Thursday, September 14

কানাইঘাটে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ৯ ইউপি সদস্যের অভিযোগ


নিজস্ব প্রতিবেদক: কানাইঘাট সদর ইউপির চেয়ারম্যান মামুন রশিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে তার উপর অনাস্থা জানিয়ে পরিষদের ৯ জন ইউপি সদস্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে গত বুধবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে ইউপি চেয়ারম্যান জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মামুন রশিদ তার উপর পরিষদের ৯জন সদস্য কর্তৃক আনীত অভিযোগের বিষয়বস্তু অবাস্তব ও সত্য নয় বলে জানিয়েছেন। গত বুধবার পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ৬নং ওয়ার্ড সদস্য ফয়জুর রহমান, ১নং ওয়ার্ড সদস্য আতাউর রহমান, ২নং ওয়ার্ড সদস্য মামুন রশিদ, ৪নং ওয়ার্ড সদস্য ফরিদ আহমদ, ৫নং ওয়ার্ড সদস্য ফজলুল ইসলাম, ৭নং ওয়ার্ড সদস্য আমিন উদ্দিন, ৮নং ওয়ার্ড সদস্য শরিফ উদ্দিন, ৯নং ওয়ার্ড সদস্য আইয়ুব আলী, সংরক্ষিত ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের মহিলা সদস্যা পতিবালা চেয়ারম্যান মামুন রশিদের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯ইং এর ৩৯ ধারা মোতাবেক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভিন্ন অভিযোগ এনে লিখিত ভাবে ইউএনও বরাবরে এ অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, পরিষদের চেয়ারম্যান মামুন রশিদ দীর্ঘদিন থেকে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমে অনুপস্থিত, পরিষদের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে সদস্যদের সম্মানিত ভাতার টাকা প্রদান না করা, বিধি মোতাবেক মাসিক পরিষদের সভার কোন নোটিশ সদস্যদের না দেওয়া, তার তত্ত্বাবধানে ইউপির ৩টি ব্যাংক একাউন্ট পরিচালনা করে বিভিন্ন সময়ে একাউন্ট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা উত্তোলন, উন্নয়ন মূলক কাজের ভূয়া প্রজেক্ট তার পছন্দের লোকজনদের মাধ্যমে করা ইউপি সদস্যগণকে প্রজেক্ট চেয়ারম্যান না করে টাকা আত্মসাত, গ্রাম আদালত কার্যক্রম মুখথুবড়ে পড়া, চেয়ারম্যান পরিষদে নিয়মিত উপস্থিত না থাকা, রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সময় দেওয়ার কারণে উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড স্থবির, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রদত্ত সুযোগ সুবিধা থেকে নাগরিকবৃন্দ বঞ্চিত থাকা সহ নানা অভিযোগ এনে চেয়ারম্যান মামুন রশিদের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আমলে নিয়ে অভিযোগটির তদন্ত সাপেক্ষে পরিষদের চেয়ারম্যানপদ শূন্য ঘোষণা করার জন্য পরিষদের ৯জন ইউপি সদস্যবৃন্দ লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন। এব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মামুন রশিদের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি শুনেছি আমার পরিষদের যে ৯জন ইউপি সদস্য আমার বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবরে অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের কপি আমি পাইনি। ইউপি সদস্যদের ইন্ধন দিয়ে তার বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। দরখাস্তকারীর মধ্যে ইউপি সদস্য শরিফ উদ্দিন, ইউপি সদস্য আইয়ুব আলী, ইউপি সদস্য আতাউর রহমান, ইউপি সদস্য ফজলুল ইসলাম কর্মসৃজন ও টি.আর প্রকল্পের কাজ নাম মাত্র করে অর্ধেক টাকা আত্মসাত ও অভিযোগের ইউপি সদস্যগণ পরিষদের স্বার্থ বিরোধী কর্মকান্ড, উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে অনিয়ম করায় তিনি তাদের এসব কর্মকান্ডে বিরোধিতা করায় এবং কর্মসৃজন প্রকল্পের টাকা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কর্তৃক আটকানোর দায়ে ক্ষুব্দ হয়ে তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তিনি কোন উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের প্রজেক্ট চেয়ারম্যান নয়, ইউপি সদস্যরা উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের প্রজেক্ট সদস্যের দায়িত্বে রয়েছেন বিধায় পরিষদের উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের টাকা আমি কর্তৃক আত্মসাতের প্রশ্নই উঠে না। ইউপি সদস্য ফয়জুর রহমান ও ইউপি সদস্যা পতিবালা আমাকে বলেছেন, একটি কাগজে তাদের স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে, এব্যাপারে তারা কিছু জানেন না। আমি যথারীতি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি, অভিযোগটির তদন্ত হলে সত্য মিথ্যা প্রমাণিত হবে। গত বুধবার পরিষদের মাসিক মিটিংয়ের খাতা ইউপি সদস্য আমিন উদ্দিন ও ফরিদ উদ্দিন চুরি করায় এব্যাপারে তিনি কানাইঘাট থানায় সাধারণ ডায়রীর আবেদন করেছেন বলে চেয়ারম্যান মামুন রশিদ জানান। অপরদিকে ইউপি সদস্য আমিন উদ্দিন, ফরিদ আহমদ, আতাউর রহমান, আইয়ুব আলী জানিয়েছেন তারা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যেসমস্ত অভিযোগ এনে নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেছেন তা তদন্তে প্রমাণিত হবে। তারা কোন প্রকল্পের টাকা আত্মসাত করেননি বলে দাবী করে বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব তাদের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়