Thursday, August 15

গিরিশচন্দ্র সেনের স্মৃতি রক্ষার কোনো উদ্যোগ নেই

নরসিংদী:   ১৫  আগস্ট  পবিত্র কোরান শরীফের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাংলা অনুবাদকারী ভাই গিরিশচন্দ্র সেনের ১০৩ তম মৃত্যু বার্ষিকী। ১৮৩৪ সালে নরসিংদী সদর উপজেলার মেহেরপাড়া ইউনিয়নের পাঁচদোনা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারে ভাই গিরিশচন্দ্র সেন জন্ম গ্রহণ করেন এবং ১৯১০ সালের ১৫ আগস্ট ৭৬ বছর বয়সে তিঁনি ঢাকায় মারা যান।
গিরিশচন্দ্র সেন পরিচিতি শীর্ষক এক সংকলন থেকে জানা যায়, সুদীর্ঘ ৬ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে ১৮৮৬ সালে গিরিশচন্দ্র সেন পবিত্র কোরান শরীফ বাংলায় অনুবাদ ও তা প্রকাশ করেন। তৎকালীন আরবী শিক্ষক, মৌলভী ও মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজন গিরিশচন্দ্র সেনকে মাওলানা রূপে আখ্যায়িত করেন।
মাওলানা গিরিশচন্দ্র সেনের পিতা মাধব রায় সেন ছিলেন, নবাব আলীবর্দী খাঁর দেওয়ান দর্পনারায়ণ রায়ের বংশধর। গিরিশচন্দ্র সেন ৩ ভাই, ২ বোনের মধ্যে ছিলেন, সর্ব কনিষ্ঠ। তাঁর বয়স যখন ১০বছর তখন তাঁর পিতা মাধব রায় সেন মারা যান।
মাওলানা গিরিশচন্দ্র সেন আরবী, ফার্সি ও উর্দু ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। তিঁনি ইসলাম ধর্ম বিষয়ক ২২ টি গ্রন্থ অনুবাদ এবং ১৩ টি নববিধান বিষয়ক ধর্ম পুস্তক রচনা করেন। গিরিশ স্মৃতি সংসদের সদস্য এই প্রতিবেদককে জানান, দীর্ঘদিন আগে গিরিশ স্মৃতি সংসদটি রেজিস্ট্রি হলেও সরকারি ভাবে এ সংসদকে এ যাবৎ কোনো সাহায্য করা হয়নি। এই সংসদের নিজস্ব কোনো জমি নেই। সরকারি এ পর্যন্ত তার কোনো স্মৃতি ফলকও নির্মিত হয়নি। মহান এই ব্যাক্তিত্বের স্মরণে প্রতি বছরই নামে মাত্র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হলেও যারা তার স্মৃতিকে ধরে রাখায় সক্রিয় ছিলেন, তাদের কেউ আর এখন জীবিত নেই। উপরন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল তাঁর যাবতীয় স্মৃতিকে মুছে ফেলতে তৎপর।
পাঁচদোনা এলাকায় গিয়ে জানা যায়, গিরিশচন্দ্র সেনের বাড়ি-ঘর এবং অনেক জমি-জমা ছিল। কিন্তু আজ সেসবের কিছুই নেই। আছে শুধু অর্ধ শতাংশ বসতবাড়ি, ভিটার উপর দোতলা বাড়িটির রয়েছে ভাঙ্গা কিছু ইটের চিহ্ণ। অভিযোগ রয়েছে, ভাই গিরিশচন্দ্র সেনের বাড়ি-ঘর ও সম্পত্তি বলতে যা কিছু ছিল তার সবকিছুই প্রভাবশালী মহল ইতিমধ্যে অবৈধ ও বেআইনী ভাবে দখল করে নিয়েছে। এ বিষয়ে স্মৃতি সংসদের পক্ষ থেকে সম্প্রতি নরসিংদী জেলা প্রশাসক কাছে একটি অভিযোগও করেছেন। কিন্তু উদ্ধারের ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।
অভিজ্ঞ মহলের ধারণা, এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেই গিরিশচন্দ্র সেনের আত্মসাৎ করা সমস্ত স্থাবর সম্পত্তি উদ্ধার করা সম্ভব।--ডিনিউজ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়