Sunday, March 27

কানাইঘাটে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে অপ্রীতিকর ঘটনা


নিজস্ব প্রতিবেদক: মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালে শনিবার কানাইঘাট বীরদল এন এম একাডেমীতে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। বেলা পৌনে ১টার দিকে ছাত্রলীগ পরিচয় দিয়ে ইফতেখার মালিক তানভীর, নাহিদ ও বাহারের নেতৃত্বে নেতৃত্বে কতিপয় যুবক ৩টি মোটর সাইকেল নিয়ে ওই একাডেমীতে প্রবেশ করে তান্ডব শুরু করে। এ কারণে ওই বিদ্যালয়ের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান পন্ড হয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গ্রুপিংয়ের জের ইফতেখার মালিক তানভীরের নেতৃত্বে যুবকেরা বীরদল এন.এম একাডেমীতে প্রবেশ করে স্কুলের এবারের এসএসসি’র ফল প্রার্থী বীরদল ছোটফৌদ গ্রামের ফয়জুর রহমানের পুত্র আল-আমিনকে (১৮) স্কুল থেকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় প্রাণ বাঁচাতে আল-আমিন স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রবেশ করে স্কুলের প্রধান শিক্ষক যার উল্লাহ সহ অন্যান্য শিক্ষকের কাছে আশ্রয় নেয়। এরপরও অনুপ্রবেশকারীরা জোরপূর্বক শিক্ষকদের কাছ থেকে তাকে উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। ইফতেখার মালিক তানভীর তার হাতে থাকা পিস্তল উঁচিয়ে গুলি করা হবে বলে ঘোষণা দিয়ে স্কুল প্রাঙ্গণে ব্যাপক ত্রাসের সৃষ্টি করে। এ অবস্থায় ছাত্র-ছাত্রীরা প্রাণভয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। তানভীর মালিক ও তার সহযোগীরা আল-আমিনকে অস্ত্র উঁচিয়ে ছিনিয়ে নেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত হলে স্কুলের শিক্ষকরা তাকে ঘিরে রাখেন। অবস্থা বেগতিক দেখে স্কুলের শিক্ষকরা শোর চিৎকার শুরু করলে আশপাশ থেকে লোকজন এসে স্কুলে জড়ো হন। গ্রামের মাইকে স্কুলে সন্ত্রাসীরা প্রবেশ করেছে ঘোষণা দিলে শত শত লোক হাতে লাঠি সহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে স্কুলের দিকে আসতে থাকেন। এ অবস্থায় তানভীর মালিক মোটরসাইকেল যোগে তার তিনজন সহযোগী নিয়ে পালিয়ে যায়। বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী ও ছাত্র জনতা তাদের সহযোগী বাহার উদ্দিনকে আটক করেন এবং তাদের ব্যবহৃত দুটি মোটর সাইকেল স্কুল প্রাঙ্গণে আগুন ধরিয়ে সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেন। বিক্ষুদ্ধ লোকজন তানভীর মালিকের সহযোগী বীরদল পুরানফৌদ গ্রামের কথিত ছাত্রলীগ কর্মী পরিচয়দানকারী নাহিদ আহমদের বাড়ীতে চড়াও হয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে। বাহারকে বিক্ষুদ্ধ লোকজন আক্রমণের চেষ্টা করলে তাকে স্কুলের একটি কক্ষে টয়লেটে আটক করে রাখেন শিক্ষকরা। এ অবস্থায় বিক্ষুব্ধ লোকজন স্কুলের দরজা-জানালার কাঁচের দরজার ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ভেঙ্গে ফেলেন। খবর পেয়ে কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ স্কুলে গিয়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতাকে শান্তনা দিয়ে দুষ্কৃতকারীদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারের আশ্বাস দেন। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সদর ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলামসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। আটক বাহারের উপর লোকজন চড়াও হলে তাকে পুলিশের পোশাক ও হ্যালমেট পরিয়ে থানায় নিয়ে আসা হয়। ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী সিলেট উত্তর সার্কেলের এএসপি ধীরেন্দ্র মহাপাত্র স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, যারা ছাত্র সংগঠনের নাম ব্যবহার করে অপকর্ম করবে-তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। কানাইঘাটে কোন সন্ত্রাসীকে থাকতে দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। থানার ওসি মোঃ হুমায়ুন কবির বলেন, ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে কয়েকটি মামলার আসামী ইফতেখার মালিক তানভীর ও তার সহযোগীরা স্কুলের এসএসসি ফল প্রার্থী ছাত্র আল-আমিনকে অপহরনের চেষ্টা করেছিল। তারা খেলনা পিস্তল দিয়ে আতংকের সৃষ্টি করেছিল। তাদের এক সহযোগী বাহারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে। থানায় দ্রুত বিচার আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে বলে তিনি জানান। জানা গেছে, বীরদল এন.এম একাডেমীতে তান্ডব চালানোর পূর্বে ইফতেখার মালিক তানভীর কানাইঘাট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করে। একই দিনে ছোটদেশ উচ্চ বিদ্যালয়ে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের সময় ভিতরে মোটর সাইকেল নিয়ে প্রবেশ করে মহড়া দেয়। পরে স্কুলের শিক্ষকরা তাকে বের করে দেন।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়