কানিউজ ডেস্ক: ক্যান্সার একটি ভয়াবহ ব্যাধি। ক্যান্সারে যিনি আক্রান্ত হন তার বাঁচার সম্ভাবনা একেবারেই থাকে না বললেই চলে। বর্তমান সময়ে ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আগের তুলনায় বাড়ছে। ক্যান্সারের আক্রান্ত হওয়ার পেছনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষই দায়ী।
মানুষের অতিরিক্ত পরিমাণে ধূমপান, অ্যালোকোহল সেবন ও স্থূলতার কারণে ক্যান্সার হয়ে থাকে। এখনও পর্যন্ত বিশ্বে ক্যান্সার নিরাময়ে পর্যাপ্ত চিকিৎসেবার আবিষ্কার হয়নি। এ কারণে মানুষকেই কিছু তার কিছু খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করে চলতে হবে ও ভাল অভ্যাস গ্রহণ করতে হবে।
সম্প্রতি গবেষকরা দীর্ঘ সময় গবেষণার পর একটি পরামর্শ দিয়েছেন। এতে আটটি বিষয় উল্লেখ করে বলা হয়েছে যদি কেউ এগুলো মেনে চলতে পারে তাহলে তার ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যাবে। আসুন, এই গুরুত্বপূর্ণ আটটি বিষয় সম্পর্কে জেনে নিই।
১.মদ: মদ হেলিকব্যাক্টার পাইলোরির হাত থেকে মানুষেকে রক্ষা করে। এটির কারণে মানুষের আলসার বা পাকস্থলী ক্যান্সার হয়। তবে দিনে দুইবারের বেশি অ্যালকোহল পান করলে মুখে, গলায়, খাদ্যনালীতে ও লিভারে ক্যান্সারের আক্রমণ ঘটতে পারে। নারীদের মদ্যপানের বিষয়ে খুব সচেতন থাকতে হবে। নারীরা যদি প্রতিদিন একবার করেও মদ্যপান করে তাহলে তাদের ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি শতকরা ১০ ভাগ বেড়ে যায়।
২.প্রতি দুই ঘণ্টা পরপর হাঁটাচলা করুন: একাধারে বসে না থেকে অন্তত প্রতি দুই ঘণ্টা পরপর হাঁটাচলা করতে হবে। সম্প্রতি জার্মানির ইউনিভার্সিটি অব রিগেনসবার্গের গবেষকরা একটি গবেষণায় দেখেছেন, দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বসে থাকার কারণে জরায়ু, নাড়ি ও ফুসফুসে ক্যান্সারের আক্রমণের সম্ভাবনা শতকরা ১০ ভাগ বেড়ে যায়।
৩.ফলমূল ফ্রিজের বাইরে রাখুন: ফ্রিজে ফলমূল রাখলে তাতে ক্যান্সার প্রতিরোধক উপাদান একেবারে কমে যায়। একারণে যতদূর সম্ভব ফলমূল ফ্রিজের বাইরে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
৪.রাতে লাইট বন্ধ করে ঘুমানো: বেশি সময় ধরে কৃত্রিম আলোয় থাকলে তাতে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। বেশি রাত পর্যন্ত লাইট জ্বালিয়ে রাখলে তাতে ব্রেস্ট ক্যান্সার ও মূত্রনালীতে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
৫.মাংস ম্যারিনেট করে নিন: অনেকে আছেন মাংস ঝলসিয়ে খেতে ভালবাসেন। তবে মাংস সরাসরি আগুনে ঝলসালে তাতে ক্যান্সারের সাথে সংশ্লিষ্ট রাসায়নিক পদার্থ থাকতে পারে। সম্প্রতি আমেরিকান গবেষকরা বলেছেন, মাংস ঝলসানোর আগে তা ম্যারিনেড করে নেয়া ভাল। ম্যারিনেড করার পদ্ধতি হচ্ছে, আপনি একটু লেবুর রস, দুই চামচ জলপাইয়ের তেল ও এক চামচ টাটকা মধু সরিষার তেল দিয়ে মাংস মিশিয়ে নেয়া এবং তারপর আগুনে ঝলসানো বা রান্না করা। এতে ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে না।
৬.বাড়িতে যথাযথ বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা রাখা: আপনি বিশ্বাস করুন আর নাই করুন আপনার বাড়ি রাস্তা বা অন্য এলাকা থেকে বেশি দূষিত। কারণ আপনি বাড়িতে যেসব সুগন্ধি ব্যবহার করেন বা যখন ধূমপান করেন তখন বায়ু দূষিত হয় এবং তাতে ক্যান্সারের রাসায়নিক পদার্থ থাকে। এজন্যে বাড়িতে বায়ু প্রবেশ করার ও বাহির হওয়ার জন্যে যথাযথ ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৭.লবণ খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা: যুক্তরাজ্যে পাকস্থলী ক্যান্সারের জন্যে লবণের ভূমিকা শতকরা ১৪ ভাগ। প্রতিদিন আমাদের লবণ খাওয়ার পরিমাণ ৬ গ্রামের (২.৪ গ্রাম সোডিয়াম) কম হওয়া উচিৎ। এজন্যে লবণ খাওয়ার ক্ষেত্রে সবাইকে সর্বদা সতর্ক থাকেত হবে। এছাড়া বাজার থেকে খাবার কেনার সময়ও সোডিয়ামের বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।
৮.মাইক্রোয়েভ চুলা ব্যবহার করবে না: অনেকে আছেন মাইক্রোওয়েভ ওভেন বা চুলায় খাবার গরম করে খেতে অভ্যস্ত। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এতে খাবার গরম করার ফলে ক্যান্সার প্রতিরোধক দ্রব্য কমে যায়।
এছাড়াও আপনি চিকিৎসকের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিতে পারেন। একটি কথা মনে রাখবেন, জীবন দেয়া ও নেয়ার ক্ষমতা সম্পূর্ণ আল্লাহ তায়ালার নিয়ন্ত্রণে। তবে তিনি মানুষকে সবসময় সতর্কতা অবলম্বন করে চলতে বলেছেন। এ জন্যে অবশ্যই আপনাকে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
খবর বিভাগঃ
স্বাস্থ্য
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়