কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:
ইয়েমেনের এডেন শহরের আশপাশে শিয়া হুতি বিদ্রোহীদের সাথে সৌদি আরবে আশ্রয় নেয়া প্রেসিডেন্ট আবেদরাব্বো মানসুর হাদির সমর্থক সেনাবাহিনীর লড়াই অব্যাহভাবে চলছে। এডেন শহরে এই লড়াইয়ের মধ্যে আটকে পড়েছেন অন্তত ৬০-৭০ জন বাংলাদেশি- যারা এখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। রাজধানী সানাতেও আরো বহু বাংলাদেশি অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন। খবর বিবিসি বাংলার।
এডেনে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিক এমদাদুল হোসেন টেলিফোনে জানাচ্ছেন, শহরের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। তিনি বলেন, "শহরে আমি যে বাড়িতে থাকি তার নিচতলায় বন্দুক নিয়ে লোকজন বসে আছে। তারা স্থানীয় লোকজন, এই এলাকার বাসিন্দা, তারা হুতিদের প্রতিরোধ করার জন্য অবস্থান নিয়েছে।"
প্রেসিডেন্ট হাদির সমর্থনে সৌদি-নেতৃত্বাধীন একটি আরব কোয়ালিশন বাহিনী এডেনের আশপাশে হুতিদের অবস্থানগুলোর ওপর বিমান হামলা চালাচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় লড়াইয়ে অন্তত ৫০ জন লোক নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
হোসেন জানান, তারা যেখানে থাকেন তার দু'তিন কিলোমিটার দূরেই বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে। "আমরা গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছি, বোমা পড়ার সময় ঘরবাড়ি কাঁপছে। এ অবস্থায় আমরা বাড়ি থেকে বেরুচ্ছি না। এখানে দোকানপাট, অফিস-আদালত বন্ধ, পানির সমস্যাও দেখা দিয়েছে। এডেন শহরে এখন সরকার বা প্রশাসন বলতে আর কিছুই নেই।" বলেন তিনি।
এমদাদুল হোসেন একটি বেভারেজ প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। গত মাসের ২৬ তারিখ থেকেই তার অফিস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ। তিনি বলেন, "আমরা একটি বাড়িতে ছয় জন আছি, খাবার দাবার কিনে মজুত করা হয়েছে, হয়তো আরো সাতদিন চলবে।"
তিনি জানান, এডেন শহরে ৬০-৭০ জন বাংলাদেশি আছেন। তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন।
হোসেন জানান, এই যুদ্ধ অবস্থার মধ্যে তারা কী করবেন, কোথায় যাবেন তা ঠিক করতে পারছেন না।
তিনি জানান, তাদের সাথে কুয়েতের বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। "তারা আমাদের প্রতিদিনই জানাচ্ছেন, আমাদের ইয়েমেন থেকে বের করে নিয়ে যাবার জন্য চেষ্টা চলছে। তবে তা কবে হবে বোঝা যাচ্ছে না।"
ইয়েমেনের রাজধানী সানা শহরে একটি আমদানি-রপ্তানি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন জহিরুল ইসলাম বুলবুল। তিনি টেলিফোনে জানান, শহরের অফিস আদালত, ব্যাংক, দোকানপাট বেশিরভাগই বন্ধ। বিদ্যুৎ সরবরাহ ঘন ঘন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
তিনি জানান, শহরের যেসব সরকারি স্থাপনা এবং অন্যান্য জায়গা হুতিদের নিয়ন্ত্রণে - সেই এলাকাগুলোতে প্রতিনিয়ত সৌদি বিমান হামলা চলছে। তবে তারা এখনও বিপদমুক্ত আছেন বলেই জানান বুলবুল।
আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো চেষ্টা করছে ইয়েমেনে অবরুদ্ধ শহরগুলোয় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিতে, কিন্তু নানা বাধার কারণে তাতে বিলম্ব হচ্ছে।
কুয়েত থেকে বাংলাদেশি কূটনীতিকদের একটি দল জিবুতিতে গেছেন আটকেপড়া বাংলাদেশিদের দেশে ফেরানোর চেষ্টায়। একজন কর্মকর্তা বলেছেন, জাহাজ ও বিমানযোগে বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে নেবার চেষ্টা করছেন তারা।
খবর বিভাগঃ
দেশের বাইরে
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়