Wednesday, July 7

অবিরাম বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে কানাইঘাট জুড়ে ভয়াবহ বন্যা


স্টাফ রিপোর্ট:


উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও গত কয়েক দিন থেকে অবিরাম ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সুরমা-লোভা-আমরীসহ অন্যান্য ছোট বড় নদ-নদীর পানি অব্যাহত ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় কানাইঘাট উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে শত শত একর আউশ ফসলী জমি ও বীজতলা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি সাধিত হচ্ছে।বিভিন্ন স্থানে সুরমা ডাইকের উপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবলবেগে প্রবাহিত হওয়ায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।কানাইঘাট গৌরীপুর এবং কানাইঘাট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, ছোটদেশ উচ্চ বিদ্যালয় সম্মুখে সুরমা নদীর বেড়িবাঁধ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।গতকাল কানাইঘাট সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ১৩৬ সে:মি:’ র উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।কানাইঘাট বাজারের নিচু স্থান ও গলিপথে পানি ঢুকে পড়ায় ব্যবসায়ীরা তাদের মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন।কানাইঘাট-চতুল রাস্তার বিষ্ণুপুর বেলিব্রীজ এবং হকারাই নামক স্থানের নিচু রাস্তার উপর উপর দিয়ে বন্যার পানি প্লাবিত হচ্ছে।কানাইঘাট সদর ইউনিয়নের নদী ভাঙ্গন কবলিত গোসাইনপুরে নবনির্মিত পাঁকা কার্লভাটের একাংশ ধেবে গেছে, গ্রামের উপর দিয়ে সুরমার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে।সরকারী হিসাবমতে ১২শ হেক্টর আউশ ধানের ফসলী জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।নিম্নাঞ্চলের শতাধিক কাঁচা-পাঁকা রাস্তা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।সরকারীভাবে বন্যা দুর্গতদের জন্য এখনো পর্যন্ত কোন ত্রাণসামগ্রী বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে সাতবাঁক ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ পলাশ জানিয়েছেন, জকিগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে চাতল হাওর পানিতে তলিয়ে গেছে এবং জুলাই খাল দিয়ে পানি ঢুকে পড়ায় বেশ কয়েকটি গ্রামের রাস্তা ঘাট ডুবে গেছে। সদর ইউপি চেয়ারম্যান মামুন রশিদ মামুন জানিয়েছেন, ইউনিয়নের গোসাইনপুর গ্রামের একটি কার্লভাট ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে ইউনিয়নের ব্যাপক ফসলী জমির ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বাণীগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ আহমদ জানান, সুরমা ডাইকের বড়দেশ সরদারীপাড়াসহ বেশ কয়েকটি স্থানে ফাটল দেখা দেওয়ায় সুরমা নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো হুমকিরসম্মুখীন হয়ে পড়েছে।জিংগাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান সইফ উল্লাহ জানান,ইতিমধ্যেইউনিয়নেরবাশবাড়ি,ফাগূ,কাপতানপুর,জিংগারখাল,আমরপুর,নয়ামাটি,গর্দনাকান্দি,গনিকান্দি প্রভৃতি গ্রামের বিপুল সংখ্যক লোকজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।গোয়ালজুর কমিউনিটি হাসপাতাল সড়ক সহ অধিকাংশ কাচা সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জনসাধারনের যাতায়াতে দুর্ভোগ ও ভোগান্তি হচেছ। বড়চতুল ইউপি চেয়ারম্যান হামিদুল হক বলেছেন, তার ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে, শত শত ফসলী জমি নষ্ট হয়ে পড়েছে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মতিউল ইসলাম চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সার্বক্ষণিক বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিং করা হচ্ছে। বন্যায় ক্ষয়-ক্ষতি সাধনের বিষয়টি জেলা প্রশাসক বরাবরে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।এছাড়া উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামে পানি ঢুকে পড়ায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।


শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়