আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের নেতৃত্বে এবার টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে। এই সরকারে ৪৭ জন সদস্য নিয়ে নতুন মেয়াদে গঠিত হতে যাচ্ছে মন্ত্রিপরিষদ। পুরনো অনেকেরই ঠাই হয় নাই এবারের মন্ত্রিপরিষদে এবং এই মন্ত্রিপরিষদ বিগত সকল মন্ত্রিপরিষদের ইতিহাস ভেঙ্গে ইতিহাস তৈরী করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এমনই এক ইতিহাস হলো গত ২৮ বছর ধরে অর্থমন্ত্রী যারাই ছিলেন, তারা সবাই ছিলেন সিলেট অঞ্চলের বাসিন্দা; তবে এবার তার ছেদ ঘটছে।
শেখ হাসিনা তার নতুন সরকারে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দিচ্ছেন কুমিল্লার আ হ ম মুস্তফা কামালকে, যিনি বিদায়ী সরকারে পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব সামলে আসছেন।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়ী আওয়ামী লীগের নতুন সরকার সোমবার শপথ নিতে যাচ্ছে; রোববার নতুন মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীদের নাম প্রকাশ করা হয়।
১৯৯০ সালে দেশে গণতন্ত্র ফেরার পর ‘অর্থ মন্ত্রণালয় মানেই সিলেট’ এমন একটি ধারণা তৈরি হয়েছিল সব মহলে।১৯৯১ সালে খালেদা জিয়ার সরকারে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পান এম সাইফুর রহমান। টানা পাঁচ বছর ওই দায়িত্বে ছিলেন তিনি।সাইফুর ১৯৮০ সালে প্রথম অর্থমন্ত্রী হন, সেটাই ‘সিলেটী’ কারও প্রথম অর্থমন্ত্রী হওয়া। জিয়াউর রহমানের সরকারে দুই বছর ওই দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
সাইফুর রহমানের পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে অর্থমন্ত্রী হন শাহ এ এম এস কিবরিয়া। তার বাড়ি হবিগঞ্জ বৃহত্তর সিলেটের অন্তর্ভুক্ত। শেখ হাসিনার সরকারে পাঁচ বছর দায়িত্ব পালনকারী কিবরিয়া বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন।
২০০১ সালে খালেদা জিয়া আবার প্রধানমন্ত্রী হলে সাইফুর রহমানকে পুনরায় অর্থমন্ত্রী করেন। পুরো মেয়াদ সেই দায়িত্বে ছিলেন তিনি। দশককাল পরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন তিনি। জরুরি অবস্থা পেরিয়ে ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা সরকার গঠনের সময় অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়ার জন্য বেছে নেন আরেক ‘সিলেটী’ আবুল মাল আবদুল মুহিতকে।
মুহিত তার আগেও অর্থমন্ত্রী হয়েছিলেন এইচ এম এরশাদের সামরিক সরকারে ১৯৮২ সালে। ওই সরকারে থেকে দুটি বাজেট দিয়েছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে শপথ নেওয়ার পর একটানা দুই মেয়াদে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনের পর এবার অবসরে যাওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিলেন মুহিত। তিনি এবার নির্বাচনও করেননি। তার আসন সিলেট-১ এ এবার এমপি নির্বাচিত হয়েই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাচ্ছেন ভাই এ কে এ মোমেন।
মুহিত অর্থমন্ত্রী হিসেবে ১২ বার জাতীয় বাজেট দিয়েছেন। তার সমান বাজেট দিয়েছেন সাইফুর রহমানও। এবার অর্থমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে যাওয়া মুস্তফা কামাল গত পাঁচ বছর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সামলে আসছেন।
উল্লেখ্য, রাজনীতিক পরিচয়ের বাইরে ক্রীড়া সংগঠক হিসেবেও পরিচিত তিনি। তিনি ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। ২০১৪ সালে তিনি আইসিসির সভাপতিও নির্বাচিত হন।
মুস্তফা কামাল অর্থমন্ত্রী হওয়ায় তার স্থান পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আবার এসেছেন একজন ‘সিলেটী’, তিনি হলেন আবদুল মান্নান। গত পাঁচ বছর অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা মান্নান এবার পূর্ণ মন্ত্রী হচ্ছেন।
খবর বিভাগঃ
সারাদেশ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়