রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় যারা আহত হয়েছিলেন তাদের মধ্যে বর্তমান তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ অন্যতম। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থেকে নির্বাচিত এই এমপির শরীরে এখনো চল্লিশটি স্প্রিন্টার বয়ে বেড়াচ্ছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
তিনি জানান, গ্রেনেড হামলার মুহূর্তে তিনি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য অস্থায়ীভাবে ট্রাকের উপর তৈরিকৃত মঞ্চের
পাশেই ছিলেন। ঘাতকদের গ্রেনেড হামলা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনিসহ সিনিয়র
আওয়ামীলীগ নেতারা মানব দেয়াল রচনা করে শেখ হাসিনাকে রক্ষার চেষ্টা করেন।
ফলে তার শরীরে অনেকগুলো স্প্রিন্টার বিঁধে যায়।
গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি প্রথমে ঢাকার
সিকদার মেডিকেলে ভর্তি হন। সেখানে ৮ দিন থাকার পর ২৯শে আগস্ট উন্নত
চিকিৎসার জন্য বেলজিয়ামে যান। সেখানে কয়েকটি স্প্রিন্টার বের করতে পারলেও
এখনো ৪০টি স্প্রিন্টার শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছেন হাছান মাহমুদ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এতগুলো স্প্রিন্টার শরীরে
বয়ে বেড়াচ্ছি তারপরও ভাল লাগে যে সেদিন নেত্রীর পাশে দাঁড়াতে
পেরেছিলাম। ঘাতকদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিতে পেরেছিলাম। আওয়ামী লীগের
নেতাকর্মী কোনোদিন অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে না। বিপদের দিনে ভয়ে
পিছিয়ে যায় না। সেটারই প্রমাণ আমার শরীরে বিঁধে থাকা চল্লিশটি
স্প্রিন্টার।
শরীরে থাকা স্প্রিন্টারগুলো বের করতে গেলে
তার নার্ভ কেটে বের করতে হবে। ফলে তার মৃত্যুও হতে পারে। তাই তিনি
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বাকি স্প্রিন্টার গুলো বের করেননি বলে জানান।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, নারকীয় সে দিনটির পর ১৫
বছর পার হয়ে গেছে। কিন্তু এখনো তিনটির কোনো মুহূর্ত স্মরণ থেকে বিস্তৃত
হয়নি। আমরা শোককে শক্তিতে পরিণত করে রাজনীতি করে গেছি। সাফল্যও এসেছে।
যারা রাজনীতির বদলে ষড়যন্ত্র করেছেন, যারা হত্যার রাজনীতি করেছে তারা কেউ
আমাদের থামাতে পারেনি। বরং নিজেরা থেমে গেছেন।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দিনের
কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় কোনোভাবে একটি বাসে
উঠেছিলাম। দুজন মানুষ আমাকে সহায়তা করেছিলেন। যখন আমি হাসপাতালের পথে তখন
অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মনে হচ্ছিল আমার সমস্ত শক্তি নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। যদি
আর এক ঘণ্টা দেরি হতো তাহলে সেদিন অন্যকিছু হয়ে যেতে পারতো। আমাদের সবার
উচিত ঐক্যবদ্ধভাবে সেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া।
তিনি জানান, ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা
মামলার ৪৯১ জন সাক্ষীর মধ্যে তিনি অন্যতম রাজ সাক্ষী। দ্রুত বিচার
ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে সাক্ষ্য প্রদানও করেছেন হাছান মাহমুদ।
তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার
একান্ত সহকারী ড. হাছান মাহমুদ ছাত্রজীবনে চট্টগ্রাম মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের
নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের
সভাপতি নির্বাচিত হন।
দেশে পড়াশোনা শেষ করে বেলজিয়ামে ডক্টরেট
ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। সে সময় আওয়ামী লীগ নেতা আহসান উল্লাহ মাস্টার
হত্যাকাণ্ড নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে তিনি নিন্দা প্রস্তাব উত্তাপন করেন।
তৎকালীন জোট সরকারের বিভিন্ন দমন পীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায়
বহির্বিশ্বে তিনি কূটনৈতিক তৎপরতা চালান।
সূত্র:
ডেইলি বাংলাদেশ
খবর বিভাগঃ
সারাদেশ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়