Monday, April 27

ছাগল পালন করে রানীর ভাগ্যের পরিবর্তন


কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: কিশোরগঞ্জে লক্ষ্মী রানীর সংসারে এক সময় অভাব-অনটন লেগেই থাকত। তিন বেলার মধ্যে কোনোদিন দুই বেলা, কোনোদিন এক বেলা এমনকি কোনোদিন না খেয়ে থাকতে হতো লক্ষ্মী রানীর পরিবারকে। এক সময় হতদরিদ্র সেই লক্ষ্মী রানী ছাগল পালন করে আজ স্বাবলম্বী হয়েছেন। সমাজে তার বেড়েছে মর্যাদা। পরিচিতি পেয়েছেন একজন স্বাবলম্বী নারী হিসেবে। ছাগল বিক্রির টাকায় স্বামীকে ব্যবসার পুঁজি দিয়েছেন, মেয়েকে ভালো পাত্রের সঙ্গে ধুমধাম করে বিয়ে দিয়েছেন, সন্তানদের লেখাপড়া করাচ্ছেন। একটু চিন্তা আর কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই আজ তিনি এ অবস্থানে এসেছেন বলে লক্ষ্মী রানী জানিয়েছেন। তার সাফল্য দেখে এলাকার অন্যরাও ছাগল পালনে উৎসাহী হচ্ছেন। লক্ষ্মী রানী জানান, ১৩ বছর আগে তার সংসারে অভাব ছিল নিত্যসঙ্গী। দিনমজুর স্বামীর রোজগারের টাকায় সংসার চলত না। এ সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে তাকে খেয়ে না খেয়ে থাকতে হতো। এক পর্যায়ে তিনি পাশের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ নেন। এ সময় গৃহকর্তার একটি ছাগলের বাচ্ছাকে তিনি ভাগী হিসেবে পালন করা শুরু করেন। দুই বছরের মাথায় ওই ছাগল দুটি বাচ্ছা জন্ম দেয়। এরপর একটি ছাগলের বাচ্ছা তার ভাগে থেকে যায়। এভাবে ধীরে ধীরে তার ভাগে ছাগলের পরিমাণ বাড়তে থাকে। এর পর লক্ষ্মী রানী ছাগল পালনের ওপর একটি প্রশিক্ষণ নিয়ে স্থানীয় একটি সংস্থা থেকে পাঁচ হাজার টাকা ক্ষুদ্রঋণ গ্রহণ করেন। সে টাকায় তিনটি ছাগল কেনেন তিনি। নিজের কেনা তিনটি ও ভাগে পাওয়া ছাগলগুলো যত্নের সঙ্গে পালন করতে থাকেন লক্ষ্মী রানী। এরপর থেকে আর তাকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। পরবর্তী সময়ে সঠিক চিকিৎসা এবং লালন-পালনের মাধ্যমে বর্তমানে তার ৪০টি ছাগল রয়েছে। গত বছর ২০টি ছাগল বিক্রি করে প্রায় পৌনে ২ লাখ টাকা খরচ করে মেয়ের বিয়ে দেন। ভাস্করখিলা গ্রামে সাড়ে ৪ শতাংশ জমি কিনে সেখানে বসতঘর নির্মাণ করেন। বর্তমানে দুই ছেলে আর স্বামী নিয়ে লক্ষ্মী রানী সুখেই দিন কাটাচ্ছেন।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়