Tuesday, March 7

সাজুক ঘর ফুলদানিতে

সাজুক ঘর ফুলদানিতে
কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: উপহার কিংবা ঘরসজ্জার উপকরণের তালিকায় এখন অনায়াসে জুড়ে নিতে পারেন ফুলদানি। এটি যেমন মানানসই উপহার হিসেবে, তেমনি উপযুক্ত ঘরের সৌন্দর্য বর্ধনে। জেনে নেয়া যাক ফুলদানির খুঁটিনাটি।

হরেক রকম ফুলদানি:
বাজারে নানা রকমের ফুলদানি পাবেন একটু ঘুরলেই। নানা উপাদানের, আকৃতির, রঙের ও ঢঙের। বাঁশ, কাঠ, বেত, মাটি থেকে শুরু করে তামা, ক্রিস্টাল এমনকি ফাইবারের ফুলদানিও পাবেন পছন্দ অনুযায়ী। খাটো, মাঝারি ও বড় এই তিন উচ্চতার ফুলদানি পাবেন ত্রিভুজ, চৌকোনা, সিলিন্ডার কিংবা ডিম্বাকৃতিতে।

তবে সবারই পছন্দ সিরামিকের ফুলদানি। সিরামিক যেমন টেকসই, তেমনি এতে নানা রঙের সমাহার ঘটানোও সহজ। যেকোনো ঘরে যেকোনো পরিবেশে সিরামিকের ফুলদানি মানিয়ে যায়।

অন্যদিকে যারা দেশি ঘরানার সাজ পছন্দ করেন, তাদের চাহিদার শীর্ষে আছে বাঁশ, বেত, কাঠ ও মাটির ফুলদানি। কাঁচা ফুলের পাশাপাশি কৃত্রিম ফুলও দেশি ঘরানার ফুলদানিতে চমৎকার লাগে। মোটকথা, আপনার রুচি, সামর্থ্য কিংবা প্রয়োজন অনুযায়ী ফুলদানি পাবেন হাতের কাছেই।

ফুলদানিতে ঘর সাজানো:
ফুলদানি দিয়ে ঘর সাজানোর নানা কৌশল। তিনি বলেন, ফুলদানি নির্বাচন করা উচিত ঘরের আকৃতি, রং কিংবা অন্য সাজসজ্জার সঙ্গে মিলিয়ে। প্রবেশপথ থেকে শুরু করে খাবার ঘর, এমনকি রান্নাঘরটিও সাজাতে পারেন ফুলদানিতে। ফুল ছাড়াও ফুলদানি সাজানো যায় বৈচিত্র্য আনতে।

# প্রবেশপথে বড় আকারের বেশ কয়েকটি ফুলদানি রাখুন। এসবের আকৃতি হতে পারে একেক রকম। শুধু ফুল না সাজিয়ে ফুলদানিতে ঝুলিয়ে দিন মানিপ্লান্টের লতা। অনেকেই প্রবেশপথে জুতার তাক রাখেন। সে ক্ষেত্রে ওপরের তাকটি খালি রেখে ছোট ফুলদানিতে সাজিয়ে নিন। তাতে রাখুন কাপড় কিংবা নরম প্লাস্টিকের ফুল। ছোট পাতাবাহারের গাছও সাজিয়ে নিতে পারেন ওই ফুলদানিতে।

# ঘরের কোনায় বড় ফুলদানি রাখুন। সিরামিকস কিংবা মাটির রংবেরঙের ফুলদানিতে সাজিয়ে দিন লম্বা ডাঁটির প্লাস্টিক বা কাপড়ের ফুল। বড় ফুলদানির ওপর আলাদা বসিয়ে দিতে পারেন প্লেটে বসানো ইকেবানা কিংবা বনসাই। ঘরের পর্দা কিংবা কার্পেটের সঙ্গে মিলিয়ে রাখলে ফুটে উঠবে ঘরের কোনার স্নিগ্ধ রূপটিও।

# খাবারের টেবিলে ছোট বা মাঝারি আকৃতির সিরামিক কিংবা ক্রিস্টালের ফুলদানি মানানসই। আকৃতি যাই হোক না কেন, ফুলদানি ও ফুলের উচ্চতা যেন টেবিলের অন্য পাশে বসা মানুষের চেহারা ঢেকে না ফেলে। এ ক্ষেত্রে ঝুড়ি আকৃতির ফুলদানি বেছে নিন।

# বসার ঘরটির সৌন্দর্যের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখেন সবাই। বসার ঘর দিয়েই গৃহকর্ত্রী বা কর্তার রুচি ফুটে ওঠে। এ ক্ষেত্রে ফুলদানি আপনাকে অনেকখানি সাহায্য করবে। বসার ঘরের কোনায় রাখুন পর্দা, কার্পেট কিংবা সোফার কুশনের সঙ্গে মেলানো ফুলদানি। বড়, মাঝারি কিংবা ছোট ফুলদানিতে পছন্দ অনুযায়ী সাজান ফুল, ইকেবানা ও বনসাই।



# ফুলদানির পাশাপাশি শোপিস রাখলেও বসার ঘরের কোনা ঝলমলে হয়ে উঠবে। সোফার বা চেয়ারের মাঝের টেবিলের ফুলদানিতে ছেড়ে দিন একগোছা তাজা ফুল। সাইড টেবিলেও কাঁচা ফুল সাজিয়ে দিন রংবেরঙের ফুলদানিতে। তারপর দেখুন, আপনার বসার ঘরটি কীভাবে বদলে যায়।

# বাথরুমে ফুল সাজান সিঙ্কের সঙ্গে মানানসই ফুলদানিতে। দেয়ালে ছোট গ্লাস কর্নার করে নিন। এর ওপর ছোট ফুলদানিতে ঝুলিয়ে দিন মানিপ্লান্টের লতা।

# বাথরুমের কোনায় বড় বা মাঝারি রঙিন ফুলদানিতে সাজান লম্বা ডাঁটির ফুল।

# ফুলদানি সরাসরি টেবিলে বা তাকে না রেখে ম্যাট ব্যবহার করুন। ফুলদানির রঙের সঙ্গে মিলিয়ে ছোট আকৃতির ম্যাট বেছে নিন। ম্যাটের ক্ষেত্রেও গোল, চৌকোনা, ত্রিভুজ বা তারার আকৃতি বৈচিত্র্য বাড়াবে। এতে টেবিলের ক্ষতি হবে না।

# এক সপ্তাহ পরপর নরম ব্রাশ দিয়ে ফুলদানি ও কৃত্রিম ফুল পরিষ্কার করুন। ক্রিস্টাল, গ্লাস কিংবা সিরামিকের ফুলদানি গ্লাস লাইনার দিয়ে মুছে নিন। তাহলেই ফুলদানির চাকচিক্য বজায় থাকবে। কাঁচা ফুল পানিতে ভেজালে অবশ্যই পানি বদলে নেবেন। নতুবা দাগ পড়ে যাবে।



কেনা সময় মনোযোগ দিতে হবে যে দিকে:
ফুলদানি কেনার সময় টোকা দিয়ে দেখা উচিত, ফুলদানিটি ফাটা কি না। তা ছাড়া নকশার বৈচিত্র্যের প্রতিও খেয়াল রাখা ভালো। ফিনিশিং সুন্দর কি না দেখে নেবেন। ক্রিস্টালের বদলে অনেকেই কাচের ফুলদানি বিক্রি করেন। রং পাকা কি না তা খেয়াল করাও প্রয়োজন।

দরদাম:
আকৃতি এবং তৈরির উপকরণের ওপর ফুলদানির দাম নির্ভর করে। আকার-আকৃতিভেদে বাঁশ, বেত ও কাঠের ফুলদানির দাম পড়বে ১৫০ থেকে ৪০০ টাকা। সিরামিকের দাম ২৫০ থেকে ৭০০ এবং মাটির ফুলদানি পাবেন ৫০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে; পিতল ও তামার ফুলদানি পাবেন ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা পর্যন্ত দামে। আর ক্রিস্টালের ফুলদানির দাম পড়বে ৬০০ থেকে তিন হাজার টাকার মধ্যে।

কোথায় পাবেন:
যেকোনো গিফট শপেই পাবেন পছন্দের ফুলদানি। আড়ং, মেলা, যাত্রা, দুর্লভ কিংবা আর্চিস, হলমার্কের মতো দোকানগুলোতে পাবেন বৈচিত্র্যময় ফুলদানি। ঢাকার কলাবাগান, নিউমার্কেটে পাবেন হরেক রকমের ফুলদানি। গুলশান ডিসিসি মার্কেটে রয়েছে ফুলদানির অনেক দোকান। তাই আজই বেছে নিন আপনার পছন্দের ফুলদানি, উপহার কিংবা ঘরের সাজসজ্জায় নিয়ে আসুন বৈচিত্র্য।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়