Sunday, June 2

মিরসরাইয়ে ১৮ শিক্ষক এক বছর ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছে না

মিরসরাই (চট্টগ্রাম): চাকুরীর স্বাদ গ্রহন করলেও বেতন ভাতার স্বাদ গ্রহন করতে পারেননি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের রেজিষ্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের  ১৮ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। গত বছরের এপ্রিল মাসে চাকুরীতে যোগদানের পর থেকে তারা এখন পর্যন্ত বেতন ভাতা পাননি বলে জানা গেছে। ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এসব শিক্ষিক-শিক্ষিকারা। নিয়মিত দায়িত্ব পালন করে আসলেও চরম কষ্ট আর দুর্দশায় দিন কাটছে তাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ১৪টি রেজিঃ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৮জন সহকারি শিক্ষিকা নিয়োগের পর থেকে মাসের বেতন ভাতা পাচ্ছেন না। মাসিক বেতন ভাতা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত শিক্ষিক-শিক্ষিকারা হলেন, উপজেলার পাতাকোট রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মনিকা রানী দাস, সালমা আক্তার, বানাতলী ছোবাহানীয়া রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রাশেদা হক, দেওখালী রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সুরাইয়া খান সুমী, চুনিমিঝির টেক রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবিনা ইয়াসমিন, রাইহানা আক্তার, হাজী বদিউল আলম রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছন্দা দে, হাজী কামাল পাশা রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাইফুল ইসলাম, তাছলিমা আক্তার, ফয়েজ উল¬াহ মাষ্টার রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লিপি রানী নাথ, জাফরাবাদ রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রতœা রানী নাথ, শেখেরতালুক সুকুমারনাথ রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাহিদা সুলতানা, ভূঁইয়ারহাট রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিউলী নাজনীন, গাছবাড়ীয়া রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রহিমা আক্তার, মেহেদী নগর এরশাদ উল¬াহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সুলতানা রাজিয়া, মধ্য মিঠানালা আলম রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গোলশান আরা বেগম, পশ্চিম খৈয়াছড়া এন.আই. রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রোকশানা আক্তার। 
চুনিমিঝির টেক রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি ওই বিদ্যালয়ে নিয়োগ পান গত বছরের ২৯ এপ্রিল। চলতি মাসে তার নিয়োগের এক বছর পার হতে চললো। গাছবাড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রহিমা আক্তার গত বছরের ২ মে চাকুরীতে যোগদান করেন। ইতি মধ্যে তাঁর চাকরি একবছর পূর্ণ  হয়েছে। পশ্চিম খৈয়াছড়া এন.আই. রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রোকসানা আক্তার গত বছরের ২০মে যোগদান করার পর বর্তমানে একবছর অতিবাহিত হয়েছে। মেহেদীনগর এরশাদ উল¬াহ রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সুলতানা রাজিয়া হিসেবে গত বছরের ২৯ এপ্রিল যোগদান করার পরও অদ্যবদি কোনো বেতন-ভাতা পাননি। পাতাকোট রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সালমা আক্তার, বানাতলী ছোবাহানীয়া রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রাশেদা হক, দেওখালী রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সুরাইয়া খান সুমী, তিনজনই গত বছরের ২৮ এপ্রিল কর্মস্থলে যোগদান করেন। কিন্তু এসব শিক্ষিকারা আজোতক বেতন ভাতা পাননি। একই সময়ে নিয়োগকৃত পাশ্ববর্তী সীতাকুন্ড ও ছাগলনাইয়া উপজেলার বেসরকারি শিক্ষকরা বেতন-ভাতা ইতিমধ্যে পেয়েছেন বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মিরসরাই উপজেলা শাখার সভাপতি মঞ্জুর কাদের চৌধুরী বলেন, মাসিক বেতন উত্তোলন করে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মূলত সংসার চলত। কিন্তু একটানা ১২ মাস বেতন না পেয়ে শিক্ষকরা সংসারের খরচ মিটাতে পারছে না। অনেক শিক্ষক বাধ্য হয়ে টাকা ধার নিয়ে সংসার চালাচ্ছে।
বাংলাদেশ বেরসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি মিরসরাই উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক  নুরুন নবী জানান, নিয়োগের পর থেকে তাদের বেতনের জন্য প্রাথমিক শিক্ষামন্ত্রণালয়ে গিয়েছি। কয়েক দফা প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও পাঠিয়েছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। দীর্ঘদিন বেতন না পাওয়ায় উক্ত ১৮ জন শিক্ষক মানবেতর জীবন যাপন করছেন। 
এ প্রসঙ্গে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ জানান, জাতীয় একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এই সার্কুলার অনুযায়ী উক্ত ১৮ শিক্ষকদের উপজেলার ১৪ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শূন্য পদে নিয়োগ হয়। খুব শীঘ্রই বকেয়া বেতনসহ চলতি মাসের বেতন শিক্ষকরা পেয়ে যাবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।(ডিনিউজ)

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়