বরগুনা: বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের ২৫০ শয্যার নতুন সাততলা ভবন নির্মানে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভবনের ভিত মজবুব করার জন্য ৫৭ ফুট দীর্ঘ পাইল ব্যবহার করা হলেও এগুলো নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি করার কারণে তা বসানোর সময় কোনটি মাঝখান দিয়ে আবার কোনটি ১০/১২ ফুট উপর দিয়ে ভেঙ্গে যাচ্ছে। এতে নির্মানের পর ভবনটি ভারসাম্যহীন হয়ে মুখ থুবরে পরতে পারে এমন আশংকা করছে এলাকার মানুষ। সরেজমিনে দেখা যায় পাইল বসানের সময় এর উপরিভাগে ফলস ক্যাপ পরিয়ে হ্যামার দিয়ে পিটিয়ে বসানোর সময় পাইলের ১০-১২ ফুট ভেঙ্গে যাচ্ছে। নির্মান কাজের পরিকল্পনা অনুযায়ী ৫৭ ফুট লম্বা পাইলগুলো সম্পূর্ণ সমতল থেকে তিন ফুট মাটির নীচে বসানোর কথা। কিন্তু পাইলগুলো মাটির উপরে ৬/৭ ফুট রেখেই ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে।
বরগুনা জেলা শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী নিজাম উদ্দিন বলেন, প্রত্যেক ভবনেই মূল চাপ বহন করে পাইল। এ ক্ষেত্রে নিয়মানুযায়ী পাইল তৈরি বা পোঁতা না হলে ভবনটি ঝুকির মধ্যে থাকে। এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভবনের কাজে কর্মরত এক শ্রমিক বলেন, পাইল তৈরির কাজে প্রথম থেকেই সিমেন্ট, বালু ও পাথরের মিশ্রনে অগভীর নলকুপের লবনাক্ত পানি ব্যবহার করা হয়। এতে পাইল মজবুত হয় না। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম জানান, পাকা ভবন নির্মান কাজে লবনাক্ত পানি ব্যবহার করা ঠিক নয়। এতে ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
জেলা গণপুর্ত বিভাগ সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালের মে মাসে সার্কিট হাউস মাঠে ন্যাশনাল সার্ভিস প্রকল্প উদ্বোধনকালে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট বরগুনা জেনালের হাসাপাতাল ভবন ২৫০ শয্যায় উন্নীত করার ঘোষনা দেন। ২০১১ সালের জুন মাসে হাসপাতাল বাউন্ডারীর মধ্যে খালি জায়গায় নতুন সাততলা ভবন নির্মানের জন্য দরপত্র আহবান করে গণপূর্ত অধিদপ্তর। নির্মান ব্যয় ধরা হয় ৩৩ কোটি ১১ লাখ ৪২ হাজার ৮৯৮ টাকা। কাজ পায় ঢাকার প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার মো. আবদুল খালেক। চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারী ভবনের কাজ শুরু থেকেই নিম্ন মানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে।
ঠিকাদার আবদুল খালেক বলেন, পাইল স্থাপনের বেলায় প্রতিটি ভবনেই এমনটি ঘটে থাকে। কারণ পাইল বসানোর শেষের দিকে মাটির ঘনত্ব বেড়ে যায়, এতে পাইল নিচে না গিয়ে উপরের দিকে ভেঙ্গে যায়। এতে ভবনের কোন সমস্যা হয় না। কারণ সাততলা ভবনের জন্য ৪৭ ফুট পাইল স্থাপনই যতেষ্ঠ।
এব্যাপারে বরগুনা গণপুর্ত ভবনের নির্বাহী প্রকৌশলী ওসমান গনি বলেন, বুয়েটের পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমেই ভবনের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। এখানে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কোন অবকাশ নেই। ---ডিনিউজ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়