Sunday, December 11

যেসব খাবার পুনরায় গরম করলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ে

যেসব খাবার পুনরায় গরম করলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ে

কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: প্রাত্যহিক জীবনে কর্মব্যস্ততার কারণে বেশিরভাগ সময়ই আমাদের রান্না করার সময় হয়ে ওঠে না। তাই সামান্য একটু অবসর কিংবা ছুটি পেলেই আমরা একসঙ্গে অনেক খাবার রান্না করি এবং পরে সেটা গরম করে খাই। আবার অনেক সময় দেখা যায় রান্না করা খাবার খাওয়ার পর যদি থেকে যায় সেটা ফ্রিজে রেখে দেয়া হয় পরে গরম করে খাওয়ার জন্য যেন খাবার অপচয় না হয়।

এতে কিছু খাবারের কার্যকারিতা পরিবর্তন হয়ে যায় এবং খাবারের পুষ্টিগুণ হারায় এবং অনেক সময় অনেক খাবার বিষাক্তও হয়ে যায়। সব ধরনের খাবারে এই ঝুঁকি না থাকে না কিছু খাবারে এমন সম্ভাবনা থাকে যে খাবার গুলো পুনরায় গরম করে খেলে পুরো পরিবারই স্বাস্থ্য ঝুঁকির মাঝে পড়তে পারে।

জেনে নেয়া যাক যেসব খাবারগুলো পুনরায় গরম করে খেলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

ভাত:
ব্রিটেনের ‘ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সি’র গবেষণা অনুসারে ভাত রান্নার পর যদি দীর্ঘ সময় সাধারণ তাপমাত্রায় রাখা থাকে তাহলে ‘ব্যাসিলাস সিরিয়াস’ নামক এক প্রকার ব্যাক্টেরিয়া তৈরি হতে থাকে। ওই রেখে দেয়া ভাত পুনরায় গরম করা হলেও ব্যাক্টেরিয়া নষ্ট হয় না। এটা খেলে ডায়রিয়া এবং বমি হওয়ার সমস্যা হতে পারে। তাই ভাত রান্না করে রেখে না দিয়ে বরং যখন খাওয়ার সময় হবে তার কিছুক্ষণ আগে রান্না করে নেয়াই ভালো।

মুরগি:
পুনরায় গরম করে খাওয়া খাবারের মাঝে মুরগি হচ্ছে সবচেয়ে প্রচলিত। কম বেশি আমরা সকলেই এটা করি। তবে জেনে অবাক হবেন যে এটাই সবচেয়ে বিপদজনক। পুনরায় গরম করলে এতে থাকা উচ্চ মাত্রার প্রোটিনের কার্যকারিতার পরিবর্তন হয় এবং তা অনেক সময় হজমের সমস্যা সৃষ্টি করে। তাই মুরগি রান্নার পর কখনো পুনরায় সেটা উচ্চ তাপমাত্রায় গরম করা উচিত নয় কারণ এতে অন্য যেকোনো মাংসের চেয়ে বেশি প্রোটিন থাকে। তাই সবচেয়ে ভালো হয় যদি খেতেই হয় গরম না করে খাওয়া, ফ্রিজে থাকলে খাওয়ার বেশ কিছুক্ষণ আগে বের করে রাখলে তা যখন স্বাভাবিক তাপমত্রায় আসবে তখন খেতে পারেন। আর যদি গরম করতেই হয় খুব কম তাপমাত্রায় একটু সময় নিয়ে গরম করুন।

ডিম:
ডিম হচ্ছে এমন একটি খাবার যা উচ্চ তাপের সংস্পর্শে এলে বিষাক্ত হয়ে যায়। তাই স্ক্র্যাম্বল এগ বা সেদ্ধ ডিম পুনরায় গরম করা কখনই উচিত নয়। কারন তা খেলে আমাদের হঠাৎ করেই পেট খারাপ হতে পারে।

মাশরুম:
মাশরুম দিয়ে কিছু রান্না করলে সঙ্গে সঙ্গেই খেয়ে ফেলতে হয়। নতুবা পরে আবারও গরম করে খেলে এর প্রোটিনের কার্যতালিকার পরিবর্তন হয়। ফলে হজমের সমস্যা সৃষ্টি হয়।

আলু:
উচ্চ পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এই সব্জিটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। কিন্তু এটি যখন পুনরায় গরম করা হয় তখন আলুর বেশির ভাগ পুষ্টিগুণ হারানোর সাথে সাথে বিষাক্ত হয়ে উঠে। তাই রান্নার সাথে সাথেই আলু খেতে হবে বা পরে খেলে তা ঠাণ্ডা অবস্থায় খেতে হবে তাহলেই এর শর্করা প্রতিরোধক গুনাগুন জন্য দীর্ঘস্থায়ী পরিতৃপ্তি লাভ করা সম্ভব হবে। আলু দিয়ে কোন কিছু যদি কয়েকদিনের জন্য রান্না করা হয় তাহলে চেষ্টা করুন আলু পরে যোগ করার।

পালং শাক:
পালং শাকও পুনরায় গরম করা বিপদজনক। উচ্চ মাত্রার নাইট্রেট সমৃদ্ধ পালং শাক রান্নার পর পুনরায় যখন গরম করা হয় তখন তা পুরোপুরি নাইট্রেটে পরিনত হয় যা খেলে দেহে ক্যান্সার সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে। তাই পালং শাক খেলে তাজা এবং রান্নার সাথে সাথেই খেয়ে ফেলতে হবে।

বিট:
এই সবজিটিতেও পালংশাকের মতো নাইট্রেট রয়েছে, যা পুনরায় গরম করা অত্যন্ত বিপদজনক। তবে এর মানে এই না যে পরের দিন এটা আর খাওয়া যাবে না শুধু মাত্র গরম না করে খেলেই হবে।

শালগম:
উচ্চ মাত্রার নাইট্রেট থাকে শালগমেও। তাই এটিও পুনরায় গরম করা উচিত নয়, পরে খেতে হলে ঠাণ্ডা খাওয়াই উত্তম।

ধনেপাতা:
নাইট্রেট থাকায় এটিও রান্নার পর পুনরায় আর গরম করা উচিত নয়। তবে যেহেতু স্যুপ কিংবা এই ধরনের রান্নাতে ধনেপাতা ব্যবহার করা হয়, তাই যদি পরে গরম করতেই হয় তাহলে সেই রান্না করা খাবারগুলো থেকে ধনেপাতা ফেলে দিয়ে পুনরায় গরম করে খেতে পারেন।

তাই এখন থেকে যেকোনো খাবার সংরক্ষনের উদ্দেশে রান্না করে ফ্রিজে রাখার সময় এবং তা পুনরায় গরম করার সময় একবার ভেবে নেবেন। আর যদি এখানে উল্লেখিত খাবার গুলো তার মাঝে রয়েই যায় তাহলে হজমের সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে পুনরায় গরম না করেই খেতে হবে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়