Thursday, July 27

পাকিস্তানে সালিশে ভাইয়ের অপরাধে বোনকে ধর্ষণ

পাকিস্তানে সালিশে ভাইয়ের অপরাধে বোনকে ধর্ষণ
কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: পাকিস্তানের একটি গ্রাম্য সালিশ বৈঠকে ভাইয়ের অপরাধে তার কিশোরী বোনকে ধর্ষণ করার নির্দেশ দেয়ার পর পুলিশ অন্তত বিশ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। মুলতানের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

পুলিশ বলছে, সালিশ বৈঠকের ওই সিদ্ধান্তে দুইটি মেয়ের পরিবারও জড়িত ছিল।

এ ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি রুল জারি করেছে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। সেখানে পাঞ্জাব পুলিশ প্রধানকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

ধর্ষণে অভিযুক্ত প্রধান দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

আল্লাহ বক্স নামের একজন পুলিশ কর্মকর্তা এএফপিকে জানিয়েছেন, এ মাসের শুরুর দিকে ওই গ্রামের জিরগায় (গ্রাম্য সালিশ) একজন ব্যক্তি অভিযোগ করেন যে, যে তার ১২ বছরের বোনকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এরপর সালিশ বৈঠকে শাস্তি হিসাবে ওই ধর্ষণকারীর ১৬ বছরের চাচাতো বোনকে ধর্ষণ করার আদেশ দেয়া হয়।

পাকিস্তানের ডন পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেয়েটিকে জোর করে সালিশি বৈঠকে নিয়ে আসা হয়। এরপর বাবা-মার উপস্থিতিতেই সবার সামনে তাকে ধর্ষণ করা হয়।

পরে মেয়ে দুইটির মা স্থানীয় থানায় অভিযোগ করেন। শারীরিক পরীক্ষায় দুই মেয়েই ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

পুলিশ বলছে, ২৫জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় জিরগা বা গ্রাম্য সালিশ বৈঠকের ধর্ষণের নির্দেশ দেয়া হয়। তবে বিবিসির সূত্রগুলো বলছে যে, জিরগায় আসলে দুই পরিবারের সদস্যরা মিলেই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

পাকিস্তানের গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, ১২ বছরের মেয়েটির ধর্ষণকারীকে হাতেনাতে ধরে ফেলে মেয়েটির পরিবারের সদস্যরা। পরে তাকে তার বাবার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান দুই পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে কিশোরী মেয়েটিকে ধর্ষণ করে প্রথমে ধর্ষিত মেয়েটির ভাই।

পরে উভয় পরিবার থেকেই পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়।

পাকিস্তানের প্রত্যন্ত গ্রামের নানা সমস্যা সমাধানে বয়স্কদের নিয়ে গঠিত জিরগা ভূমিকা রেখে থাকে। যদিও আইনত এসব জিরগা অবৈধ এবং এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টের একাধিক রুলিং রয়েছে।

২০০২ সালে এরকম একটি জিরগা ২৮ বছর বয়সী মুখতার মাইকে গণধর্ষণের আদেশ দেয়, যার ১২ বছর বয়সী ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে, একজন বয়স্কা নারীর সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে।

ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে তিনি আদালতে মামলা করেন, যা পাকিস্তানে বিরল একটি ঘটনা।

গ্রামে মেয়েদের জন্য তিনি স্কুল খুলেছেন এবং একটি আশ্রয় কেন্দ্র চালু করেছেন।

মিজ মাই এখন বিশ্বে একজন সোচ্চার নারী অধিকার কর্মী হিসাবে পরিচিত মুখ।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়