Friday, December 19

রাতের পর রাত যৌনঅত্যাচার, ডাক্তার পিতা পলাতক


কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: মায়ের সামনেই ছোট মেয়েকে রাতের পর রাত শয্যাসঙ্গী করে নিত বাবা৷ রেহাই পেত না বড় মেয়েও৷ আপত্তি জানালেই চলত মারধর৷ এমনকি, স্ত্রীকে সবক শেখাতে মানসিক হাসপাতালেও পাঠিয়েছিলেন চিকিতসক স্বামী৷ শেষমেশ মাকে নিয়ে পুলিশের কাছে এসে বাবার বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছেন মেডিক্যালের ছাত্রী৷ অভিযুক্ত নিউ আলিপুর ও হাওড়ায় দু'টি নার্সিংহোমের ইএনটি চিকিতক৷ দক্ষিণ শহরতলির মহেশতলা থানার ডাকঘর এলাকার ঘটনা৷ অভিযুক্ত পলাতক৷ ডাক্তারির (কোন মেডিক্যাল কলেজ, তা গোপন রাখা হল) ওই ছাত্রী জানিয়েছেন, অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই তাঁর উপর যৌন নির্যাতন শুরু করে বাবা৷ এমনকি, বাবার লালসা থেকে দিদিও রেহাই পায়নি বলে অভিযোগ তাঁর৷ দিনের পর দিন দুই বোনের উপর বাবা অত্যাচার চালিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি৷ প্রথম দিকে মা কিছু না-জানতে পারলেও, পরে স্বামীর কুকীর্তি ফাঁস হয় তাঁর কাছে৷ প্রতিবাদ করলে স্ত্রীকে ওই চিকিতসক বেধড়ক মারধর করতেন৷ চোখের সামনে মেয়েদের খোদ বাবার যৌন লালসার শিকার হতে দেখেও ভয়ে মুখ বন্ধ রেখেছিলেন ওই মহিলা৷ ইচ্ছের বিরুদ্ধে গেলে দুই বোনকেও মারধর করতেন গুণধর৷ স্বামীর হাত থেকে বাঁচাতে বড় মেয়েকে আত্মীয়ের বাড়ি পাঠিয়ে দেন মা৷ এতে স্ত্রীর উপর খেপে যান ওই চিকিতসক৷ অভিযোগ, নিজের প্রভাব খাটিয়ে স্ত্রীকে মানসিক ভারসাম্যহীন প্রমাণ করে কলকাতার একটি মানসিক হাসপাতালে রেখে আসেন তিনি৷ পরে সেখান থেকে সোনারপুরের একটি মানসিক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন স্ত্রীকে৷ কিন্তু পুরোপুরি সুস্থ ওই মহিলা সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে যান৷ ততদিনে বাবার যৌন অত্যাচারে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন মেয়ে৷ এ বার মা-ই সাহস জোগান৷ ২০১২ সাল সেটা৷ মেয়েকে পড়াশুনোর জন্য বিশাখাপত্তনম পাঠিয়ে দেন মা৷ সেখান থেকে পাশ করে এ বছরের প্রথম দিকে ফিরে আসেন ওই ছাত্রী৷ জানতে পারেন, বাবার হাত থেকে বাঁচাতে দিদির বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন মা৷ ইতিমধ্যে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ আসে৷ বাবা শুধরে গিয়েছেন মনে করে মাকে নিয়ে মহেশতলার বাড়িতে ফেরেন তিনি৷ অভিযোগ, দিন কয়েক পরই আসল রূপ বেরিয়ে পড়ে বাবার৷ ফের মেয়ের উপর যৌন নির্যাতন শুরু করেন ওই চিকিতসক৷ প্রতিবাদ করলে ফের আগের মতো মারধর করেন স্ত্রীকে৷ শেষমেশ ৩ ডিসেম্বর বাবার হাত থেকে বাঁচতে মাকে নিয়ে গোপনে বাড়ি ছাড়েন মেডিক্যালের ওই ছাত্রী৷ কখনও কোন আত্মীয়, কখনও বা বন্ধু-বান্ধবদের বাড়িতে আশ্রয় নেন৷ আইনজীবীর সহায়তায় বৃহস্পতিবার মাকে নিয়ে মহেশতলা থানায় এসে বাবার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি৷ নির্যাতিতা ছাত্রী ও তাঁর মায়ের কথায়, 'এ অন্যায়ের কোনও ক্ষমা নেই৷ বাবা হিসেবে স্বামী হিসেবে ভাবতে ঘেন্না লাগছে৷ ওর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই৷' আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা বলেন, 'পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে৷ দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হোক৷' দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডিএসপি অজয় মুখোপাধ্যায় বলেন, 'ধর্ষণের চেষ্টার মামলা রুজু করা হয়েছে৷ অভিযুক্তের খোঁজ চলছে৷'

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়