Friday, April 10

শিশু অধিকার রক্ষায় ইসলামের ভূমিকা


ইসলাম ডেস্ক,কানাইঘাট নিউজ: আজকের শিশুই আগামী দিনের ভবিষ্যত। শিশুরাই আগামী দিন পৃথিবী পরিচালনা করবে। সভ্য দুনিয়ায় শিশুদের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বলে ভাবা হয়। শিশুদের স্নেহ করা, তাদের প্রতি মমত্বপূর্ণ আচরণ করা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত বলে বিবেচিত। কারণ তিনি তাদের স্নেহ করতেন, তাদের প্রতি মমতামাখা আচরণে তিনি অভ্যস্ত ছিলেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিশুদের মানবাধিকার রক্ষায় যে আদর্শ রেখে গেছেন তা সত্যিই অনন্য। রাসুল-পত্নী বিশ্বাসীদের জননী হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, একজন বেদুইন ব্যক্তি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে শিশুদের স্নেহভরে চুমু খেতে দেখে বললেন, আপনারা কি শিশুদের স্নেহভরে চুমু খান? আমরা তো শিশুদের স্নেহভরে চুমু খাই না। নবীজি বললেন, আল্লাহতায়ালা তোমার হৃদয় থেকে দয়াময়া উঠিয়ে নিয়ে গেছেন। তাতে আমার কী করার আছে। অর্থাৎ তোমাদের হৃদয় শিশুদের প্রতি মায়া নেই বলে তুমি শিশুদের স্নেহভরা চুমু খেতে পার না। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে যুগে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সেই অন্ধকারাচ্ছন যুগে আরবে কন্যাশিশুর জন্মগ্রহণকে অপমানজনক হিসেবে ভাবা হতো। কেউ কেউ এ জন্য কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দিয়ে লোকলজ্জার কবল থেকে বাঁচার চেষ্টা করত। পবিত্র কোরআনের সূরা বনি ইসরাইলের ৩১ নম্বর আয়াতে কন্যাশিশু হত্যার ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণের মাধ্যমে ইরশাদ করা হয়েছে ‘তোমাদের সন্তানদিগকে দারিদ্র্য ভয়ে হত্যা করিও না। উহাদিগকেও আমিই রিজিক দিই এবং তোমাদিগকেও, নিশ্চয়ই উহাদিগকে হত্যা করা মহাপাপ।’ কন্যাসন্তান পালনে বাবা-মায়ের মেহনতের জন্য আখিরাতের জীবনে বাবা-মাকে পুরস্কৃত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসে। তিনি বলেছেন, কেউ যদি কন্যাসন্তান প্রতিপালন নিয়ে কষ্টে পড়ে এবং ধৈর্য ধরে তাদের প্রতি সুন্দর আচরণ করে যত্নসহকারে লালন-পালন করে এবং তাদের শিষ্টাচার করে গড়ে তোলে- কিয়ামত দিবসে এ কন্যা সন্তানরা তার জন্য জাহান্নামের মাঝে আড়াল হয়ে দাঁড়াবে। (বুখারি, মুসলিম) রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নামাজ পড়তেন তখন কখনো কখনো তার প্রিয় নাতি হজরত হাসান (রা.) ও হজরত হুসাইন (রা.) নানাজনের কাঁধে চড়ে বসতেন। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ জন্য বিরক্ত হতেন না বরং তারা যতক্ষণ নিজেদের ইচ্ছায় কাঁধ থেকে না নামতেন ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি সেজদা থেকে উঠতেন না। একবার এক সাহাবী এ জন্য তাদের মৃদু ধমক দিলে তিনি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। শিশুদের মানবাধিকার রক্ষা এবং তাদের প্রতি স্নেহ প্রদর্শন যেহেতু রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত সেহেতু এ বিষয়ে আমাদের সবারই যত্নবান হওয়া উচিত।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়