Sunday, March 24

দীর্ঘদিন পর মানুষ আবারো আগ্রহী হচ্ছে সঞ্চয়পত্রে

দীর্ঘদিন পর আবারো সাধারণ মানষ সঞ্চয়পত্রে আগ্রহী হচ্ছে। তবে এখনো তা আশানুরূপ পর্যায়ে পৌঁছেনি বলেই সংশ্লিষ্টদের অভিমত। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে সঞ্চয়পত্র নিট বিক্রি হয়েছে ৩৬৩ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে সঞ্চয়পত্রের বিক্রির পরিমাণ ছিল ১১৪ কোটি টাকা। এ হিসাবে একই সময়ের তুলনায় সঞ্চয়পত্রের বিক্রি বেড়েছে ২৪৯ কোটি টাকা। তবে সঞ্চয়পত্রকে মানুষের কাছে আরো আকর্ষণীয় করতে ইতিমধ্যে সুদ হার বাড়ানোসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ফলে আগামী দিনগুলোতে সঞ্চয়পত্রের বিক্রির পরিমাণ আরো বাড়বে বলেই সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ বাড়াতে উৎসে কর প্রত্যাহারের বিষয়টি সক্রিয়ভাবে সরকারের বিবেচনাধীন। কারণ চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ হয়েছে মাত্র ৩৬৩ কেটি টাকা। অথচ এবছর সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৪শ' কোটি টাকা। সে হিসাবে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে মাত্র ৪ দশমিক ৯১ শতাংশ। এ প্রেক্ষিতে আগামী অর্থবছর থেকে সঞ্চয়পত্রে সব ধরনের উৎসে কর প্রত্যাহার এবং সুদ হার বাড়ানোর পাশাপাশি বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমাও প্রত্যাহারের বিষয়টি বিবেচনা করছে সরকার। মূলত দেশের মধ্যবিত্তের জীবনযাপনে কিছুটা স্বস্তি আনতেই সরকার এ উদ্যোগ নিচ্ছে। কারণ মধ্যবিত্ত জীবনে সঞ্চয়পত্রই হচ্ছে একমাত্র বিনিয়োগ ভরসাস্থল। কিন্তু সঞ্চয়পত্রে উৎসে কর আরোপ করায় অনেকেই এ খাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। শুধু তাই নয়, সঞ্চয়পত্রের কোনো কেনো স্কিমের মুনাফার হার ব্যাংকের চেয়েও কম।



সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে মোট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ১৩ হাজার ৮৮২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এসময়ে আসল এ খাতে আসল পরিশোধ করতে হয়েছে ১৩ হাজার ৫১৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এতে করে এসময়ে নিট বিক্রি দাঁড়িয়েছে ৩৬৩ কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে সঞ্চয়পত্রের মোট বিক্রি ছিল ৯ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা। ওই সময়ে আসল পরিশোধ করা হয়েছিল ৯ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা। তাতে ওই সময়ে নিট বিক্রি দাঁড়িয়েছিল ১১৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এ পরিস্থিতিতে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি আরো বাড়াতে সুদহার ও বিনিয়োগ সীমা বাড়ানোসহ নতুন করে কিছু সুবিধা প্রদানের সুপারিশ করেছে সরকারের অর্থ বিভাগের ক্যাশ ও ডেট ম্যানেজমেন্ট কমিটি। গত ফেব্র�য়ারি মাসেই ওই কমিটি এক বিশেষ সভায় সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদ হার ১ থেকে দেড় শতাংশ বাড়ানো এবং সঞ্চয়পত্র জামানত রেখে ব্যাংক ঋণ নেয়ার বিধান চালু করার সুপারিশ করা হয়। তাতে পারিবারিক সঞ্চয়পত্র ভাঙানোর সময়সীমা ১ বছর থেকে কমিয়ে ৬ মাস করারও সুপারিশ করা হয়েছে। তাছাড়া সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগসীমা ৪৫ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৫০ লাখ টাকায় উন্নীত, পেনশনার সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের কোনো ঊর্ধ্বসীমা না রাখা, ৫ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রে একক নামে ৬০ লাখ ও যৌথ নামে ১ কোটি টাকা করা। একই সাথে ৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে কোনো ঊর্ধ্বসীমা না রাখারও সুপারিশ করা হয়েছে। তবে অর্থমন্ত্রীর অনুমোদনের পর খুব শিগগিরই সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে এসব সুপারিশ কার্যকর হলে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি আরো বাড়বে বলেই সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী।



সূত্র আরো জানায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে ব্যাংকের মাধ্যমে সঞ্চয়পত্র বিক্রির চেয়ে বেশি আসল পরিশোধ করতে হয়েছে। ব্যাংকের মাধ্যমে মোট ৪ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা বিক্রির বিপরীতে আসল পরিশোধ করতে হয়েছে ৫ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা। এতে ব্যাংক খাতে নিট ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫৭৫ কোটি টাকা। এসময়ে সঞ্চয় ব্যুরোর মাধ্যমে বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ২০৪ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র। এতে আসল পরিশোধ করতে হয়েছে ২ হাজার ১১৪ কোটি টাকা। আর এতে নিট বিক্রি বেড়েছে ৯১ কোটি টাকা। তাছাড়া ডাকঘরের মাধ্যমে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৭ হাজার ৬৪ কোটি টাকা এবং আসল পরিশোধ করতে হয়েছে ৬ হাজার ২১৭ কোটি টাকা। এতে তাদের নিট বিক্রি বেশি হয়েছে ৮৪৭ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি বেড়েছে ৩৬৩ কোটি টাকা।(ফেয়ার নিউজ)




শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়