Tuesday, August 28

কানাইঘাট পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলে যা বললেন কাউন্সিলর শরীফ

নিজস্ব প্রতিবেদক: কানাইঘাট পৌরসভার মেয়র নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ লঙ্গন ও পৌরসভার উন্নয়ন মূলক কাজের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ, অনিয়ম দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এনে মঙ্গলবার(২৮আগস্ট) বিকেল ২টায় কানাইঘাট প্রেসক্লাব কার্য্যালয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন  পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাজী শরীফুল হক। সাংবাদিকদের সাথে লিখিত বক্তব্যকালে কাউন্সিলর শরীফ বলেন, বিভিন্ন সময়ে পৌরসভার অধিকাংশ কাউন্সিলর অদ্যাবধি পর্যন্ত মেয়র নিজাম উদ্দিন ও পৌর প্রকৌশলী ভারপ্রাপ্ত সচিব মনির উদ্দিনের অনিয়ম দূনীর্তির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এনে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ১৬টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু এসব অভিযোগের দৃশ্যমান কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় পৌর পরিষদের রাজস্ব ও উন্নয়ন বরাদ্ধের টাকা দূর্নীতির মাধ্যমে অদ্যাবধি পর্যন্ত আত্মসাৎ ও নানা ধরনের বেআইনী কার্য্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন মেয়র নিজাম উদ্দিন ও প্রকৌশলী মনির উদ্দিন। এ দুজন মিলে পৌরসভার যাবতীয় কার্য্যক্রম সরকারী বিধিবিধান লঙ্গন করে একক ভাবে পরিচালনা করে আসছেন।
কাউন্সিলর শরীফুল হক সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, মেয়রের দূর্নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সহ সিলেটের উর্ধ্বতন সরকারী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত ভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলররা অভিযোগ দিয়েছেন। মেয়রের স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন থেকে শুরু করে কানাইঘাট নাগরিক ফোরামের উদ্যোগে সভা সমাবেশ হয়েছিল। সর্বশেষ স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিবের বরাবরে মেয়র ও পৌর সচিব প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলররা অভিযোগ দাখিল করলে এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মেয়র নিজাম উদ্দিন তিনি সহ কয়েকজন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ দায়ের করেন।
কাউন্সিলর শরীফুল হক বলেন, মেয়র ও পৌর প্রকৌশলীর দূর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার থাকায় তার বিরুদ্ধে বানোয়াট, মিথ্যা অভিযোগ এনে মেয়র নিজাম উদ্দিন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেন। তারপর তাকে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সাময়িক কাউন্সিলর পদ থেকে বহিস্কার করা হয়। মন্ত্রণালয়ের এ বহিস্কার আদেশের চিঠি ২২/০৩/১৮ইং তারিখে ডাকযোগে পেয়ে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে তিনি গত ০২/০৪/১৮ইং তারিখে মহামান্য হাইকোর্টের একটি ব্যাঞ্চে বহিস্কার আদেশের বিরুদ্ধে একটি রিট পিটিশন মামলা দায়ের করেন। মহামান্য হাইকোর্ট তার বহিস্কার আদেশ স্থগিত করে ৬ মাসের জন্য স্বপদে বহাল করেন। আদালতের স্থগিতাদেশের কপি যাহার মেমো নং-২৯৮৬১ তারিখ-২৫/০৪/২০১৮ইং জিইপি নং-৬৭৮ জেলা জজ সিলেট বরাবরে প্রেরণ করা হয়। জেলা জজ আদালত থেকে তার বহিস্কার আদেশের স্থগিতের কপি মেয়র নিজাম উদ্দিনের বরাবরে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু আদালতের নির্দেশের পরও মেয়র নিজাম উদ্দিন তাকে কোন ধরনের ওয়ার্ডের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি উন্নয়ন মূলক কোন প্রকার কার্য্যক্রম পরিচালনা করতে দিচ্ছেন না। এমনকি দেড় বছর থেকে তার ভাতা পরিশোধ করছেন না মেয়র। মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে ওয়ার্ডের কার্য্যক্রম পরিচালনায় বাঁধা প্রদান ও তাকে পৌর পরিষদে ঢুকতে না দেওয়া সহ সম্প্রতি ঈদ উপলক্ষে ভিজিএফ এর চাল বিতরণে তাকে সম্পৃক্ত না করে মেয়র সরকারী চাল বিতরণে তার ছবি যুক্ত করে বেআইনী ভাবে বিতরণ করায় তিনি সম্প্রতি স্থানীয় সরকার (উপ-সচিব) সিলেট বরাবরে অভিযোগ দাখিল করেছেন বলে কাউন্সিলর শরীফুল হক জানান। 
তিনি বলেন, মেয়র নিজাম উদ্দিনের সীমাহীন দূর্নীতি ও অনিয়ম স্বজন প্রীতি স্বেচ্ছাচারিতা ও পৌরসভার উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতের প্রতিবাদ করায় বর্তমানে মেয়র তাকে বিভিন্ন মামলা মোকদ্দমায় আসামী করা সহ প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ায় বর্তমানে তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করছেন। সরকারী উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের টাকা লুটপাটের দায়ে মেয়র ও ভারপ্রাপ্ত সচিব পৌর প্রকশলী মনির উদ্দিন এর বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন তিনি। 
তবে মেয়র নিজাম উদ্দিন বার বার তার বিরুদ্ধে কাউন্সিলর শরীফুল হক সহ পূর্বে দায়েরকৃত কয়েকজন কাউন্সিলরের অভিযোগগুলির কোন ভিত্তি নেই, পৌরসভার যাবতীয় কার্য্যক্রম নিয়মিতভাবে পরিচালিত হচ্ছে এবং পৌর পরিষদ সকল কাউন্সিলরদের নিয়ে চলছে বলে জানিয়ে আসছেন। 

 কানাইঘাট নিউজ ডটকম/২৮আগস্ট ২০১৮ইং

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়