Monday, March 31

সেই সুদীপ্ত অস্ত্রসহ আটক, প্রতিবাদে ভাঙচুর

রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও অস্ত্রধারী ক্যাডার সুদীপ্ত সালাম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আখতারুল ইসলাম আসিফকে অস্ত্রসহ আটক করেছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
সোমবার বেলা ১২টার দিকে রাবি কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে তাদের আটক করা হয়। তাদের আটকের প্রতিবাদে প্রশাসন ভবন ও ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে নেতাকর্মীরা।

আটক সুদিপ্ত সালামকে গত ২ ফেব্রুয়ারি রাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি ছুড়তে দেখা গেছে। এর আগে তিনি অস্ত্র ও কলগার্লসহ বোয়ালিয়া পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।

সুদিপ্তর বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলাসহ ৬টি মামলা রয়েছে। একাধিক বার ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধর, অস্ত্রবাজি, হলের ডাইনিং ও ক্যান্টিনসহ ক্যাম্পাসের সব জায়গায় ফাও খাওয়ারর অভিযোগ রয়েছে।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, বেলা ১২টার দিকে ছাত্রলীগ ক্যাডার সালাম এবং আসিফ কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে দিয়ে প্রশাসন ভবনের দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় ক্যাম্পাসে টহলরত ডিবি পুলিশ তাদের বিদেশি পিস্তলসহ আটক করে।

ডিবি কর্মকর্তা সাইদুর রহমান ভূইয়া আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ২ ফেব্রুয়ারি সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সঙ্গে আটককৃতরা জড়িত ছিল। ওই দিনে দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

এদিকে, দলীয় নেতাদের আটকের প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মিছিল বের করে। মিছিলটি আকস্মিক ভাবে প্রশাসন ভবনের ভেতরে ঢুকে প্রক্টর ও জনসংযোগ দপ্তরে কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চলায়। এসময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা রাবির তিনটি বাসও ভাঙচুর করে।

পরে বেলা ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় সড়কের উভয় পার্শ্বে দুই কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। এরপর দুপুর পৌনে ২টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে তারা। দুপুর আড়াইটার দিকে প্রশাসন ভবনের তালা খুলে দেয়া হয়।

রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম তৌহিদ আল হোসেন তুহিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে আমাদের একটা আত্মসম্মান আছে। পুলিশ অন্যায়ভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝ থেকে আমাদের নেতাকর্মীদের পেটাতে পেটাতে নিয়ে গেছে। এটা আমাদের আত্মসম্মানের বিষয়। তাদের ছেড়ে দেয়া না হলে ক্যাম্পাসে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।’

প্রক্টর তারিকুল হাসান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে অন্যায়কারী যে দলেরই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

উল্লেখ্য, গত রোববার বিকেলে চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের আব্দুল মুয়িজ ও ইমরান নামের দুই শিক্ষার্থীকে হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে মাথা থেতলে দেয় আটক ছাত্রলীগ ক্যাডার সালাম ও আসিফ। এর আগের দিন শনিবার শাহ মখদুম হলে ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে মারধর ও পিস্তল দেখিয়ে হুমকি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া। তার আগের দিন শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হলে আরবি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে মেরে তার পা ভেঙে দেয় ছাত্রলীগের সদস্য আব্দুল্লাহ আল বাকি।

বাংলামেইল২৪ডটকম

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়