Sunday, June 28

হক্কানি নেতার সঙ্গে সৌদি রাষ্ট্রদূতের বৈঠক


কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: আফগানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন হক্কানি নেটওয়ার্কের নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে সৌদি আরবের। সম্প্রতি, উইকিলিকসের ফাঁস করা গোপন দলিলে বিষয়টি প্রকাশ করা হয়েছে। নথিতে দেখা গেছে, আফগানিস্তানের রাশিয়ার দখল থেকে মুক্ত হওয়ার যুদ্ধে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইয়ের অর্থায়নে পরিচালিত জিহাদের সময় থেকে এখনও হক্কানি নেটওয়ার্কের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে চলছে সৌদি আরব। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে নিযুক্ত তৎকালীন সৌদি রাষ্ট্রদূত ২০১২ সালে দুইবার হক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান জালালুদ্দিন হক্কানির ছেলে নাসিরুদ্দিন হক্কানির সঙ্গে বৈঠক করেন। সে সময় সৌদিতে জালালুদ্দিনকে চিকিৎসা করানোর ব্যাপারে কথাবার্তা হয়। তবে উইকিলিকসের ফাঁস করা এ সকল নথির কোনো বিশ্বাসযোগ্যতা নেই উল্লেখ করে জনগণকে তা বিশ্বাস না করার আহ্বান জানিয়েছে সৌদি সরকার। ফাঁস করা নথিতে উল্লেখ রয়েছে, ২০১২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি হক্কানি নেটওয়ার্কের তৎকালীন প্রধান অর্থের যোগানদাতা নাসিরুদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন ইসলামাবাদে নিযুক্ত তৎকালীন সৌদি রাষ্ট্রদূত আব্দুল আজিজ ইব্রাহীম সালেহ আল গাদের। বৈঠকটি ঠিক কোথায় অনুষ্ঠিত হয় তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে সাধারণত দূতাবাস ও নিজ ভবনে বৈঠক করতেন গাদের। কূটনীতিক পরিবেষ্টিত ওই স্থানগুলো পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নজরদারির মধ্যেই ছিল। ওই বৈঠকে সৌদি বাদশাহ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজের কাছে বাবা জালালুদ্দিনকে সৌদিতে চিকিৎসা দেয়ার আহ্বান জানান নাসিরুদ্দিন। একই বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি আরেকটি বৈঠকে গাদেরের কাছে বাবার অসুস্থতার প্রকৃতি ও পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন নাসিরুদ্দিন। তবে নথিতে রোগের নাম উল্লেখ করা হয়নি। সৌদিতে পাঠানো গাদেরের বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, জালালুদ্দিন পাকিস্তানের ওয়াজিরিস্তানে রয়েছেন এবং চিকিৎসকরা তাকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছেন। তবে জালালুদ্দিনকে সৌদিতে চিকিৎসা দেয়া হয়েছিল কি না- নথিতে এ তথ্যের উল্লেখ নেই। নাসিরুদ্দিন ও গাদেরের এই বৈঠকের কিছুদিন আগে পাকিস্তানে সফর করেছিলেন তৎকালীন আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। ওই সফরে পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ও সাবেক সেনাপ্রধান আশফাক পারভেজ কায়ানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। কায়ানিকে কারজাই বলেছিলেন, তিনি হক্কানি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করতে রাজি আছেন, কিন্তু তারা (হক্কানি) সম্ভবত তাকে (কারজাই) দেখতে চাইবে না। আফগানিস্তানে ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় তালেবান সরকারের পতনের পর পাকিস্তান সীমান্ত সংলগ্ন উত্তর ওয়াজিরিস্তানে ঘাঁটি গাড়েন জালালুদ্দিন। পাকিস্তানের মাটিতে বসেই আফগাননিস্তানে হামলা পরিচালনা করে আসছেন তিনি। ২০০১ সালের ৩১ জানুয়ারি জালালুদ্দিনের আন্তর্জাতিক চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিল। উইকিলিকসে প্রকাশ করা নথিতে দেখা গেছে, বৈঠককালীন সৌদি রাষ্ট্রদূতের কাছে জালালুদ্দিনের পাসপোর্ট জমা দেন নাসিরুদ্দিন। আফগান জিহাদের সময় থেকেই জালালুদ্দিনের সৌদি আরবের পাসপোর্ট ছিল। ধারণা করা হয়, নবায়নের জন্যই পাসপোর্টটি জমা দেয়া হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশ করা ‘কান্ট্রি রিপোর্টস অন টেরোরিজম-২০১৪’ এ উল্লেখ করা হয়েছে, পাকিস্তানে নিরাপদে বসেই কার্যক্রম পরিচালনা করছেন হক্কানি নেটওয়ার্কের নেতারা।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়