মৃত এবাদুর রহমান ও মৃত খলিলুর রহমান গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে মাঝে মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটত। অনুমান ২ বছর পূর্বে এ দ্বন্ধের জের ধরে এবাদুর রহমান নামের একজন কামাল উদ্দিন গোষ্ঠীর লোকদের হাতে মারামারিতে নিহত হন। এবাদুর রহমান নিহত হলে কামাল উদ্দিন সহ তার পক্ষের বহু লোকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলায় কামাল উদ্দিন প্রায় ৮ মাস জেল খেটে অনুমান বছর খানিক পূর্বে জামিনে বেরিয়ে আসেন। এর আগে এবাদুর রহমানের গোষ্ঠীর লোকজনের হাতে কামালউদ্দিন দু’দফা হামলার শিকার হয়ে মারাত্মক ভাবে আহত হয়েছিলেন বলে স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছেন। কামাল উদ্দিন জামিনে বেরিয়ে আসার পর থেকে তার উপর এবাদুর রহমানের গোষ্ঠীর লোকজন ক্ষুব্দ ছিল। গত শনিবার বিকেল অনুমান ৫টার দিকে কামাল উদ্দিন নিজ বাড়ী থেকে গাছবাড়ী বাজারে যাওয়ার পথে  পথিমধ্যে এবাদুর রহমানের গোষ্ঠীর ফয়জুল হকের পুত্র মামুন আহমদের বাড়ীর পাশে আসা মাত্রই তার উপর মামুন আহমদ সহ এবাদুর রহমানের গোষ্ঠীর ৮/১০জন দেশীয় ধারালো অস্ত্র, কুড়াল ইত্যাদি নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা কামালের ডান ও বাম পা, দুইহাতে কোপিয়ে ধারালো রক্তাক্ত জখম করে ডান পা হাটুর নীচ অংশের গোড়ালী কেটে নিয়ে যায়। কামাল উদ্দিনের আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে আশংকাজনক অবস্থায়   উদ্ধার   করে   সিলেট   এমএজি   ওসমানী   মেডিকেল   কলেজ   হাসপাতালে   প্রেরন   করে।    কামাল উদ্দিনের পা কেটে নেওয়ার সংবাদ পেয়ে এলাকায়দ্রæত ছুটে যান থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ তাজুল ইসলাম পিপিএম সহ একদল পুলিশ।রাতেই   ছত্রপুর   এলাকায়   অবস্থান   করে   কানাইঘাট   সার্কেলের   এএসপি   আব্দুল   করিমের   নেতৃত্বে এঘটনার সাথে জড়িতদের আটক ও কেটে নিয়ে যাওয়া পায়ের অংশ উদ্ধার করতে এলাকায় পুলিশ সাঁড়াশি অভিযানে নামে। শনিবার রাতে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার দায়ে মামুন আহমদ এরস্ত্রী ফাতেহা বেগমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্য আফতাব উদ্দিনকে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। বর্তমানে তিনি পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।অাজ   রবিবার  বিকেলে   ৫টার  দিকে   এএসপি  আব্দুল  করিম   ও  থানার   ওসি  তাজুল   ইসলামের উপস্থিতিতে কামাল উদ্দিনের উপর সস্ত্র হামলাকারী মামুন আহমদের বসত বাড়ীর পুকুরের পূর্বপাড়ে অবস্থিত একটি খড়ের ঘর থেকে পলিথিন প্যাচানো কামাল উদ্দিনের বিচ্ছিন্ন করা পায়ের অংশ উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। এ ঘটনায় গুরুতর আহত কামাল উদ্দিনের পরিবারের পক্ষ থেকেথানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে থানার ওসি তাজুল ইসলাম পিপিএম জানিয়েছেন। তিনি বলেন গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের জের ধরে এঘটনাটি ঘটেছে। কামাল উদ্দিনের কেটে নেওয়া ডানপায়ের গোড়ালীর অংশ পুলিশ উদ্ধার করেছে। যারা এ হামলার সাথে জড়িত তাদের সবাইকে চিহ্নিতকরা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত ফাতেহা নামে এক মহিলাকে আটক করা হয়েছে। অন্যান্যদেরগ্রেফতারে   বিভিন্ন   এলাকায়   অভিযান   চলছে।   ইউপি   সদস্য   আফতাব   উদ্দিনকে   ব্যাপকজিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলেন তিনি জানান।



স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছেন দীর্ঘদিনথেকে ছত্রপুর গ্রামে আদিপত্য বিস্তার নিয়ে কয়েকটি গোষ্টির মধ্যে খুন খারাবী, মারামারি,দাঙ্গাহাঙ্গামা, পাল্টাপাল্টি মামলা, হামলা লেগেই রয়েছে। এনিয়ে সব সময় গ্রামের লোকজনআতংকের   মধ্যে   বসবাস   করে   থাকেন।   সম্প্রতি   সময়   গোষ্টি   প্রতার   জের   নিয়ে   গ্রামেকয়েকটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ ২ বছর পূর্বে গোষ্টিগত দ্বন্ধের জের ও গ্রামেরআদিপত্য বিস্তার নিয়ে নিহত হন এবাদুর রহমান। তার হত্যার বদলা নিতে অপর গোষ্টির কামালউদ্দিনের   উপর   সস্ত্র  হামলা   চালিয়ে   শরীরের   বিভিন্ন   অংশে   গুরুতর  জখম   করে  এবাদুর   রহমানের


গোষ্টির   লোকজন   তার   ডান   পায়ের   নীচ   অংশ   এলোপাতাড়ী   ভাবে   রাস্তায়   ফেলে   কোপিয়েবিচ্ছিন্ন করে নিয়ে যায়। 



শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়