Friday, October 4

কমেছে পেঁয়াজের দাম

গেলো সপ্তাহের পেঁয়াজের ঝাঁজ এ সপ্তাহে কমলেও বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম। বাজার ভেদে সবজির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা। সেই সঙ্গে বেড়েছে শাকের দামও। তবে পেঁয়াজের বাজারে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন শীতের সবজি পুরোপুরি না আসা পর্যন্ত সবজির দাম এমনই থাকবে। 

শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে ১৫ থেকে ২০ টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম। সেই সঙ্গে প্রতিকেজি টমেটো ১১০ থেকে ১৩০ টাকা, গাজর ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ এক সপ্তাহ আগেও প্রতিকেজি টমেটো ৮০ থেকে ১০০ টাকা, গাজর ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
একইভাবে প্রতিকেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে পটল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঝিঙা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, করলা ও উস্তা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শসা (হাইব্রিড) ৪০ টাকা, শসা (দেশি) ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কচুর ছড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কচুর লতি ৫০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। 
অন্যদিকে, প্রতিকেজি শিমের দাম কমেছে ২০ টাকা। এদিন বাজারে প্রতিকেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৩০ টাকা। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা কেজি।
এছাড়া আকার ভেদে প্রতিপিস বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ফুলকপি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, লাউ ৫০ থেকে ৭০ টাকা, জালি কুমড়া ৩৫ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। সবজির মতোই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের শাক। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি আঁটি শাকে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। প্রতি আঁটি (মোড়া) লাল শাক ১০ থেকে ১৫ টাকা, মুলা শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, পালং শাক ২০ থেকে ২৫ টাকা, কুমড়া শাক ২৫ থেকে ৪০ টাকা, লাউ শাক ৩০ থেকে ৫০ টাকা এবং পুঁই শাক ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
তবে দাম নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে। বিক্রেতারা বলছেন, বন্যার কারণে বাজারে সবজির সংকট রয়েছে। এ কারণে সবজির বাজার চড়া। আর ক্রেতারা বলছেন বন্যার প্রভাব বাজারে না পড়লেও অতি লাভের আশায় বিক্রেতারা বাড়তি দাম হাকাচ্ছে।
রাজধানীর সবজি বিক্রেতা লোকমান বলেন, এখন দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা দেখা দেয়ায় সেখান থেকে সবজি আসছে না। এ কারণে বাজারে কিছুটা সবজি সরবরাহ কমায় দাম বেড়েছে।
অপরদিকে এক ক্রেতা বলেন, বাজারে কোনো সবজির ঘাটতি নেই, শীতকালীন আগাম সবজিতে বাজার ভরা। দেশের কোথাও কোথাও বন্যা হলেও এর কোনো প্রভাব নেই বাজারে। এরপরও বেশি লাভের আশায় বিক্রেতারা দাম বেশি নিচ্ছেন।
অন্যদিকে বাজারে ১৫ থেকে ২০ টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম। গত দুইদিন আগেও যে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। তা আজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা। যা গত দুইদিন আগেও বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা।
শেওড়াপাড়া বাজারে আসা ক্রেতা নূরে আলম বলেন, পেঁয়াজের দাম ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বাড়িয়ে দিয়েছে। পেঁয়াজ গুদামে আছে কি নেই সেটা না দেখে শুধু ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে এটা শুনেই পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে তারা। পেঁয়াজের এত দাম বাড়ার যুক্তিসঙ্গত কোন কারণই নেই।
তিনি উল্লেখ করেন, বাজার মনিটরিং কর্তৃপক্ষের যথেষ্ট দুর্বলতা রয়েছে। এরফলেই ব্যবসায়ীরা নিজেদের ইচ্ছামত জনগণকে চাপে ফেলে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। আর জনগণ এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এ জন্য সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিচার হওয়া উচিত।
ব্যবসায়ী সালাম মিয়া বলেন, বাজারে পেঁয়াজের দাম কমেছে। যেহেতু মিয়ানমার ও অন্যান্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আসছে সেহেতু খুব শিগগিরই দাম আরো কমে যাবে।
তবে গত সপ্তাহের চেয়ে কিছুটা বেড়ে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। পাকিস্তানি কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা কেজি। একই দামে বিক্রি হচ্ছে লাল লেয়ার মুরগি। আর ডিমের ডজন গত সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা। গরুর মাংস বাজার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৫৭০ টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি। 
মাছের বাজারে গিয়ে দেখা যায় প্রতি কেজি ইলিশ মাছ সাইজ অনুযায়ী ৬০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি তেলাপিয়া ১৪০-১৫০ টাকা, পাঙ্গাশ ১৫০-১৬০ টাকা, চাষের রুই ৩৫০-৪০০ টাকা, পাবদা ৬০০-৭০০ টাকা, টেংরা ৬০০-৭০০ টাকা, শিং ৪০০-৫৫০ টাকা, বোয়াল ৫০০-৭০০ টাকা, চিংড়ি ৬০০-৮০০ টাকা এবং চিতল মাছ ৫০০-৮০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
 সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়