বৃহস্পতিবার বিকেলে বঙ্গবভনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছয় নেতা ও সরকারের শরিক দল জাসদের একজন রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে মন্ত্রিসভার সদস্য হিসাবে শপথ নিয়েছেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মহীউদ্দীন খান আলমগীর, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সংসদের হুইপের দায়িত্বে থাকা মুজিবুল হক এবং দুটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করা এ এইচ মাহমুদ আলী ও মোস্তফা ফারুখ মোহাম্মদ মন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছেন। এছাড়া রাজশাহীর সাংসদ ফারুক চৌধুরী এবং ঝিনাইদহের সাংসদ আব্দুল হাই প্রতিমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন। তবে তোফায়েল আহমেদ ও রাশেদ খান মেনন মন্ত্রী সভায়যোগ দেননি। বঙ্গভবনে এই শপথ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।শপথ অনুষ্ঠান শেষে হাসানুল হক ইনু তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে মন্ত্রিসভায় যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি সফল হব। মন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়ায় মুজিবুল হক রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ সংশি�ষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং নিজের নির্বাচনী এলাকা কুমিল�ার ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।সরকারের মেয়াদ আর এক বছর বাকি থাকতে গত বুধবার রাতে সরকারের পক্ষ থেকে মন্ত্রিসভায় যোগ দেয়ার জন্য তোফায়েল আহমেদ, মহীউদ্দীন খান আলমগীর, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু ও মুজিবুল হককে আমন্ত্রণ জানানো হয়। প্রতিমন্ত্রী হওয়ার আমন্ত্রণ পান ওমর ফারুক চৌধুরী ও আব্দুল হাই। সে অনুযায়ী বঙ্গভবনে শপথ অনুষ্ঠানেরও প্রস্তুতি নেয়া হয়।এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ তার বনানীর বাসায় এক সংবাদ সম্মেলন করে মন্ত্রিসভায় যোগ না দেয়ার ব্যাপারে নিজের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানান। তিনি বলেন, আমি মানসিক, সামাজিক, রাজনৈতিকভাবে এখন মন্ত্রিসভার দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত নই।অপরদিকে সকালে মন্ত্রী পরিষদে যোগদানের বিষয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির এক বৈঠকের পর পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের মন্ত্রী হিসেবে শপথ না নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তারা �না� বলার পর দিনাজপুরের সাংসদ এ এইচ মাহমুদ আলী ও যশোরের মোস্তফা ফারুখ মোহাম্মদকে মন্ত্রী হিসাবে শপথ নিতে আমন্ত্রণ জানানো হয় বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা। তিনি জানান, শপথ হয়ে গেলেও প্রধানমন্ত্রী পরে নতুন মন্ত্রিদের দপ্তর বণ্টন করবেন।নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়ের পর ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে বর্তমান সরকার গঠন করেন আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা। এরপর এ নিয়ে চতুর্থ দফা তার মন্ত্রিসভায় রদবদল হলো।এই শপথ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।শপথ নেয়ার পর মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যরা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সামনে এসে তাদের সালাম জানান। নতুন করে মন্ত্রী হওয়া মহীউদ্দীন খান আলমগীর গত সরকারে টেকনোক্র্যাট হিসেবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সামলেছেন। এই সংসদ সদস্য বর্তমানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। সাবেক সচিব আলমগীর জরুরি অবস্থার সময় কারাভোগ করেছিলেন।আরেক নতুন মন্ত্রী কুমিল�ার চৌদ্দগ্রামের সংসদ সদস্য মুজিবুল হক সংসদে হুইপের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।মহাজোট সরকারের বর্তমান মন্ত্রিসভায় আগেই স্থান পেয়েছিলেন শরিক দলগুলোর দুই নেতা জাতীয় পার্টির জি এম কাদের ও সাম্যবাদী দলের দীলিপ বড়�য়া। এবার তাদের সঙ্গে যোগ দিলেন জাসদ সভাপতি ইনু, যিনি টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।তোফায়েল-মেননের বদলে মন্ত্রিসভায় আসা এ এইচ মাহমুদ আলী ও মোস্তফা ফারুখ মোহাম্মদ দুজনেই সাবেক কূটনীতিক। দিনাজপুর-৪ আসনের সাংসদ এ এইচ মাহমুদ আলী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন। আর যশোর-২ আসনের সাংসদ মোস্তফা ফারুখ মোহাম্মদ আছেন যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসাবে। তারা দুজনেই ১৯৬০ এর দশকে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন এবং ২০০৮ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রথমবারের মতো সংসদে আসেন।প্রতিমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেয়া ওমর ফারুক রাজশাহী এবং আব্দুল হাই ঝিনাইদহ থেকে আওয়ামী লীগের টিকিটে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। বর্তমান সরকারে অপর মন্ত্রীরা হলেন- মতিয়া চৌধুরী, আবুল মাল আবদুল মুহিত, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, এ কে খন্দকার, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, শফিক আহমেদ, রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু, সাহারা খাতুন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, ওবায়দুল কাদের, খোন্দকার মোশাররফ হোসেন, রেজাউল করিম হীরা, আবুল কালাম আজাদ, আ ফ ম রুহুল হক, দীপু মনি, আফসারুল আমীন, আব্দুর রাজ্জাক, এনামুল হক মোস্তফা শহীদ, নূরুল ইসলাম নাহিদ, আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, শাজাহান খান, জি এম কাদের, হাছান মাহমুদ ও দিলীপ বড়�য়া।প্রতিমন্ত্রীরা হলেন- শামসুল হক টুকু, আব্দুল মান্নান খান, মো. মোতাহার হোসেন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মো. কামরুল ইসলাম, মোহাম্মদ এনামুল হক, ডা. মজিবর রহমান ফকির, প্রমোদ মানকিন, মো. শাহজাহান মিয়া, মাহবুবুর রহমান, মুস্তাফিজার রহমান ফিজার, দীপঙ্কর তালুকদার, এ বি তাজুল ইসলাম, মুন্নুজান সুফিয়ান, আহাদ আলী সরকার, শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ইয়াফেস ওসমান। রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত পদত্যাগ করলেও তাকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হিসেবে রাখা হয়েছে। ফেয়ার নিউজ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়