Tuesday, May 30

কানাইঘাটে সিলেটে কিশোরী মাকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৫


নিজস্ব প্রতিবেদক :

২০ দিন আগে হাসপাতালে পরিচয়। এরপর মোবাইল ফোনে কথাবার্তা। ৯ মাসের কন্যা শিশুর অসুস্থতার কথা জানালে ভালো কবিরাজের সন্ধান দেয়। বাড়িতে এসে চিকিৎসার জন্য শিশুসহ কিশোরী মাকে নিয়ে যায়। রাতে কৌশলে পুকুরঘাটে নিয়ে জোরপূর্বক দলবদ্ধ ধর্ষণ করে। গত রোববার রাত সোয়া ১১টায় সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার বীরদল পুরানফৌদ গ্রামের পিপি হবিব আলীর পুকুরঘাটে এ ঘটনা ঘটে।

শিশু সন্তানের সামনে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ১৬ বছরের ওই কিশোরী মা বাদী হয়ে সোমবার থানায় মামলা দায়ের করেন। দিনভর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কানাইঘাট থানার ওসি মো. গোলাম দস্তগীর আহমেদ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- উপজেলার নন্দিরাই গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে দুদু মিয়া (৩৬), বীরদল ভাড়ারীফৌদ গ্রামের মৃত মঈন উদ্দিনের ছেলে হেলাল আহমদ (৩৮), বড়দেশ সরদারী পাড়া গ্রামের বিলাল আহমদের ছেলে ফরহাদ (৩৫), বীরদল আগফৌদ গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে আব্দুল করিম ও বীরদল ছোটফৌদ গ্রামের হবিব আলীর ছেলে জুবের আহমদ (২৪)। 

ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে পুলিশ হেফাজতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ওসি। মো. গোলাম দস্তগীর আহমেদ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আসামিরা জানায়- ‘দলবদ্ধ ধর্ষণের সঙ্গে সরাসরি জড়িত হেলাল আহমদ ও ফরহাদ আহমদ। গ্রেপ্তারকৃত অন্য আসামিরা ধর্ষণে সহায়তা ও ধর্ষিতাকে ফুসলিয়ে অপহরণের সঙ্গে জড়িত।’

এজাহারে ঘটনার বর্ণনায় বলা হয়েছে—ভিকটিমের বাড়ি কানাইঘাট উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নে। বর্তমানে শ্বশুরবাড়ি বিয়ানীবাজার উপজেলায় বসবাস করেন। ২০ দিন পূর্বে গ্রেপ্তারকৃত আসামি দুদু মিয়ার সাথে কানাইঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভিকটিমের পরিচয় হয়। সেই সুবাদে দুদু মিয়ার সাথে ওই নারীর প্রায়ই ফোনে কথাবার্তা হতো। ভিকটিমের ৯ মাসের শিশু কন্যা অসুস্থ হলে দুদু মিয়া তাকে পার্শ্ববর্তী জকিগঞ্জ উপজেলার ফুটিজুরি গ্রামের এক কবিরাজের কাছে নিয়া যেতে বলে। পরবর্তীতে মেয়ের চিকিৎসার নাম করে রোববার বিকেল ৩টার দিকে বিয়ানীবাজারে গিয়ে দুদু মিয়া ওই নারীকে শিশু সন্তানসহ তার বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। কিন্তু কবিরাজের কাছে না নিয়ে কৌশলে ফুসলিয়ে দুদু মিয়া কানাইঘাটের বীরদল বাজার এলাকায় ওই নারীকে নিয়ে ঘুরতে থাকে। রাত সাড়ে ১০ টার দিকে বীরদল বাজারে থাকা লোকজনের সন্দেহ হয়। এতে দুদু মিয়ার ফোনে তার সহযোগী আব্দুল করিম বীরদল বাজারে চলে আসে এবং তারা ওই নারীকে কৌশলে মোটরসাইকেল যোগে বীরদল খালোমুরা বাজারে নিয়ে যায়। এতে স্থানীয় কিছু লোকজনের সন্দেহ হলে তাদের আটক করেন। পরে রাত ১১টার দিকে স্থানীয় লোকজন কানাইঘাট বাজারে নিরাপদে নিয়ে যাওয়ার জন্য জুবের আহমদের রিকশায় তুলে দেওয়া হয়। এ সময় ভিকটিমের পিছু নেয় দুদু মিয়া ও আব্দুল করিম। এক পর্যায় পুরানফৌদ কবরস্থানের সামনে ভিকটিমের রিকশা আসা মাত্রই হেলাল আহমদ ও ফরহাদ আহমদ রিকশার গতিরোধ করে এবং তাকে পুরানফৌদ গ্রামের হাবিব আলীর নির্জন পুকুরঘাটে নিয়ে যায়। সেখানে হেলাল ও ফরহাদ ওই নারীকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এতে ভিকটিমের প্রচুর রক্তপাত হয়। তখন গণধর্ষণের সাথে জড়িতরা পালিয়ে গেলে ধর্ষিতার আর্তচিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ধর্ষিতাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।


শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়