Monday, February 2

সৌদিতে কর্মী পাঠানোর ফি ঠিক করে দেবে সরকার


ঢাকা: প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘বেসরকারি এজেন্টদের মাধ্যমেই সৌদি আরবে কর্মী পাঠানো হবে। তবে কর্মীদের কাছ থেকে কী পরিমাণ ফি নেয়া হবে তা ঠিক করে দেবে সরকার। এই মাসের মধ্যেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’ সোমবার দুপুরে ইস্কাটন গার্ডেনে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, ‘যদি ভিসা ট্রেডিং ( কেনাবেচা) বন্ধ করা যায় তবে একজন কর্মীর সৌদি যেতে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার বেশি ব্যয় হওয়া সমীচীন হবে না। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই সৌদি আরব থেকে একটি প্রতিনিধি দল দেশে আসবে। ভিসা ট্রেডিং বন্ধ করার ব্যাপারে আমাদের অনুরোধ থাকবে। তারা যদি তাদের পর্যায় থেকে এটা বন্ধ করতে পারে তাহলে কর্মীরা খুবই কম টাকায় সৌদি যেতে পারবেন।’ বেসরকারি এজেন্টগুলো কর্মীদের কাছ থেকে কী পরিমাণ ফি আদায় করবে? জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার তাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এটা ঠিক করে দেবে। এটা যদি পাঁচ হাজার টাকারও হয় তারপরও ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার বেশি কর্মীদের ব্যয় হবে না। সরকার কর্মীদের অভিবাসন ব্যয় নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।’ দক্ষ শ্রমিকদের পাশাপাশি অদক্ষরাও সৌদি যাওয়ার সুযোগ পাবেন উল্লেখ করে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, ‘একজন দক্ষ শ্রমিক একা কাজ করতে পারেন না। তাকে সাহায্য করার জন্য আরও দুজন অদক্ষ শ্রমিকের দরকার হয়। এদেরকে আধা দক্ষ কর্মী হিসেবে আমরা বিবেচনা করছি। তাই যখন দক্ষ শ্রমিক নেয়ার ব্যাপারে কথা হবে তখন এদেরকেও পাঠানো হবে।’ এছাড়া সরকার অদক্ষ শ্রমিকদের দক্ষ করে তুলতে প্রশিক্ষণ অব্যাহত রেখেছে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি দক্ষ শ্রমিকদের যদি কোনো ঘাটতি থাকে তাদেরও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিদেশে কাজ নিয়ে যেতে ইচ্ছুক নিবন্ধিত কর্মীরাই কেবল সৌদি যাওয়ার সুযোগ পাবেন জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের কাছে ২২ লাখ বিদেশগমনেচ্ছুক কর্মীর তথ্যভান্ডার রয়েছে। এদের মধ্য থেকেই কর্মীরা সৌদি যাওয়ার সুযোগ পাবেন। এর বাইরে আগে সৌদি ছিলেন এমন অভিজ্ঞ কর্মীদের দিকটি বিশেষভাবে বিবেচনা করা হবে।’ প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, ‘অতীতের বিভিন্ন সরকার বেসরকারি জনশক্তি রপ্তানিকারক এজেন্টদের দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হতো। এখন আমরা এজেন্টদের এজেন্ট হিসেবে ব্যবহার করছি। যে কারণে জনশক্তি রপ্তানি খাতে শৃঙ্খলা ফিরেছে।’ এ বছরের মধ্যে সৌদি প্রবাসী সব বাংলাদেশিদের মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) সরবরাহ করা যাবে কিনা- এই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘পাসপোর্টের সঙ্গে আমাদের মন্ত্রণালয়ের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এনিয়ে কিছু বলতে তারা বিব্রত হয়। আর এই দায়িত্ব পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হলেও তারা দায়িত্ব নিতে চায় না। অনেক বলে কয়ে তাদের দিয়ে সৌদিতে ৩০ থেকে ৩৫টির মতো মোবাইল টিম করা হয়েছে। যারা সৌদির বিভিন্ন শহরে গিয়ে গিয়ে কর্মীদের ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করছে। এভাবে কাজ চলতে থাকলে আগামী নভেম্বরের মধ্যে সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশিদের হাতে এমআরপি পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে।’ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব খন্দকার ইফতেখার হায়দার, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক বেগম শামছুন্নাহার, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হযরত আলী প্রমুখ।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়