Sunday, October 2

আসুন আমরা সবাই যুদ্ধকে "না" বলি


মিলন কান্তি দাস: ভারত ও পাকিস্থান। আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী দুটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। বর্তমানে দুইটি দেশের শক্তির জানান দিতে অনেকটা যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব বিরাজ করছে। দুটি দেশ প্রমাণ করতে মরিয়া যে কার চেয়ে কে বড়। বিষয়টা অনেকটা সেরকমই। কিন্তু সব কথার শেষ কথা হলো-যুদ্ধ শব্দটি কোনভাবেই কারো জন্য কল্যাণকামী কোন শব্দ হতে পারেনা। আমরা এ পৃথিবীর অনেক যুদ্ধের ইতিহাস জেনেছি,পড়েছি এবং দেখেছি। সবমিলিয়ে যুদ্ধ নামক শব্দটি থেকে সুখকর কিছু পাওয়া যায়না। পাওয়া যায় শুধু নিরীহ সাধারণ মানুষের শরীরের রক্ত ঝরার ইতিহাস। আজ যদি সত্যিই দেশ দুটির মধ্যে যুদ্ধ লেগেই যায়,তাহলে শুধু ভারত ও পাকিস্থানই কেবল ক্ষতিগ্রস্থ হবেনা। ক্ষতিগ্রস্থ হবে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়া। যেহেতু দুটি দেশই পারমাণবিক শক্তিধর,সুতরাং যুদ্ধ লাগলে এ অঞ্চলের কোটি কোটি মানুষের মৃত্যুর মিছিল নিশ্চিত। ১৯৭১ সালের হত্যাযজ্ঞ আমরা দেখিনি। আমাদের পূর্বপুরুষ যারা দেখেছে,তারা আজও আতঙ্কে কাঁপে। সেই যুদ্ধ দেখার ভয়াবহতার অভিজ্ঞতা থেকে তারা কখনোই যুদ্ধ কামনা করেন না। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে,এই যুদ্ধ নামক অমানবিকতাকে সমর্থন দিয়ে কেউ কেউ ঢাকঢোল বাজিয়ে প্রচারণা চালায়। কেউ ভারত,কেউ পাকিস্থান বলে ঢোল বাজায়। যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও হতাশাজনক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে এরকম অনেক বাদ্যবাধক ঢোলী দেখা যায়। অন্য দুটি দেশের যুদ্ধ নামক হিংস্রতাকে সমর্থন ও বাহবা দিয়ে ফেইসবুকে এসব বাদ্যবাধকরা স্ট্যাটাস লিখে,কমেন্ট করে ইত্যাদি। যা দেখি এবং রীতিমতো আশ্চর্য্য হই। আর মনে মনে ভাবি,এরাও মানুষ,আমরাও মানুষ। অথচ এরা মানুষ হয়ে যুদ্ধ চায়,আর আমরা মানুষ হয়ে শান্তি চাই। মানুষ হিসেবে এদের সাথে আমাদের পার্থক্য শুধু এই একটাই যথেষ্ট। অথচ এরা হয়তো জানেনা যে পারমাণবিক অস্ত্রের ভয়াবহতা। যদি যুদ্ধ লেগেই যায় দেশ দুটির মধ্যে, আর যদি কোন পক্ষের একটি পারমাণবিক অস্ত্র আমার প্রিয় মাতৃভূমির উপর এসে পড়ে,তবে আগামী একহাজার বছরেও আমার দেশ সোজা হয়ে আর দাড়াতে পারবেনা। সাথে জমিতে ফসল হবেনা,বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম হবে। তাই আসুন যুদ্ধের পক্ষে বাহবা দিয়ে ঢোল না পিটিয়ে দেশ,জাতি ও মানবতার কল্যাণের লক্ষ্যে কাজ করি। যুদ্ধকে না বলি ও মনেপ্রাণে ঘৃণা করি। আর আমাদেরকে অবশ্যই এ সত্য উপলব্ধি করতে হবে যে,আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের নাগরিক। এ দেশের স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে ২০০ বছরের বেশি সময়ের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে। তাই দেশকে ভালোবাসুন এবং দেশকে ভালোবাসতে শিখুন। আর আরেকটি সত্য আমাদের সবাইকে অনুধাবন করতে হবে। সেটা হচ্ছে -ভারত বা পাকিস্থান কোন দেশই আমাদের পিতা রাষ্ট্র বা প্রভুরাষ্ট্র নয়। সুতরাং তাদের পক্ষে চিল্লাচিল্লি বা বাহবা দেওয়া, জাতী হিসাবে আমাদের অসহায়ত্ব বা নির্লজ্জতার প্রতীক।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়