Wednesday, August 9

হতাশা থেকে বেরিয়ে আসার উপায়

হতাশা থেকে বেরিয়ে আসার উপায়

কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: প্রত্যেকটি মানুষের জীবনেই কম-বেশি হতাশা আছে। কারণ আশা-নিরাশায়ই তো জীবন। কী আছে, কী নেই, সেই ভাবনায় মন পড়ে যায় বিপাকে। নিরাশার পাল্লাটা ভারী হতে হতে অনেকে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তাতেই কি জীবনের গতি থামিয়ে দিতে হবে? সব সময় জীবনের পাওয়া না-পাওয়ার হিসাব না কষে আনন্দের মুহূর্তগুলো ভাবার চেষ্টা করুন।

ব্যর্থতার সাগরে ডুবে না গিয়ে আশাবাদী হতে হবে। নিজে নিজে চেষ্টা করে বা অন্যের সাহায্য নিয়ে এই হতাশা থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করতে হবে। তা না হলে আপনি বিষণ্নতায় ভুগবেন, ডুবে যাবেন হতাশার সাগরে।

কেন এত হতাশা?
সম্পর্কের কারণে মানুষ হতাশ হয়ে যায়। মা-বাবার সঙ্গে সন্তানের সম্পর্ক, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া, বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্ক, এমনকি সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো না হলে একটা পর্যায়ে গিয়ে হতাশায় ডুবে যান অনেকে। শৈশবে শারীরিকভাবে অপব্যবহৃত হলে অথবা মা-বাবার কাছে নিজেকে গুরুত্বহীন বলে মনে হলে পরবর্তী জীবনে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। অনেক সময় নিজের ছোট ভাইবোনকে মা-বাবা বেশি আদর করছেন, এমন ভাবনা থেকেও হতাশা তৈরি হয়। আবার বিভিন্ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ভীতি এবং মানসিক চাপের কারণে হতাশা আসতে পারে জীবনে। জীবনের কাঙ্ক্ষিত চাওয়া পূরণ না হলে কমবেশি হতাশ হয়ে যান।

আবার ধরুন, কাছের কেউ মারা গেলে মন খারাপ হবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে সে জন্য দুই মাসের বেশি সময় অতিরিক্ত মন খারাপ থাকলে সেটিকে আমরা হতাশা হিসেবে চিহ্নিত করতে পারি। জীবনের বিভিন্ন ধাপে আসতে পারে হতাশা। বয়ঃসন্ধিকালের পরিবর্তনগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নিতে কারও কারও সমস্যা হতে পারে। বিভিন্ন সময় সামাজিক কারণে মেয়েদের যেসব সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়, সেগুলোও হতাশার কারণ। সংসার-সন্তানের দায়িত্ব নিতে গিয়ে পড়াশোনা বা কর্মক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ার ফলেও হতাশ হন অনেকে।

কর্মক্ষেত্রে ছাঁটাইয়ের চিন্তা বা পদোন্নতি না হওয়ার কারণেও হতে পারে। অনেকে আবার মাঝবয়সে বিদেশে গিয়ে এমন কাজ করতে বাধ্য হন, যা তার কাছে সম্মানজনক বলে মনে হয় না। আর বৃদ্ধ বয়সে সন্তানদের সব দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার পর নিজেকে অপ্রোয়জনীয় মনে হতে পারে, সন্তানেরা দূরে থাকলে নিজেকে একা মনে হতে পারে। কর্মজীবীরা অবসরগ্রহণের পর ব্যক্তিসত্তাহীনতায় ভুগতে পারেন। এমন নানা কারণে হতাশ হতে পারেন।

হতাশার লক্ষণ
হতাশার লক্ষণ হলো মন ভালো না থাকা, কাজে আগ্রহ না থাকা, ক্ষুধা ও ঘুম কমে যাওয়া, ওজনের পরিবর্তন হওয়া। খুব বেশি হতাশ হয়ে পড়লে আত্মহত্যার প্রবণতাও দেখা যায়।

আশায় বাঁচুন
জীবনের পরিবর্তনগুলোকে মেনে নিতে চেষ্টা করুন। শিশুদের হতাশা কাটাতে মা-বাবার বড় ভূমিকা রয়েছে। যেকোনো বিষয়ে তাদের অতিরিক্ত চাপ দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। বয়ঃসন্ধিকালে সংকোচ না করে তাকে সঠিক তথ্যগুলো দিন। একটি সন্তান অন্যায় করলে তাকে অন্যদের সামনে জেরা করবেন না। পরীক্ষার আগে অল্প সময়ে সব পড়ালেখার চাপ না নিয়ে অল্প অল্প করে নিয়মিত পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

কর্মক্ষেত্রে সবার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখুন। নিজের দক্ষতা নিজের কাজ দিয়েই বুঝিয়ে দিন। যদি মনে হয়, কাজ করতে গিয়ে আপনি বেশি হতাশ হয়ে পড়ছেন, তাহলে ছুটি নিয়ে কোথাও থেকে ঘুরে আসতে পারেন। আর চাকরি ছাড়তে চাইলে তো তা যেকোনো মুহূর্তেই ছাড়া যাবে।

মা হওয়ার সময় অনেক নারী হতাশ হয়ে যান। এ সময় তাঁকে সব ধরনের সহযোগিতা ও সমর্থন দিতে হবে। পরিবারের অন্যদের পাশাপাশি তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসতে হবে তাঁর স্বামীকেও।

যা করবেন
১. কী কারণে আপনি হতাশ, তা খুঁজে বের করতে হবে। সমস্যাটি সমাধান করতে চেষ্টা করুন।
২. সামাজিক সম্পর্কগুলো জোরদার হলে হতাশা কাটিয়ে ওঠা সহজ হয়।
৩. পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান। বই পড়ুন।
৪. আর কাছের মানুষ হতাশায় ভুগলে তার মন ভালো রাখতে চেষ্টা করুন। যেকোনো পরিস্থিতিতে তাকে সমর্থন করুন।
৫. নিজের সুন্দর ও ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে ভাবলে দেখবেন হতাশ লাগবে না।

যা করবেন না
#যেকোনো ঘটনার খারাপ দিক খুঁজবেন না।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়