Thursday, April 2

যেসব আমলে গোনাহ মাফ হয়


কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: শয়তানের ধোঁকায় এবং নফসের প্ররোচনায় মানুষ বারবার গোনাহের কাজে জড়িয়ে পড়ে। তবে গোনাহের মধ্যে অবিচল না থেকে আল্লাহর কাছে ফিরে আসা এবং তওবা করার জন্য আল্লাহ পাক বান্দাকে আহ্বান জানিয়েছেন। তওবা হলো জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে জগতের সবার গোনাহ মাফের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আপন অশেষ দয়া ও অনুগ্রহে শয়তানের মোকাবিলায় যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য বান্দাকে এ হাতিয়ার দান করেছেন। পবিত্র কোরআনে ঘোষিত হয়েছে, 'যারা কখনও কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেলে কিংবা মন্দ কাজে জড়িয়ে পড়ে। অতঃপর সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, আল্লাহ ছাড়া তাদের পাপ কে ক্ষমা করবেন? (সূরা আলে ইমরান : ১৩৫)। রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, 'দয়াময় আল্লাহ তায়ালা রাতের বেলায় ক্ষমার হাত প্রসারিত করে ডাকতে থাকেন দিনের বেলায় গোনাহগারদের ক্ষমা করার জন্য। আর রাত্রিকালীন গোনাহগারদের মাফ করার জন্য দিনের বেলা ক্ষমার হাত প্রসারিত করে ডাকতে থাকেন। এ অবস্থা পশ্চিম আকাশ থেকে সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। (সুনানে বায়হাকি : ১৬২৮১)। তওবা ছাড়াও বিভিন্ন আমল দ্বারা গোনাহ মাফ হওয়ার কথা হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এ ধরনের কয়েকটি আমল হলো_ প্রথম আমল- দ্বীনি মজলিসে বসা। বোখারি শরিফে এসেছে, একদা রাসূলুল্লাহ (সা.) মসজিদে তালিমের মজলিসে ছিলেন। এ সময় তিনজন লোক এলো। তাদের একজন মজলিসে ফাঁকা জায়গা দেখে বসে পড়ল আরেকজন ভিড় দেখে চলে গেল, অপরজন চলে যেতে লজ্জাবোধ করল এবং পেছনে বসল। রাসূল (সা.) আলোচনা শেষে বললেন, আমি তোমাদের তিন ব্যক্তির অবস্থা শোনাব। তাদের একজন আল্লাহর কাছে আশ্রয় নিয়েছে এবং আল্লাহ পাকও তাকে আশ্রয় দিয়েছেন। আরেকজন মজলিস থেকে চলে যেতে লজ্জাবোধ করল আল্লাহ তায়ালাও তাকে শাস্তি দিতে লজ্জাবোধ করলেন। আর তৃতীয় ব্যক্তি মজলিস থেকে বিমুখ হয়ে চলে গেল আল্লাহ পাকও তার থেকে বিমুখ হলেন। (বোখারি : ৬৬)। দ্বিতীয় আমল_ নিদ্রা যাওয়ার সময় তিনবার পাঠ করা_ 'আস্তাগফিরুল্লাহাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল কাইয়ুমি ওয়া আতুবু ইলাইহি।' সাহাবি আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, 'যে ব্যক্তি শয়নকালে তিনবার উপরোক্ত ইস্তেগফার পড়বে তার পাপরাশি সমুদ্রের ফেনা, আকাশের নক্ষত্ররাজি কিংবা মরুভূমির বালুকণা কিংবা দুনিয়ার দিনগুলোর পরিমাণ হলেও আল্লাহ পাক তা মাফ করে দেবেন।' (তিরমিজি : ২৩০৪)। তৃতীয় আমল_ প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর উপরোক্ত ইস্তিগফার তিনবার পাঠ করা। হজরত বারা (রা.) বর্ণনা করেন, নবী করিম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর তিনবার এ ইস্তিগফার পড়বে তার গোনাহগুলো মোচন করা হয়, যদিও সে জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করে থাকে। (তাবরানি : ১৪০০)। চতুর্থ আমল_ প্রতিদিন ১০০ বার পাঠ করা_ 'সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি।' হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) এরশাদ করেছেন, 'যে ব্যক্তি দৈনিক উপরোক্ত তাসবিহ ১০০ বার পাঠ করবে তার পাপগুলো সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হলেও মাফ হয়ে যাবে।' (বোখারি ও মুসলিম)। পঞ্চম আমল_ নামাজে সূরা ফাতেহার পর আমিন বলা। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ইমাম যখন সূরা ফাতেহা শেষ করে আমিন বলেন, তখন তোমরাও আমিন বলো। কেননা যার আমিন ফেরেশতাদের আমিনের সঙ্গে মিলে যাবে তার গোনাহগুলো মোচন হয়ে যাবে। (নাসায়ী : ১০০০)।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়