Friday, June 17

কানাইঘাটে এমপির আগমন নিয়ে জাপার দু'গ্রুপে উত্তেজনা!পুলিশের অ্যাকশন, হাতকড়া ছিনতাই, আটক-২


নিজস্ব প্রতিবেদক: সিলেট-৫ আসনের সংসদ সদস্য জাপার কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব বিরোধী দলীয় হুইপ আলহাজ্ব সেলিম উদ্দিনের আগামীকাল শনিবার কানাইঘাট আগমন নিয়ে বড়চতুল ইউপি জাপার দু’টি গ্রুপের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর জের ধরে আজ শুক্রবার জেলা জাপার সদস্য শামীম উদ্দিনের বাড়ীতে পুলিশ হানা দিলে পুলিশের সাথে বাড়ীর লোকজনের ধস্তাধস্তি, পুলিশের হাতকড়া ছিনতাই এর ঘটনায় এক ছাত্রলীগ কর্মী সহ দুই জনকে আটক করেছে পুলিশ। ব্যাপক ভাংচুর করা হয় জাপা নেতা শামীম আহমদের বাড়ীতে। বসত ঘরের মালামাল ভাংচুরের ঘটনায় পুলিশকে দায়ী করেছেন শামীম উদ্দিন। ভাংচুর করা হয় এমপির ভিত্তিপ্রস্থরের নামফলক। এ নিয়ে চতুলে বর্তমানে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। জানা যায়, শনিবার (কানাইঘাট-জকিগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য বিরোধী দলীয় হুইপ সেলিম উদ্দিন কানাইঘাট-দরবস্ত-চতুল সড়কের ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজের শুভ উদ্বোধন করার জন্য চতুলে আগমন উপলক্ষ্যে চতুল বাজারের ব্রীজের পার্শ্বের নাম ফলকের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপনের কাজ করা হয়। এ নিয়ে স্থানীয় জাতীয় পার্টি ও সহযোগী সংগঠনের দু’টি গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সদ্য সমাপ্ত বড়চতুল ইউপির নির্বাচনে জাপা সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী কিউএম ফররুখ আহমদ ফারুকের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির গ্রুপের নেতাকর্মীরা এমপির আগমন উপলক্ষ্যে বিভিন্ন স্থানে তোরন নির্মাণ ও ভিত্তি প্রস্থরের কাজের চেষ্টা করলে জেলা জাপার সদস্য উপজেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম উদ্দিন সমর্থিত গ্রুপটি পাল্টা গত বৃহস্পতিবার এলাকায় মাইকিং করে ফারুক আহমদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এমপির নাম ফলক স্থাপনে বাঁধা প্রদান করলে দু’টি গ্রুপের মধ্যে উত্তজনা ছড়িয়ে পড়ে। ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন অনুষ্ঠান নিয়ে যাতে করে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় এ জন্য কানাইঘাট থানা পুলিশ বড়চতুল ইউপির জাপার দু’গ্রুপের বিবাধ মেঠাতে তৎপর হয়ে উঠে। শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য থানার এস.আই তাপস চন্দ্র রায় কয়েকজন পুলিশ নিয়ে জেলা জাপার সদস্য শামীম আহমদের দুর্গাপুর গ্রামের বাড়ীতে যান। এ সময় তিনি শামীম আহমদকে থানায় আসার জন্য বললে এস.আই তাপসের সাথে কথা কাটাকাটিতে লিপ্ত হন শামীম আহমদ। একপর্যায়ে পুলিশ তাকে হাতকড়া পরিয়ে গ্রেফতারের চেষ্টা করলে সেখানে লঙ্কাকান্ড ঘটে। শামীম আহমদের পরিবারের সদস্যদের সাথে পুলিশের হাতাহাতি শুরু হয়। উভয় পক্ষ হাতাহাতি ও মারামারিতে লিপ্ত হলে একপর্যায়ে সেখানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ উপস্থিত হয়ে অ্যাকশনে যায়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ আটক করে শামীম আহমদের ভাই মাওঃ এহতেশাম ও তার ভাতিজা বড়চতুল ইউপি ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক বোরহান উদ্দিন (১৯) কে। এ সময় পুলিশের একটি হাতকড়া খোয়া যায়। জাপার দু’টি গ্রুপের বিরোধ নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা বোরহান উদ্দিনকে পুলিশ গ্রেফতার করলে বড়চতুল ইউপি আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। যুবলীগ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পুলিশকে দোষারূপ করে বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত চতুল-দরবস্ত রাস্তা অবরোধ করে চতুল বাজারে বিক্ষোভ করলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে ৫টার পরে অবরোধ তুলে নিয়ে সেখানে প্রতিবাদ সভা করে ইউপি আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম উদ্দিনের আগমন নিয়ে জাপার বিরোধকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ নেতা বোরহান উদ্দিনকে পুলিশ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। তার বসত ঘরে তান্ডব চালিয়ে আসবাবপত্র ভাংচুর করেছে পুলিশ। এছাড়া সভায় সেলিম উদ্দিন এমপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মুখর ছিলেন বক্তারা। জাপা নেতা শামীম উদ্দিনের অভিযোগ বেলা ১২টার দিকে তার বাড়ীতে এস.আই তাপসের নেতৃত্বে একদল পুলিশ হানা দিয়ে তার কক্ষে প্রবেশ করে। এ সময় তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। ঘুম থেকে ডেকে তুলে এস.আই তাপস চন্দ্র রায় পিস্তল উঁচিয়ে হাতকড়া পরানোর চেষ্টা করেন। পুলিশ আমার বসত ঘরের ৪টি রুমের সমস্ত মালামাল ভাংচুর ও তছনছ করে। বাড়ীর মহিলাদের লাঞ্চিত করে, আমার ভাই ও ভাতিজাকে আটক করে নিয়ে যায়। পুলিশের হাতকড়া ছিনিয়ে নেওয়ার সাথে তিনি জড়িত নন বলে জানান। এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হুমায়ুন কবিরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি "কানাইঘাট নিউজকে" বলেন, আগামীকাল সেলিম উদ্দিন এমপি স্যার কানাইঘাট-দরবস্ত সড়কের কাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন নিয়ে বড়চতুল ইউপি জাপার দু’টি পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করলে ভিত্তিপ্রস্থরের স্থান চতুল বাজারে এস.আই তাপস সহ একদল পুলিশকে সেখানে পাটাই। এস.আই তাপস বিষয়টি মিমাংসার জন্য জাপা নেতা শামীম আহমদের বাড়ীতে গেলে তিনি পুলিশের সাথে অসৌজন্য মূলক আচরণ করেন। একপর্যায়ে শামীম ও তার বাড়ীর লোকজন এস.আই তাপস সহ পুলিশের উপর আক্রমন করে হাতকড়া ছিনিয়ে নেয়। ঘটনার খবর পেয়ে তাৎণিক ভাবে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ উপস্থিত হয়ে তাপসকে উদ্ধার এবং পুলিশের উপর হামলা ও হাতকড়া ছিনিয়ে নেওয়ার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে শামীমের ভাই ও ভাতিজাকে আটক করে নিয়ে আসে পুলিশ। শামীম আহমদের বাড়ীর মালামাল ভাংচুরের সাথে পুলিশের কোন সম্পৃক্ততা নেই। হাতকড়া উদ্ধারের জন্য পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়