ফিচার ডেস্ক:
বর্তমান প্রযুক্তির এই যুগেও তার কদর একেবারেই কমেনি। বরং যত দিন যাচ্ছে তত যেন এর গ্রহণযোগ্যতা বেড়েই চলেছে। কার কথা বলছি নিশ্চয় বুঝতে পারছেন না? তাহলে জানিয়ে রাখি বন্ধু যে প্রকৃতিক উপদানটির সম্পর্কে এত গুণ গান গাওয়া হচ্ছে সেটি আর কেউ নয়, নিম তেল।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, চুল ও ত্বকের
স্বাস্থ্যের উন্নতিতে নিম তেলের কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। শুধু তাই
নয়, সংক্রমণ কমানোর পাশাপাশি ত্বকের নানা রোগের প্রকোপ কমাতেও এটি দারুন
কাজে দেয়। প্রসঙ্গত, নিয়মিত ত্বক এবং চুলের পরিচর্যায় যদি নিম তেলকে কাজে
লাগানো হয়, তাহলে সাধারণত যে যে উপকারগুলো মিলবে সেগুলো হলো-
১. ত্বক ফর্সা হয়: অল্প
সময়ে ফর্সা ত্বকের অধিকারী হয়ে উঠতে চান নাকি? তাহলে ত্বকের পরিচর্যায় নিম
তেলকে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন! কারণ এমনটা করলে ত্বকের অন্দরে
কোলাজেনের উৎপাদন বেড়ে যেতে শুরু করে, যার প্রভাবে স্কিন টোনের উন্নতি
ঘটতে সময় লাগে না।
২. ত্বকের আর্দ্রতা ফেরে:
শুষ্ক ত্বক যাদের, তারা নিয়মিত এই তেল লাগালে সমস্যা অনেকটাই কমে যায়।
প্রতিদিন নারকেল তেল বা অলিভ অয়েলের সঙ্গে নিম তেল মিশিয়ে ভালো করে সারা
শরীরে মাসাজ করলেই দেখবেন ত্বক সুন্দর হতে শুরু করেছে।
৩. ব্রণের প্রকোপ কমে: নিম
তেলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রপাটিজ থাকায় এটি যদি মুখে লাগানো যায়, তাহলে
ব্রণ সমস্যা কমতে শুরু করে। এজন্য কয়েক ফোঁটা নিম তেলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা
ল্যাভেন্ডার তেল মিশিয়ে ব্রণর উপর লাগান। প্রসঙ্গত, কখনোই নিম তেল যেন
সরাসরি মুখে লাগাবেন না।
৪. বলিরেখা কমায়: সময়ের
সঙ্গে সঙ্গে শরীরের বয়স বাড়লেও ত্বকের বয়স না বাড়ুক, এমনটা যদি চান,
তাহলে নিয়মিত নিম তেল দিয়ে ত্বকের মাসাজ করতে ভুলবেন না যেন! আসলে এমনটা
করলে বলিরেখা কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে স্কিন টানটান হয়। ফলে ত্বকের বয়স
কমতে সময় লাগে না।
৫. খুশকির দূর করে: সাধারণত
ফাঙ্গাল ইনফেকশন হলেই এই ধরনের ত্বকের সমস্য়া হয়ে থাকে, যা নিম তেলের
ব্য়বহারে একদম কমে যায়। এখানেই শেষ নয়। স্ক্যাল্পের যেকোনো সংক্রমণ কমাতেও
নিম তেলের জুরি মেলা ভার। কীভাবে ব্য়বহার করতে হবে এটি? আপনি যে শ্য়াম্পু
ব্য়বহার করেন তাতে কয়েক ড্রপ নিম তেল মিশিয়ে রোজ মাথায় লাগান। তাহলেই
দেখবেন এ সমস্যা কেমন কমতে শুরু করে দিয়েছে।
৬. মাশারা ধারে কাছেও ভিরবে না :
বাড়িতে মশার উৎপাত বাড়লেই আমরা বাজার চলতি নানা ক্রিম লাগানো শুরু করি।
১০ থেকে ১৫ ফোটা নিম তেল, হাফ কাপ নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে গায়ে লাগান।
তাহলেই দেখবেন মশারা আর ধারে কাছে ঘেঁষতে পারছে না।
৭. ত্বকের সংক্রমণ সারায়:
এই ধরনের সংক্রমণ সাধারণত নোংরা থাকলে হয়। আর এই রোগ হলে পায়ে যন্ত্রণা
হওয়ার মতো লক্ষণের বহিঃপ্রকাশ ঘটে থাকে। অ্যাথলিট ফুট নামে পরিচিত এই
ত্বকের সমস্যার প্রকোপ কমাতে নিম তেলের সঙ্গে নারকেল তেল মিলিয়ে যে জায়গায়
সংক্রমণ হয়েছে সেখানে লাগান। এমনটা রোজ করলে, অল্প দিনেই দেখবেন রোগ
কমতে শুরু করেছে।
৮. একজিমার মতো রোগের প্রকোপ কমায়: ত্বকের
একধরনের প্রদাহজনিত রোগ হল একজিমা। নানা কারণে বহু মানুষ এই ধরনের ত্বকের
সমস্যায় ভুগে থাকেন। একজিমার প্রকোপ কমাতেও নিম তেল দারুন কাজ দেয়।
শরীরের যে যে জায়গায় একজিমা হয়েছে, সেখানে সেখানে নিম তেল লাগালে যন্ত্রণা
কমে। তবে ভুলেও যেন সরাসরি ত্বকের উপর নিম তেল ব্য়বহার করবেন না। পরিবর্তে
সামান্য় গরম জলে কয়েক ড্রপ নিম তেল মিশিয়ে তা দিয়ে স্নান করুন। এমনটা
প্রতিদিন করলে দেখবেন রোগ কমতে শুরু করেছে।
৮. হাইপারপিগমেন্টটেশনের সমস্যা দূর হয়:
ত্বকে মেলানিনের পরিমাণ বাড়লেই আশঙ্কা বাড়ে হাইপারপিগমেন্টটেশনের সমস্যা
হওয়ার। নিয়মিত যদি সারা শরীরে নারকেল তেলের সঙ্গে নিম তেল মিশিয়ে লাগানো
যায় তাহলে মেলানিনের মাত্রা কমে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই কমতে শুরু করে
হাইপারপিগমেন্টটেশনও।
৯. স্কিনের যত্নে : নিমে
অ্যান্টিব্য়াকটেকিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজ থাকার কারণে
ত্বকের উন্মুক্ত ছিদ্র বন্ধ করতে এটি দারুন কাজে আসে। নারকেল তেলের সঙ্গে
নিম তেল মিশিয়ে মুখে লাগান, তাহলেই দেখবেন দ্রুত ফল পাচ্ছেন।
খবর বিভাগঃ
ফিচার
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়