Friday, November 28

পপির ভাগ্য বদল!


কৃষ্ণকান্ত চক্রবর্তী: কতটুকু কষ্ট পেলে মানুষ দূরে থাকতে পারে; কতটুকু আনন্দে মানুষ এগিয়ে আসে- এসব প্রশ্নের উত্তর কেউ দিতে পারে, কেউ পারে না। 'গার্মেন্টস কন্যা' ছবির পর চলচ্চিত্রে আর দেখা যায়নি চিত্রনায়িকা পপিকে। গেল ঈদে তাকে টিভি পর্দায় দেখা গিয়েছিল। কিন্তু যার ভক্ত গ্রাম-গঞ্জ-শহরে সে কেন ড্রইংরুমে পড়ে থাকা বোকাবাক্স বন্দি থাকবেন? মাঝে কিছু বছর বড় পর্দার আড়ালে থেকেছেন পপি। তার আড়ালটা আসলে কী কারণে? প্রযোজক-পরিচালকরা তাকে ডাকেন না, নাকি তিনি নিজেই চলচ্চিত্রকে বিদায় জানাতে চান? নিন্দুকরা বলে, পপি নাকি প্রচুর মিথ্যা কথা বলেন। টাকা পেয়েও অস্বীকার করেন। অভিনয় করতে এসে ভাব ধরেন। পপির পক্ষের লোকজন এ কথার বিরুদ্ধে। তাদের মতে, পপি তার কাজের ব্যাপারে সৎ; কিন্তু কথার ঘনঘটা থাকলেও পপিকে কাজে দেখা যায় না। 'কুলি' ছবিটি তার জীবনের অনেক বড় মাইলফলক। '৯০-এর দশক থেকে শুরু করে ২০০০ দশকে ক্যারিয়ার গ্রাফ মোটামুটি ভালো অবস্থানে রেখেছেন। সুন্দরী ও লম্বা দেহের অধিকারী হওয়ার দরুন তার গ্রহণযোগ্যতা ছিল বেশ। আবেদনময়ী অভিনেত্রী হিসেবেও সুনাম কুড়িয়েছিলেন। তবে ধোপে টিকল না কিছুই। চলচ্চিত্র থেকে প্রায় হারিয়েই গেলেন। কিন্তু না, এবার আবার জ্বলে উঠেছেন। আজ মুক্তি পাচ্ছে পপি অভিনীত 'চার অক্ষরের ভালবাসা'। অনেক দিন পর পর্দায় তাকে দেখতে পাচ্ছে দর্শক। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছুই পরিবর্তিত হয়। তবে এ পরিবর্তন যেন পপির জীবনে নতুন বার্তা নিয়ে এলো। চলচ্চিত্রে নাকি প্রতিযোগিতা অনেক। কে কার চেয়ে ভালো করল, তা নিয়ে আলোচনার কমতি নেই। নিজেকে উপরে তুলে ধরতে সবাই চায়। পপির পাশাপাশি মুক্তি পেয়েছে মৌসুমীর 'এক কাপ চা'। মৌসুমীকে মাত করে দেয়ার জন্য পপিকে উতরে যেতে হবে। কে কাকে ফেলে দেন সেটা দিন ঘুরলেই বোঝা যাবে। ক'দিন আগে এক চলচ্চিত্র প্রযোজক বললেন, পপিকে নিয়ে এখন আর ছবি নির্মাণ করা যায় না। কারণ তার মিথ্যা অহঙ্কার তাকে অনেক নিচে নামিয়েছে। এ অবস্থান থেকে বের হয়ে আসতে তাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে। এটুকু কষ্ট কি করতে পারবেন পপি? এ প্রশ্নের উত্তর জানাটা অনেক বেশি প্রয়োজন। এক যুগের বেশি সময় ধরে চলচ্চিত্রে রয়েছেন পপি। তিনি মিডিয়াকে জানান, নিজেকে নতুন করে গড়ে তুলতে চান। এক সময়ের পর্দা কাঁপানো অভিনেত্রী পপিকে নতুন মাত্রায় দেখতে চায় দর্শক। চলচ্চিত্র বোদ্ধারা বলেন, পপি নাকি নিজের গোঁড়ামির কারণে এ অবস্থা নিজেই তৈরি করেছেন। সুন্দরী প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে মিডিয়ায় এসে যে তোলপাড় তুলেছিলেন, সময়ের ব্যবধানে তা ফুরিয়ে গেছে। কিন্তু তার কিছুটা আগে চলচ্চিত্রে আসা মৌসুমীও অভিনয় করে যাচ্ছেন। পপি প্রথমে শাকিল খানের সঙ্গে অভিনয় শুরু করেন। ধীরে ধীরে ওমর সানী, মান্না, ফেরদৌস, রিয়াজসহ চলচ্চিত্রের হারিয়ে যাওয়া দু-একজন নায়কের বিপরীতেও অভিনয় করেছেন। বর্তমানে এসে তিনি নাকি নায়ক সঙ্কটেও ভুগছেন- এমনই গুজবে শোনা যাচ্ছে। বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে যেসব ছবি হচ্ছে তাতে কলেজপড়ুয়া মেয়ে হিসেবে পপি বেমানান। পপিকে নিয়ে ভাবতে হলে ম্যাচিউরড কোনো চরিত্র চিত্রণ করতে হবে। সে ভাবনা নিয়ে ছবি নির্মাণ করা ইদানীং প্রায় অসম্ভব। আর নতুনদের ভিড়ে পপিও ঠাঁই খুঁজে পাচ্ছেন না। তাই 'দরিয়াপাড়ের দৌলতী'র মতো ছবিতে অভিনয় করা তার জন্য সহজ। কিন্তু এ ধরনের ছবি বছরে কয়টা হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, পপি কি ছবিতে অভিনয় করবেন না? করবেন। তবে এজন্য তার ও পরিচালকের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়