Sunday, November 12

কানাইঘাটে সুরমা নদীর ভাঙ্গনে দিশেহারা ৫০টি পরিবার

জসিম উদ্দিন : সুরমা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনের মুখে কানাইঘাট উপজেলার গাছবাড়ীস্থ ৭নং দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সর্দারমাটি গ্রামের নদীর তীরবর্তী মানুষের বাড়ীঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। দিন দিন নদীর ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করায় ইতিমধ্যে অসংখ্য বাড়ী ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে অনেকে ভিটা বাড়ী হারা হয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। বাণীগ্রাম ইউনিয়নের ভিতরে অবস্থিত বিভিন্ন গ্রামের অধিকাংশ বাড়ীঘর সুরমা নদীর তীরে অবস্থিত। সুরমা নদীর পাড় দিয়ে বাণীগ্রাম ইউনিয়নের ঘড়াইগ্রাম, ব্রাক্ষমগ্রাম, বাণিগ্রাম, ছত্রপুর, সর্দারমাটি, গাছবাড়ী নয়াগ্রামের হাজার হাজার লোক যাতায়াত করে থাকেন। উপজেলার বৃহৎ বাজার গাছবাড়ী বাজারে এবং গাছবাড়ী সংশ্লিষ্ট সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ রাস্তা দিয়েই মানুষের যাতায়াত। এ রাস্তা নদী গর্ভে বিলিন হলে ক্ষতিগ্রস্থ হবে হাজার হাজার মানুষ। বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যাতায়াতে সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করবে। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করে বাড়ী ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সম্প্রতি নদী ভাঙ্গন আরো তীব্র আকার ধারণ করায় অনেক বসত বাড়ীতে ফাটল দেখা দিয়েছে। অনেকের বাড়ীর অংশ প্রতিদিন সুরমার রাক্ষুসী ভাঙ্গনে বিলীন হচ্ছে। ইতিমধ্যে সর্দারমাটি গ্রামের নদী ভাঙ্গন রোধে প্রায় ১৪০০ মিটারের দুটি ব্লক করা হয়েছে। কিন্তু ব্লকের মধ্যেবর্তী ৮০০ মিটার জায়গা ব্লক নিমার্ণ না করার কারণে প্রায় ৫০টি পরিবার নতুন করে নদী ভাঙ্গনের হুমকীর সম্মুখীন। জানা যায় ফরমান আলী, তুতা মিয়া ও আক্তার হোসেনের ৩টি বাড়ীতে প্রায় ৫০টি পরিবারে ৩০০ জনের অধিক মানুষের বসবাস। সরজমিন পরিদর্শন পূর্বক দেখা যায়, ফরমান আলীর (৬৫) বাড়ীর সামনে রাক্ষুসী সুরমার থাবা সবচেয়ে বেশী। মাত্র ৩ ফুট দূরত্বে নদী ভাঙ্গনের অবস্থান। ফরমান আলীর বাড়ীতে প্রায় ২৫টি পরিবারে ২০০ জনের অধিক মানুষের বসবাস। অত্যান্ত দিন মজুর এ বাড়ীর লোকজন। স্থানীয়রা জানান, ফরমান আলীর বাড়ীর লোকজন এত অসহায় এদের বাড়ী কিছু হলে মাথা গোজার আর ঠাই থাকবে না। এ বাড়ী ছাড়া তাদের আর কোন সয়-সম্পত্তি নেই। এমতাবস্থায় ফরমাল আলী ও তার বাড়ীর লোকজন অনেকটা দিশেহারা। ফরমান আলী বলেন, আমাদের এ বাড়ীর কিচ্ছু হলে আমরার বাঁচা মরা সমান, দয়া করে আমাদের বাঁচান। স্থানীয় মেম্বার আফতাব উদ্দিন বলেন, সম্প্রতি অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণেই নতুন করে এ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। তাৎক্ষনিক কি করা যায়, কি ভাবে এদের জীবন রক্ষা করা যায় তা খুজে পাচ্ছি না। তবে আমরা এমপি বরাবরে নদী ভাঙ্গন রোধে আবেদন করব। সর্দারমাটি গ্রামের বাসিন্দা রহীম উদ্দীন, শামীম, রফিক, কবির, জয়নাল, ইলিয়াছ প্রমুখ জানান, গ্রামের মানুষের বাড়ীঘর নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার পরও কেউ গ্রামের সুরমা তীরের মানুষের হাহাকারের অবস্থা দেখেনি। পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী ভাঙ্গন রোধে কানাইঘাটে কোটি কোটি টাকার কাজ করলেও সুরমা নদীর ভাঙ্গন থেকে আমাদেরকে রক্ষা করার জন্য কোন ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছেন না। স্থানীয় বাসিন্দা যুবলীগ নেতা সুলতান আহমদ ভোরের ডাককে বলেন, আমাদের দুঃখের শেষ নেই। দিন দিন আমাদের বাড়ীঘর নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে, অথচ এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে বা কোন জনপ্রতিনিধির পক্ষ থেকে কোন ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। গ্রামের লোকজন কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, র্সদারমাটি গ্রামকে নদীভাঙ্গন থেকে রক্ষা করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত এগিয়ে আসবেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য বিরোধী দলীয় হুহীপ আলহাজ্ব সেলিম উদ্দিন বলেন, নদী ভাঙ্গন রোধে কানাইঘাট জকিগঞ্জে প্রায় ১০ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আমরা দু উপজেলার তালিকা করে দিয়েছি।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়