Thursday, March 9

যেসব লক্ষণে বুঝবেন শরীরে ফাইবারের অভাব

যেসব লক্ষণে বুঝবেন শরীরে ফাইবারের অভাব

কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: ফাইবার খাদ্যের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা সুস্থতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অবশ্যই ফাইবার জাতিয় খাবার রাখা উচিত। ডায়েটের প্রতি ১,০০০ ক্যালোরির জন্য ১৪ গ্রাম ফাইবার গ্রহণ করার নির্দেশনা দেয়া হয়। যদি এর চেয়ে কম ফাইবার গ্রহণ করা হয় তাহলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।

শরীরের কিছু লক্ষণ দেখে বুঝতে পারবেন পর্যাপ্ত ফাইবার গ্রহণ করা হচ্ছে না-

১। ওজন বৃদ্ধি
উচ্চমাত্রার ফাইবার যুক্ত সবজি খাওয়ার সময় দীর্ঘক্ষণ চিবাতে হয় এবং পেট ভরা থাকে দীর্ঘসময় ধরে, তাই আপনার খাবার গ্রহণের পরিমাণ কমে। ভাজা খাবারের পরিবর্তে ভাপে সিদ্ধ খাবার – ব্রোকলি বা ডাল গ্রহণ করুন। ১ কাপ ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ৬০ সেকেন্ডের মধ্যেই খেয়ে ফেলা যায়। কিন্তু ১ কাপ রান্না করা ব্রোকলি চিবিয়ে খেতে কয়েক মিনিট লাগে এবং এতে ৫.১ গ্রাম ফাইবার থাকে।

২। সব সময় ক্ষুধা অনুভব করেন
কম ফাইবার যুক্ত খাবার যেমন- প্রক্রিয়াজাত স্ন্যাক্স খাওয়ার পর আপনার অতৃপ্তির অনুভূতি সৃষ্টি হয়। কোচরান বলেন, দ্রবণীয় ফাইবার পরিপাক নালী থেকে পানি গ্রহণ করে এবং পেট ভরার অনুভূতি সৃষ্টি করে। অর্থাৎ উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাবারের তুলনায় নিম্ন ফাইবারের খাবার খুব তাড়াতাড়ি ক্ষুধা বৃদ্ধি করে। প্রক্রিয়াজাত ও জাংকফুড খাওয়ার পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর স্ন্যাক্স গ্রহণ করুন।

৩। কোষ্ঠকাঠিন্য
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিলে বুঝবেন, আপনার শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ফাইবার গ্রহণ করা হচ্ছে না। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অদ্রবণীয় ফাইবারের অভাবের কারণেই হতে পারে এই সমস্যা। ডালাস এর রেজিস্টার্ড ডায়েটেশিয়ান নাভা কোচরান বলেন, ‘অদ্রবণীয় ফাইবার হজম হয় না, কিন্তু এটি পরিপাক নালী দিয়ে খুব সহজেই বের হয়ে যায় বলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমতে সাহায্য করে’। আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অনেক বেশি অদ্রবণীয় ফাইবার যোগ করুন। এজন্য – আস্ত গমের পাউরুটি, লাল চাল, বীজ এবং ফল খান।

৪। কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি
ফাইবার শুধু পেট ভরা রাখতেই সাহায্য করে না বরং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতেও সাহায্য করে। কোচরান বলেন, ক্ষুদ্রান্ত্রে দ্রবণীয় ফাইবার কোলেস্টেরলের সাথে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে রক্তস্রোত থেকে কোলেস্টেরলকে বের করে নেয়। অবশ্যই অনেক বেশি ফাইবার গ্রহণ করলে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে।

৫। রক্তের চিনির মাত্রা কমাতে
রক্তের চিনির মাত্রা কমাতেও সুপার হিরোর মত কাজ করে ফাইবার। কোচরান বলেন, ক্ষুদ্রান্ত্র থেকে রক্তস্রোতে চিনির শোষণকে ধীর গতির করে অনেকবেশি ফাইবার গ্রহণ করলে, এর ফলে রক্তে চিনির মাত্রা আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পায়।

৬। পেটে ব্যথা
বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে বৃহদান্ত্রের প্রাচীরে ব্যথা এবং যন্ত্রণা হতে পারে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র থলির মত গঠন তৈরি হয় বলে এবং এগুলো উদীপ্ত হওয়ার ফলে এমন হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে এই সমস্যাটি ডাইভারটিকোলাইটিস নামে পরিচিত এবং এটি লো-ফাইবার ডায়েটের সাথে সম্পর্কিত। ডাইভারটিকোলাইটিস এর সমস্যা তীব্র হলে বমি, জ্বর, ডায়রিয়া এবং পেট ফাঁপার সমস্যা হতে পারে। যদিও কিছু মানুষের ক্ষেত্রে কোন লক্ষণই প্রকাশ পায় না।

৭। সহজেই বিচলিত হন
আপনি হয়তো ভাবছেন যে কম কার্বোহাইড্রেট ও বেশি প্রোটিন গ্রহণ করার ফলে আপনার ওজন কমবে এবং আপনি ফিট থাকবেন। কিন্তু আপনার শারীরিক কাজ ঠিকভাবে সম্পন্ন হওয়ার জন্য কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করা প্রয়োজন। ওয়েব এমডি এর মতে, নিম্ন মাত্রার কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার অর্থাৎ নিম্ন ফাইবারের খাবার খাওয়ার ফলে আপনি ক্লান্ত ও বিচলিত অনুভব করতে পারেন। তাই ফাইবার গ্রহণ কমানো ছাড়াই ওজন কমানোর চেষ্টা করুন।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়