Tuesday, June 25

কুয়াকাটা মহাসড়কের তিনটি ফেরীর গ্যাংওয়ে পানির নিচে

কলাপাড়া (পটুয়াখালী): পূর্ণিমার প্রভাবে গত দু’দিন ধরে কুয়াকাটা সংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে। মঙ্গলবার উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি দু’দফা বৃদ্ধি পেয়ে জলোচ্ছাস নিয়ন্ত্রণ বাঁধে বাইরে প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্ধি হয়ে পরেছে শত শত পরিবারের প্রায় সহস্রাধিক মানুষ। অস্বাভাবিক জোয়ারের চাপে কলাপাড়া-কুয়াকাটা মহাসড়কের ফেরীর তিনটি গ্যাংওয়ে পানিতে তলিয়ে যায়। এর ফলে পর্যটকসহ স্থানীয় লোকজনদের চরম দূর্ভোগে পড়তে হয়েছে। এদিকে হঠাৎ করে সাগরবক্ষ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠায় গভীর সাগরে মাছ ধরারত অধিকাংশ ট্রলারগুলো তীরে আসতে শুরে করেছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, দফায় দফায় অস্বাভাবিক জোয়ারের চাপে গত দু’দিন ধরে লালুয়া ইউনিয়নের আট গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পরেছে নাওয়াপাড়া গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। ওইসব গ্রামের প্রায় তিন হাজার পরিবার তাদের বসতঘর সহ ফসলি জমি হারানের আশংকায় উদ্বিঘ্ন হয়ে পড়েছে। এদিকে, সাগরে ট্রলার ডুবির আশংকায় জেলেরা গভীর সাগর থেকে উপজেলার শিববাড়িয়া ও আন্দারমানিক নদীসহ বিভিন্ন পয়েন্টে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে। পূর্ণিমার প্রভাবে বিভিন্ন নদ-নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে কলাপাড়া-কুয়াকাটা মহাসড়কের নীলগঞ্জ, হাজিপুর ও মহিপুর ফেরি তিনটির গ্যাংওয়ে পানিতে তলিয়ে যায়। এর ফলে প্রায় চার ঘন্টা সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটার সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এছাড়া আন্ধারমানিক নদীর জোয়ারে কলাপাড়া-কুয়াকাটা বিকল্প সড়কের ফেরীর গ্যাংওয়ে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় পর্যটকসহ স্থানীয় লোকজনদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।
নাওয়াপাড়া গ্রামের সাবেক মেম্বার মজিবর রহমান বলেন, ‘মুন্সীপাড়া, বড় পাঁচনং, নাওয়াপাড়া, ছোট পাঁচনং, চেীধুরী পাড়া, নয়াকাট গ্রামের সহা¯্রাধীক বাড়ি জোয়ারের পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। এখানকার মানুষের দুর্ভোগের চিত্র মুখে উচ্চারণ করলে প্রকাশ হবে না। এরচেয়ে এখানকার গ্রামগুলো মানুষের বসবাস অনুপোযোগী ঘোষণা করা উচিৎ। অন্যথায় জরুরী ভিত্তিতে অসহায় মানুষের পুনর্বাসন কিংবা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া দরকার। 
একই চিত্র উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের কোমরপুর গ্রামের বিধ্বস্ত বেড়িবাধ সংলগ্ন নিজামপুরসহ তিন চারটি গ্রামের শত শত পরিবারের। বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ থেকে আন্ধারমানিক নদের উত্তাল ঢেউসহ জোয়ারের পানি ঢুকে পরছে গ্রামের ভিতর। 
মহিপুর মৎস্য আড়ৎ সমবয় সমিতির সাবেক সভাপতি মো.ফজলু গাজী জানান, বর্তমানে সাগরে জেলেদের জালে মাছ ধরা পরতে শুরু করেছে।  হঠাৎ করে সাগর বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠায় ইতোমধ্যেই ওইসব ট্রলারগুলো তীরে এসেছে। তবে সাগর ঠান্ডা হলে জেলেরা মাছ ধরতে রওনা করবে বলে তিনি জানান।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগর তথা পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষা উপকূলে সৃষ্ট লঘুপের প্রভাবে সমুদ্র ও নদ-নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের সৃষ্টি হয়েছে। তার সাথে যোগ হয়েছে পূর্ণিমা জো। উপকূলীয় নদ-নদীর অস্বাভাবেক জোয়ারের প্রভাব আরো দুই তিন দিন থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে তিন নম্বর স্থানীয় হুশিয়ারি সংকেত দেখে যেতে বলা হয়েছে। (ডিনিউজ)

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়