প্রিয়ম হাসান::
মুনাফিকদের চরিত্রে কিছু মৌলিক গুণ আছে, যেগুলো একটি সমাজ, দেশ ও জাতিকে ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট। এ সব গুণগুলো থেকে বেঁচে থাকা আমাদের সকলের জন্য একান্ত অপরিহার্য।
মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
তোমরা ওয়াদা পূর্ণ কর, নিশ্চই ওয়াদা সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করা হবে। (সূরা: বনী
ইসরাঈল, আয়াত: ৩৪)।
এ প্রসঙ্গে ইমাম যুজ্জায (রহ) বলেন, আল্লাহ
যা কিছু করতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং যেসব কাজ করতে নিষেধ করেছেন, তার সবই
ওয়াদার অন্তর্ভুক্ত কেননা এসব পালনে মুসলমানেরা আল্লাহর সঙ্গে ওয়দাবদ্ধ।
আল্লাহ আরো বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা চুক্তি পালন কর।’ (সূরা: মায়েদা,
আয়াত: ১)।
ইমাম ওয়াহেদী (রহ.) বলেন, হজরত ইবনে আব্বাস
(রা.) বলেছেন, কোরআনে যা কিছু হালাল ও হারাম করা হয়েছে এবং যেসব বিষয় সীমিত
ও নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে সেগুলো আমল করাই ওয়াদার পূর্ণতা।’
ইমাম যাহহাক (রহ.) বলেন, এ উম্মতের জন্য
আল্লাহর নির্দেশিত হালাল ও হারাম, ফরজ নামাজসমূহ এবং অন্যান্য বৈধ ও অবৈধ
সংক্রান্ত বিধান পুরোপুরি মেনে চলার নামই হলো ওয়াদা।
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা
করেন, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যার মধ্যে চারটি দোষ থাকবে সে মুনাফিক। আর
যার মধ্যে এর কোনো একটি দোষ থাকবে, সেও মুনাফিক যতক্ষণ সে তা বর্জন না করে।
(১) যখন কথা বলে তখন মিথ্যা বলে। (২) তার কাছে আমানত রাখলে খিয়ানত করে। (৩) কোনো ওয়াদা করলে ভঙ্গ করে। (৪) কারো সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়লে সীমালংঘন করে। (বুখারী)।
হজরত ইবনে ওমর (রা) বর্ণনা করেন: রাসূল
(সা.) বলেছেন, কিয়ামতের দিন প্রত্যেক খিয়ানতকারীর জন্য একটি করে পতাকা
থাকবে। বলা হবে, এ হচ্ছে অমুকের ছেলে অমুকের বিশ্বাসঘাতকতা। (মুসলিম)।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন: মহান আল্লাহ পাক বলেন, ‘তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কিয়ামতের দিন আমি বাদী হব: (১) যে ব্যক্তি ওয়াদা করেও ভঙ্গ করে, (২) যে ব্যক্তি কোনো স্বাধীন মানুষকে বিক্রয় করে তার মূল্য ভোগ করে, (৩) যে ব্যক্তি কোনো কর্মচারী নিয়োগ করে তার কাছ থেকে পূর্ণ কাজ আদায় করে নেয়, কিন্তু তার পারিশ্রমিক দেয় না। (বুখারী, ইবনে মাজাহ)।
হজরত আব্দুল্লাহ ওমর (রা. ) বর্ণনা করেন,
রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজেকে আনুগত্য থেকে মুক্ত রেখেছে,
কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে তার কোনোই প্রতিদান থাকবে না। আর যে ব্যক্তি
কোনো ওয়াদা ভঙ্গ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে, সে যেন জাহেলিয়াতের মৃত্যুবরণ
করলো। (মুসলিম)।
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা) বর্ণনা করেন:
রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জাহান্নাম থেকে মুক্তি এবং জান্নাতের আশা
করে, সে যেন আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস রেখে মৃত্যুবরণ করে এবং নিজের জন্য
যা অপরের জন্যও তা পছন্দ করে। আর যে ব্যক্তি কোনো আমীরের আনুগত্যের ওয়াদা
করে এবং আন্তরিকতার সঙ্গে তার আনুগত্য করে। আর কেউ যদি তার বিরোধিতা করে
তাহলে তাকে প্রতিরোধ করে। (মুসলিম)।
খবর বিভাগঃ
ইসলাম
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়