সুলতানার লাশ ৬ দিন পর কবর থেকে উত্তোলন
কানাইঘাট পৌরসভার বিষ্ণুপুর গ্রামে গত ২২ সেপ্টেম্বর রহস্যজনকভাবে মারা যাওয়া সুলতানার লাশ ৬দিন পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে গতকাল বিষ্ণুপুর গ্রামের গোরস্থান থেকে বিকেল ৪টায় সুলতানার লাশ উত্তোলন করা হয়। এসময় বিপুল নর-নারী লাশ দেখতে ভীড় জমান সেখানে। গত ২২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার কানাইঘাট পৌরসভাস্থ বিষ্ণুপুর গ্রামের আমেনা বেগম কন্টুরীর মেয়ে সুলতানা বেগম (১৮) স্বামীর অধিকার এবং গর্ভজাত সন্তানের পিতৃস্বীকৃতি না পেয়ে রহস্য জনকভাবে মারা যায়। পরবর্তীতে সুলতানার মৃত্যুর সংবাদটি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় অনুসন্ধানি সংবাদ প্রকাশিত হলে কানাইঘাট থানা-পুলিশ সরেজমিনে ২৫শে সেপ্টেম্বর আত্মহননকারী সুলতানার মা আমেনা বেগম কন্টুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তার মেয়ে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করে। এ ঘটনায় আমিনা বেগম নিজে বাদী হয়ে গত ২৫ সেম্পেম্বর একই গ্রামের ফরিদ আহমদের ছেলে রুবেল আহমদ (১৮) কে বিবাদী করে কানাইঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- (২৮) ২৫/০৯/১১ইং। এজাহারে আমিনা বেগম কন্টুরী অভিযোগ করেন যে, পার্শ্ববর্তী বাড়ির রুবেল আহমদ তার মেয়ে সুলতানা বেগমের সাথে প্রেম নিবেদন করে আসছিল। একপর্যায়ে সে বিয়ের পূর্বেই সুলাতানাকে ফুঁসলিয়ে তার সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলে। এতে সে অন্তঃস্বত্তা হয়ে পড়লে বিষয়টি সকলের দৃষ্টিগোচর হয়। এব্যাপারে মেয়ে সুলতানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে প্রতিবেশী রুবেলকেই দায়ী করে। পরবর্তীতে বিষয়টি স্থানীয় মুরব্বিয়ানদের অবহিত করে সুলতানার মা বিচারপ্রার্থী হলে মুরব্বিয়ানগণ বিষয়টি নিয়ে কয়েকদফা সালিশ বৈঠকে বসেন। কিন্তু কোন নিষ্পত্তি হয়নি। এরই মধ্যে সুলতানার সন্তান প্র সবের সময় ঘনিয়ে আসলে তাকে সিলেট ওমেক হাসপাতালে ভর্তী করা হয়। সেখানে তার একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। পরে নিজ বাড়িতে ফিরে এসে সুলতানা রুবেলের কাছে স্বামীর অধিকার এবং সন্তানের পিতৃস্বীকৃতি দাবী করলে রুবেল ও তার আত্মীয় স্বজন তা অগ্রাহ্য করে। এসব অপমানের গ্লানি সহ্য করতে না পেরে তার মেয়ে আত্মহত্যার পথ বেঁচে নিয়েছে। অভিযোগের প্রেেিত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই.শফিকুল ইসলাম খান অভিযুক্ত রুবেলকে ঐদিন গ্রেফতার করেন। সুলতানার মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের জন্য কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেটের বিজ্ঞ চিফ্ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালতে আবেদন জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের প্রেেিত বিজ্ঞ আদালত সিলেটের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামিম রহমানের উপস্থিতিতে কবর থেকে সুলতানার লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থায় গ্রহনের নির্দেশ দেন। এরই প্রেেিত গতকাল বুধবার বিষ্ণুপুর গ্রামের গুরুস্তানে দাফনকৃত সুলতানার লাশ ম্যাজিস্ট্রেট শামিম রহমানের উপস্থিতিতে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়। এসময় কানাইঘাট থানার ওসি (তদন্ত) রুহুল আমিন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই.শফিকুল ইসলাম খানসহ থানার অন্যান্য পুলিশ অফিসার উপস্থিত ছিলেন। লাশ উত্তোলনের সময় আশপাশের উৎসুক জনতা ঘটনাস্থলে ভীড় জমান।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়