ইসরায়েলে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনের বুথ ফেরত জরিপ প্রকাশ পেয়েছে। সেখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেলেও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু খানিকটা পিছিয়ে আছেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার ইহুদি দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে সেখানে
ভোট গণণা চলছে। গত পাঁচ মাসের মধ্যে দেশটিতে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত
নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো যা দেশটির ইতিহাসে প্রথম। এর আগে চলতি বছরের ৯
এপ্রিল অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কোনো পক্ষ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ কিংবা
জোট সরকার গঠনে ব্যর্থ হওয়ায় নতুন নির্বাচনের আয়োজন করতে হয়।
এ নির্বাচনকে ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা নেতানিয়াহুর জন্য একটি কঠিন পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এবারের নির্বাচনের জয়লাভের মাধ্যমে টানা পঞ্চমবারের মতো ইসরায়েলের
প্রধানমন্ত্রী হতে চান নেতানিয়াহু। তবে ভোটের মাঠে তাকে প্রতিদ্বন্দ্বী
প্রার্থী বেনি গান্টজ-এর শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। সাবেক সেনাপ্রধান
গান্টজ দেশটির মধ্য ডানপন্থী ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টি’র নেতৃত্ব
দিচ্ছেন।
প্রথম দফার বুথফেরত জরিপে দেখা গেছে, নেতানিয়াহু ও তার ডানপন্থী জোট
সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ৬১টি আসন নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। জরিপে
বেনি গান্টজে’র খুব সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে থাকার আভাস মিলেছে।
চ্যানেল ১২-এর জরিপে বলা হয়েছে, বেনি গ্যান্টজের নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট
৩৪টি আসনে বিজয়ী হতে পারে। বিপরীতে নেতানিয়াহুর দল লিকুদ পার্টির
নেতৃত্বাধীন জোট পেতে পারে ৩৩টি আসন। জয়েন্ট লিস্ট অ্যালায়েন্স অব আরব পেতে
পারে ১১টি আসন। সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাভিগডো লিবারম্যানের দল কট্টর
ইহুদিবাদী ‘ইসরায়েল বেইতেনু’ পেতে পারে ৮টি আসন। সেক্ষেত্রে পরবর্তী জোট
সরকার গঠনে তার জোরালো প্রভাব থাকবে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
বুধবার সকালে উচ্ছ্বসিত সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন বেনি গ্যান্টজ। এ
সময় তিনি বলেন, আনুষ্ঠানিক ফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তবে জয়ের ব্যাপারে
তার যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস রয়েছে।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার সমর্থকদের জানিয়েছেন, এরইমধ্যে জোট সরকার গঠনের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে তিনটি দুর্নীতির মামলা রয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক
মায়ের কোহেন বলেন, নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে বহু প্রশ্ন রয়েছে।
নির্বাচনে হেরে গেলে তার ভবিষ্যৎ আরো অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
নির্বাচনের মাঠে দুর্নীতির অভিযোগ আড়াল করে আক্রমণাত্মক বক্তব্য-বিবৃতি
দিয়ে সরব থেকেছেন নেতানিয়াহু। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ক্ষমতায় ফিরলে
ফিলিস্তিনের কাছ থেকে জর্ডান উপত্যকা ও ডেড সি দখল করে নেওয়া হবে।
ট্রাম্পের সঙ্গে করমর্দনের ছবি দিয়ে ব্যানার-ফেস্টুন বানিয়ে ভোটারদের
বার্তা দিতে চাইছেন যুক্তরাষ্ট্রের মতো শক্তিধর দেশের সমর্থন নিয়ে আগামী
দিনে ফিলিস্তিনকে আরো কোণঠাসা করে তুলবেন তিনি। নতুন ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড
দখলের মাধ্যমে আরো বাড়ানো হবে ইসরায়েলের মানচিত্র।
এবারের নির্বাচনে মোট ১২০টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে মোট ৩১টি দল। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ১১ হাজার ১৬৩।
সূত্র: সিএনএন
খবর বিভাগঃ
দেশের বাইরে
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়