Thursday, February 23

স্টার্কের বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার লড়াই

স্টার্কের বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার লড়াই
কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: চার ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে ব্যাট হাতে ভালোই ধুঁকেছে অস্ট্রেলিয়া। মাহারাস্ত্র টেস্টের প্রথম দিনে অলআউট না হলেও ৯ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে সফরকারীরা। প্রথম সেশনটা মন্থর ব্যাটিংয়ে নিজেদের কব্জায় রাখেন অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা।

কিন্তু দ্বিতীয় ও শেষ সেশনে হঠাৎই খেই হারিয়ে ফেলে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। এরপর লোয়ার অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা লড়াই চালানোর চেষ্টা করলেও সফল হয়নি। তবে একজন ঠিকই সফল হয়েছেন।

এই সফলতা বিধ্বংসী কোনো কারণে নয়, দলের বিপদের সময় চার-ছক্কা ও বুদ্ধিদীপ্ত রানিং বিটুইন দ্য উইকেটে মহা সংকট থেকে দলকে উদ্ধার করার চেষ্টা। সেই কাজটিই করলেন পেসার মিচেল স্টার্ক।

মিচেল স্টার্কের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে অলআউট না হলেও প্রথম দিনে মাত্র ২৫৬ রান করেছে সফরকারীরা। এই রানও হওয়ার কথা না। ২০৫ রানেই যেখানে নয় নম্বর ব্যাটসম্যান ফিরেছিলেন, সেখানে ২৫৬ রানে কিন্তু খুশি হতেই পারে অস্ট্রেলিয়া। এগারো নম্বর ব্যাটসম্যান জশ হ্যাজলউডকে সঙ্গে নিয়ে দারুণ লড়াই করলেন স্টার্ক। ৫১ রানের জুটি গড়লেন। জুটিতে মাত্র ১ রান জশ হ্যাজলউডের! বাকিটা ৫৮ বলে ৫৭ রানে অপরাজিত আছেন স্টার্ক, তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ৫টি চার ও ৩ ছক্কায়।

ওয়ার্নের মতে, আড়াইশ রানই এখানে ভালো স্কোর। যদিও সেই রানের কাছেও যাওয়ার কথা ছিলনা অজিদের। কিন্তু সেই অসম্ভবটাকে সত্যি করে দিলেন স্টার্ক।

বৃহস্পতিবার শেষ বিকেলে সব আলো কেড়ে নিয়েছেন স্টার্ক। নইলে দিনের নায়ক উমেশ যাদব। স্পিন পিচেও দুর্দান্ত বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার চার ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়েছেন এই পেসার।  পুনের অভিষেক টেস্টে টস জিতেছেন সফরকারী অধিনায়ক। ব্যাটিং নিতে দুবার ভাবার কারণ নেই। স্পিন পরীক্ষা সামলে অস্ট্রেলিয়াকে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন ডেভিড ওয়ার্নার ও রেনশ।

ওয়ার্নার নিজের সহজাত আক্রমণাত্মক খেলা দমিয়ে টিকে থাকলেন অনেকক্ষণ। ভারতের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ানো জুটি শেষ পর্যন্ত ভেঙেছেন উমেশ। স্পিন পরীক্ষায় উতরে ওয়ার্নার আউট হলেন পেসে। স্টাম্পে টেনে আনলেন বাইরের বল। ভাঙল ৮২ রানের উদ্বোধনী জুটি।

পরের বলটি হওয়ার আগে ওয়ার্নারের প্রায় পিছু পিছু ড্রেসিং রুমে ছুটলেন রেনশও। হতবাক সবাই। খানিক পর জানা গেল, পাকস্থলীর পীড়ায় বাইরে গেছেন বাঁহাতি ওপেনার।

স্টিভেন স্মিথ ও শন মার্শ সতর্ক ব্যাটিংয়ে চেষ্টা করেছেন রানের গতি বাড়াতে। তবে দীর্ঘস্থায়ী হয়নি সেই প্রচেষ্টা। জুটি ভাঙার চেষ্টায় লাইন বদলে লেগ-মিডলে বল করছিলেন জয়ন্ত যাদব। অধিনায়ক বিরাট কোহলিও মাঠ সাজালেন সেভাবেই ফাঁদ পেতে। মার্শও সুইপ খেলে পা দিলেন ফাঁদে।

এরপরও খুব বাজে ছিল না অস্ট্রেলিয়ান ইনিংসের চেহারা। শুরুটা ভালো করেন পিটার হ্যান্ডসকমও। চা বিরতির ঠিক আগেই বিপত্তি। পরপর দুই ওভারে নেই দুই উইকেট। জাদেজার দারুণ এক আর্মারে ফিরলেন হ্যান্ডসকম। স্মিথ টিকে ছিলেন সংযত ব্যাটিংয়ে। হঠাৎই অশ্বিনকে তুলে মারতে গিয়ে ধরা পড়লেন ৯৫ বলে ২৭ রান করে।

সুস্থ হয়ে আবার মাঠে ফিরেছেন রেনশ। স্পিনে দারুণ টেকনিকের প্রমাণ রেখে তুলে নিয়েছেন অর্ধশতক। ভারতের মাটিতে তার চেয়ে কম বয়সে পঞ্চাশ ছুঁতে পারেনি অস্ট্রেলিয়ার আর কেউ। ২০ বছর ৩৩২ দিন বয়স রেনশর। ১৯৭৯ সালে কানপুর টেস্টে ২২ বছর ১৫৪ দিন বয়সে ৫৯ রান করেছিলেন রিক ডার্লিং।

শেষ পর্যন্ত অশ্বিনের দারুণ এক ডেলিভারিতে ৬৮ রানে শেষ হয়েছে রেনশর লড়াই। জাদেজার আরেকটি সোজা বল ফিরিয়েছে মিচেল মার্শকে। ম্যাথু ওয়েডকে ফেরানোর পর টানা দুই বলে স্টিভ ও’কিফ ও নাথান লায়নকে তুলে নিয়েছেন উমেশ।

ইনিংসের শেষ তখন মনে হচ্ছিলো স্রেফ সময়ের ব্যাপার। স্টার্কও হয়ত সেটি ভেবেই ব্যাট চালালেন দ্রুত কিছু রান তুলতে। চার-ছক্কা এলো, টিকেও গেলেন। আরেক পাশে জস হেইজেলউড পড়ে রইলেন উইকেটে। অস্ট্রেলিয়ার দুই পেসার ভারতকে ভোগালেন ব্যাট হাতে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়