Tuesday, September 1

কানাইঘাটে বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি


নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও অভিরাম টানা বৃষ্টিপাতের ফলে কানাইঘাট উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারন করেছে। সুরমা, লোভা, আমরি, কুশিয়ারা নদীর পানি অব্যাহত ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় মঙ্গলবার নতুন করে উপজেলার প্রায় শতাধিক গ্রাম ও কানাইঘাট পৌর শহরে বানের পানি ঢুকে পড়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ি ঘর আক্রান্ত হয়েছে। কানাইঘাট-দরবস্ত সড়কের নিচু স্থান তলিয়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে পল্লীবিদ্যু কর্তৃপক্ষ। উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার অভ্যন্তরীন রাস্তা ঘাট বন্যার পানিতে নতুন করে তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। শত শত মানুষ বাড়ী ঘড় ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন। সুরমা নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলোর মানুষ চরম নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করছেন। উপজেলার পৌরসভা, কানাইঘাট সদর, বানীগ্রাম, লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব, লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম, ঝিঙ্গাবড়ী ও রাজাগঞ্জ ইউপির বিভিন্ন স্থানে সুরমা নদীর ডাইকে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে এতে আতংকিত হয়ে পড়েছেন লোকজন। কয়েক হাজার হেক্টর আমন ধানের মাঠ বানের পানিতে সম্পূর্ণ ভাবে তলিয়ে গেছে। পানি অব্যাহত ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া ও কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন। মঙ্গলবার কানাইঘাটে সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ১.৫ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া সরেজমিনে উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করে এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রত্যন্ত অঞ্চলে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করলেও অদ্যবধি পর্যন্ত সরকারী ভাবে বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষের জন্য সরকারী ভাবে কোন ত্রান সামগ্রি বরাদ্ধ দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানবৃন্দ জানিয়ছেন দিনে দিনে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় তাদের এলাকার ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সম্ভাবনা রয়েছে। বন্যার্থদের জন্য কোন ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্ধ না দেওয়ায় তারা দুর্গতের নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন। দ্রুত সরকারী ভাবে ত্রান বরাদ্ধের দাবী জানিয়েছেন তারা। লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ চৌধুরী, লক্ষপ্রসাদ পূর্ব ইউপি চেয়ারম্যান ডাক্তার ফয়াজ আহমদ দিঘীরপার ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মুমিন চৌধুরী, সাতবাঁক ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার ফয়জুল ইসলাম, সদর ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম, বানীগ্রাম ইউপি চেয়রম্যান শাহাব উদ্দিন, ঝিঙ্গাবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রফিক আহমদ চৌধুরী ও রাজাগঞ্জ ইউপির চেয়ারম্যান ডাক্তার মানিক মিয়া কানাইঘাট নিউজকে জানিয়েছেন তাদের নিজ নিজ ইউনিয়নের ৯০ ভাগ ফসলি জমি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। অভ্যন্তরীন কাঁচা ও পাকা রাস্তা ঘাটের ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়