ঢাকা: ধনী হওয়ার জন্য মানুষ বিশেষ করে পুরুষ মানুষ কিনা
করে বলুন?পায়ের ঘাম মাথায় ফেলে দিনরাত পরিশ্রম করে। রাতারাতি ধনী হওয়ার
জন্য অনেকে বিয়ের সময় কনেপক্ষের কাছে মোটা অঙ্কের যৌতুক দাবি করে। কেউ কেউ
যৌতুকের জন্য ঘরের বৌয়ের ওপর চালায় নানা অত্যাচার। স্ত্রীকে তালাক বা
হত্যা করতেও দ্বিধা করে না। কিন্তু ব্রিটিশ নাগরিক টনি হকেন অন্য সব
পুরুষদের থেকে আলাদা। সম্প্রতি সে আর তার চীনা স্ত্রী ঝিউ লি(৫১) বিবাহ
বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছেন। হকেন তার ধনকুবের বৌটিকে কেন তালাক দিচ্ছে জানেন?
তাহলে গোটা ব্যাপারটা খুলেই বলি।
সাবেক গণিতের শিক্ষক টনি হকেন(৫৭)তার সম্পদশালী স্ত্রী ঝিউ লিকে(৫১)তালাক
দিচ্ছেন। কারণ বৌয়ের এত বৈভব তার পছন্দ নয়। ধনকুবের স্ত্রীর সঙ্গে থাকতে
থাকতে বিলাসি জীবনের প্রতিই যেন অরুচি ধরে গেছে তার।
বিয়ের আগে লির কিন্তু এত সম্পদ ছিল না। ২০১১ সাল থেকে লির শপিং সেন্টার
ব্যবসা ফুলে ফেপে ওঠতে থাকে। তার অর্থ সম্পদের পরিমাণ ছিল ১.১ বিলিয়ন
ইউরো। তখন লন্ডনের সানডে টাইমস পত্রিকা বিশ্বের ধনকুবেরদের যে তালিকা
প্রকাশ করে তাতে ঠাঁই করে নেন লি। বর্তমানে লি হচ্ছে ব্রিটেনের সবচেয়ে
সম্পদশালী নারী। চীনে বেশ কয়েকটি শপিং সেন্টার ছাড়াও তার অন্যান্য ব্যবসাও
রয়েছে।
এই দম্পতি লন্ডনের সাউথ নরউডে নিজেদের বাড়িতে বসবাস করছেন। সম্প্রতি
ইংল্যান্ডের সারে শহরে ১.৫ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে নিজেদের জন্য আরো একটি বাড়ি
কিনেছেন লি।ফর্বেস সাময়িকীর মতে লির বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ১২শ কোটি ডলার।
তার বিলাসবহুল ইয়টে মূল্যবান যে মদের বোতেলটি রয়েছে তার দামই ৯শ ইউরো।
কিন্তু হকিনের আবার এত বিলাসিতা পছন্দ নয়।তিনি মোড়ের দোকানে বসে দুপুরের
খাবার খেতেই বেশি পছন্দ করেন।এখনো কমদামী দোকান থেকে বই কিনেন। দামী
পোশাক-আশাক সাধারণত: এড়িয়েই চলেন। তাইতো লির ধন সম্পদের পরিমাণ যত বাড়তে
থাকে ততই দুজনের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হতে থাকে। স্ত্রীর এত বিলাস বৈভবে যেন
দম বন্ধ হয়ে উঠতে থাকে তার। তাই বুঝি এ থেকে মুক্তি পেতে বিবাহ বিচ্ছেদের
সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এ সম্পর্কে দ্য টাইমস পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,‘এত বড়লোকি
জীবনে আমি অভ্যস্ত নই। আমার কেমন যেন দম আটকে আসে। অত বেশি টাকা পয়সা খরচ
করাও আমার পছন্দ নয়। আমি এভাবেই বেড়ে ওঠেছি।’
তিনি আরো বলেন,‘ আমি তো কখনও অত সম্পদশালী ছিলাম না। তাই আমাকে একটু হিসেব করেই চলতে হয়।’
হকেন এখন তার আগের জীবনে ফিরে যেতে চাইছেন্। তাই ধনকুবের স্ত্রীর কাছে
বিবাহ বিচ্ছেদ চেয়েছেন। লি তাকে তালাক দিতে রাজিও হয়েছেন্। তালাকবাবদ লি
হকেনকে মাত্র ১০ লাখ ডলার দিচ্ছেন। হকেন এতেই খুশি।
তার ভাষায়,‘ আমার জন্য এই যথেষ্ট। আমি অত বিলাসি নই।হিসেব করে চললে এতেই
আমার জীবন কেটে যাবে।’ লির সম্পদের পরিমাণ বিবেচনা করলে ১০ লাখ ডলার
যৎসামান্য বলেই মনে হয়। তবে এ নিয়ে মামলা মোকদ্দমায় জড়াতে রাজি নয় হকেন।
দুই মেরুর দুই বাসিন্দা হকেন আর লির পরিচয় হয়েছিল খুব সাধামাটাভাবে। হকেন
যেখানে অঙ্ক করাতেন সেখানে ইংরেজি শিখতে যেতেন লি। সেখানেই দুজনের পরিচয়,
প্রেম এবং বিয়ে। বিয়ের পর লির ব্যবসা বাড়তে থাকে।ব্যবসার কাজে লি বেশি
ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এতে দুজনের মধ্যে ব্যবধান বাড়তে থাকে। একই ছাদের নিচে
বসবাস করার পরও একপ্রকার আলাদাই থাকতে থাকেন দুজন।
লির কাছ থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার জন্য হকেনের কোনো দু:খ নেই। চিন্তা কেবল
একমাত্র ছেলেটিকে নিয়ে। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ ১৭ বছরের উইলিয়ামের জীবনে কী
প্রভাব ফেলে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হকিন।
প্রসঙ্গত, লি চীনের একজন সেরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার। তার রয়েছে
২২টি শপিং সেন্টার। এছাড়া সে চীনা ফুটবল টিম গুইজো রেনহের মালিক। এটি চীনা
সুপার লীগের তৃতীয় দল।
বাংলামেইল২৪ডটকম/
খবর বিভাগঃ
বিশেষ খবর
সর্বশেষ সংবাদ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়