ঢাকা:শচীন টেন্ডুলকারের অসংখ্য অর্জনের মধ্যে একটি সেরা অর্জন হল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোনো ব্যাটসম্যানের ১০০টি শতক । এটি এমন এক অর্জন যে এটি নতুন করে তৈরী করা এক কথায় অসম্ভব। এক সময় এটি করার কথা কল্পনা করাও কঠিন ছিল। অথচ সেই কষ্টকল্পিত ঘটনাকে বাস্তবায়িত করার কৃতিত্ব ভারতের ব্যাটিং-কিংবদন্তি লিটল মাস্টারের।
প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ২৫ জনের শতকের শতক আছে। ইংল্যান্ডের জ্যাক হবসের শতক সংখ্যা তো চোখ ধাঁধিয়ে দেয়ার মতো, ১৯৯টি। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অর্থাৎ টেস্ট, ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে শতকের সংখ্যাকে তিন অঙ্কের ঘরে নিয়ে যাওয়া সত্যিই অবিশ্বাস্য। তবে দীর্ঘ দ্ইু যুগ ধরে ক্রিকেটপ্রেমীদের তৃষ্ণা মিটিয়ে চলা টেন্ডুলকারের অভিধানে সম্ভবত অসম্ভব শব্দটা নেই। তার এই অসাধারণ কীর্তির সঙ্গে বাংলোদেশের নামও জড়িয়ে রয়েছে। কারণ শততম শতকটি তিনি করেছিলেন বাংলাদেশের বিপক্ষে, মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে।
২০১১ সালের ১২ মার্চ দেশের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৯৯তম শতকের দেখা পান টেন্ডুলকার। সেটা ছিল তার ৪৮তম ওয়ানডে শতক। এর আগে টেস্টে ৫১টি শতক করে ফেলেছিলেন তিনি।
বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮৫ রান করার পর ওয়ানডেতে অর্ধশতকেই পৌঁছাতে পারছিলেন না টেন্ডুলকার। পরের ৯ ইনিংসে তার ব্যাট থেকে আসে ১৮, ২, ৪৮, ১৫, ৩, ২২, ১৪, ৩৯ ও ৬ রান।
এর মধ্যে টেস্ট ক্রিকেটে ৬ বার অর্ধশতক পেরোলেও (৫৬, ৯১, ৭৬, ৯৪, ৭৩, ৮০) শতক না পাওয়ার হতাশায় পুড়তে হয়েছে। ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৯ রানের জন্য শতকের দেখা পাননি। আর মুম্বাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ফিরতে হয় ৬ রানের আফসোস নিয়ে।
এক বছরেরও বেশি অপেক্ষার পর শেষ পর্যন্ত এশিয়া কাপে আরাধ্য শতকের দেখা পান টেন্ডুলকার। দিনটি ছিল ২০১২ সালের ১৬ মার্চ। প্রিয় দলের বিপক্ষে শতক করলেও তার অসাধারণ অর্জনকে করতালি দিয়ে স্বাগত জানাতে কুণ্ঠা বোধ করেনি শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের গ্যালারি ভরা দর্শক। তবে তার দল সে সময় হেরে যায়।
ভারতের অবিসংবাদিত সেরা ব্যাটসম্যানের শততম রানটি আসে বাংলাদেশের সেরা ক্রিকেটারের বল থেকে। সাকিব আল হাসানের করা ৪৪তম ওভারের চতুর্থ বল স্কয়ার লেগে ঠেলে এক রান নিয়ে, দুই হাতে ব্যাট ও হেলমেট উঁচিয়ে, চিরাচরিত ভঙ্গিতে শতক উদযাপন করেন টেন্ডুলকার। সেদিন অবশ্য বেশ ধীরগতি ছিল তার ব্যাটে। ৬৩ বলে অর্ধশতক করার পর শতকে পৌঁছান ১৩৮তম বলে। শেষ পর্যন্ত আউট হন ১৪৭তম বলে, ১১৪ রান করে। ক্রিকেট-ইতিহাসে অমরত্ব পাওয়া ইনিংসটিতে ছিল ১২টি চার ও একটি ছক্কা। শফিউল ইসলামের করা ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে চার হাঁকিয়ে রানের খাতা খোলেন ইতিহাসের সফলতম ব্যাটসম্যান। প্রথম থেকেই ছিলেন আক্রমণাত্মক। প্রথম ৪টি স্কোরিং শটই ছিল ‘বাউন্ডারি’ বা চার।
তবে অর্ধশতক থেকে শতকে পৌঁছাতে ৭৫টি বল খেলতে হয় টেন্ডুলকারকে। অতিরিক্ত সতর্কতাই তার কারণ। এ সময় মাত্র তিনটি চার আসে তার ব্যাট থেকে।
মাশরাফি বিন মর্তুজার করা ৩৪তম ওভারে তো কোনো রানই নিতে পারেননি। মেডেন নেয়া মাশরাফির বলেই আউট হয়ে শেষ পর্যন্ত তিনি প্যাভিলিয়নে ফেরেন।
৪৭তম ওভারের পঞ্চম বলটি ছিল স্নোয়ার। টেন্ডুলকার ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বল তার ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে। বাংলাদেশের বিপক্ষে জীবনের শেষ ইনিংস খেলে যখন ফিরছেন, গ্যালারি ভরা দর্শক উঠে দাঁড়িয়ে করতালি দিয়ে তাকে সম্মান জানাতে ব্যস্ত।
শততম শতকের ম্যাচটি তবু হয়তো মনে রাখতে চাইবেন না টেন্ডুলকার। তিনি শতক করলেও সেদিন জিততে পারেনি ভারত।
টেন্ডুলকারের শতকের সুবাদে ৫ উইকেটে ২৮৯ রানের ভালো সংগ্রহ গড়ে ওয়ানডের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু তামিম ইকবাল (৭০), জহুরুল ইসলাম (৫৩) ও নাসির হোসেনের (৫৪) তিনটি অর্ধশতক এবং সাকিব (৩১ বলে ৪৯) ও অধিনায়ক মুশফিকের (২৫ বলে অপরাজিত ৪৬) দুটো আক্রমণাত্মক ইনিংস চার বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের জয় এনে দেয় বাংলাদেশকে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বাদশ ওয়ানডে খেলে সেটাই ছিল টেন্ডুলকারের প্রথম শতক। এর আগে ২০০৪ সালের জুলাইয়ে কলম্বোয় অপরাজিত ৮২ রান ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে তার সেরা ইনিংস। মিরপুরের শতকের সুবাদে সব টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে শতক করার কীর্তিও গড়েন তিনি।
টেন্ডুলকারের ১০০টি শতকের অনেক পেছনে থেকে অবসরে গেছেন অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার শতকের সংখ্যা ৭১টি। এই তালিকায় ৬১টি শতক নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার জ্যাক ক্যালিস। প্রত্যেক রেকর্ডের জন্ম ভাঙ্গার জন্য। তবে টেন্ডুলকারের এই অবিশ্বাস্য রেকর্ডের গায়ে চিরস্থায়ী ছাপ মেরেই দেয়া যায়। কারণ যে ভাবে সেরা সেরা ক্রিকেটাররা ইনজুরিতে পড়ে তাদের ক্যারিয়ার সংক্ষিপ্ত করে ফেলছেন। তাতে করে নতুন কোন ক্রিকেটার বের হয়ে আসা এক কথায় অসম্ভব। এর ফলে শচীন টেন্ডুলকরের রেকর্ড ভাঙ্গা কোন কালে যে সম্ভব হবে বা আদৌ হবে কিনা তা সময়ই বলে দিবে। তবে ক্রিকেটবোদ্ধারা মনে করছেন, এটা বোধ হয় অসম্ভব বলা চলে।----ডিনিউজ
প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ২৫ জনের শতকের শতক আছে। ইংল্যান্ডের জ্যাক হবসের শতক সংখ্যা তো চোখ ধাঁধিয়ে দেয়ার মতো, ১৯৯টি। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অর্থাৎ টেস্ট, ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে শতকের সংখ্যাকে তিন অঙ্কের ঘরে নিয়ে যাওয়া সত্যিই অবিশ্বাস্য। তবে দীর্ঘ দ্ইু যুগ ধরে ক্রিকেটপ্রেমীদের তৃষ্ণা মিটিয়ে চলা টেন্ডুলকারের অভিধানে সম্ভবত অসম্ভব শব্দটা নেই। তার এই অসাধারণ কীর্তির সঙ্গে বাংলোদেশের নামও জড়িয়ে রয়েছে। কারণ শততম শতকটি তিনি করেছিলেন বাংলাদেশের বিপক্ষে, মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে।
২০১১ সালের ১২ মার্চ দেশের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৯৯তম শতকের দেখা পান টেন্ডুলকার। সেটা ছিল তার ৪৮তম ওয়ানডে শতক। এর আগে টেস্টে ৫১টি শতক করে ফেলেছিলেন তিনি।
বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮৫ রান করার পর ওয়ানডেতে অর্ধশতকেই পৌঁছাতে পারছিলেন না টেন্ডুলকার। পরের ৯ ইনিংসে তার ব্যাট থেকে আসে ১৮, ২, ৪৮, ১৫, ৩, ২২, ১৪, ৩৯ ও ৬ রান।
এর মধ্যে টেস্ট ক্রিকেটে ৬ বার অর্ধশতক পেরোলেও (৫৬, ৯১, ৭৬, ৯৪, ৭৩, ৮০) শতক না পাওয়ার হতাশায় পুড়তে হয়েছে। ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৯ রানের জন্য শতকের দেখা পাননি। আর মুম্বাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ফিরতে হয় ৬ রানের আফসোস নিয়ে।
এক বছরেরও বেশি অপেক্ষার পর শেষ পর্যন্ত এশিয়া কাপে আরাধ্য শতকের দেখা পান টেন্ডুলকার। দিনটি ছিল ২০১২ সালের ১৬ মার্চ। প্রিয় দলের বিপক্ষে শতক করলেও তার অসাধারণ অর্জনকে করতালি দিয়ে স্বাগত জানাতে কুণ্ঠা বোধ করেনি শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের গ্যালারি ভরা দর্শক। তবে তার দল সে সময় হেরে যায়।
ভারতের অবিসংবাদিত সেরা ব্যাটসম্যানের শততম রানটি আসে বাংলাদেশের সেরা ক্রিকেটারের বল থেকে। সাকিব আল হাসানের করা ৪৪তম ওভারের চতুর্থ বল স্কয়ার লেগে ঠেলে এক রান নিয়ে, দুই হাতে ব্যাট ও হেলমেট উঁচিয়ে, চিরাচরিত ভঙ্গিতে শতক উদযাপন করেন টেন্ডুলকার। সেদিন অবশ্য বেশ ধীরগতি ছিল তার ব্যাটে। ৬৩ বলে অর্ধশতক করার পর শতকে পৌঁছান ১৩৮তম বলে। শেষ পর্যন্ত আউট হন ১৪৭তম বলে, ১১৪ রান করে। ক্রিকেট-ইতিহাসে অমরত্ব পাওয়া ইনিংসটিতে ছিল ১২টি চার ও একটি ছক্কা। শফিউল ইসলামের করা ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে চার হাঁকিয়ে রানের খাতা খোলেন ইতিহাসের সফলতম ব্যাটসম্যান। প্রথম থেকেই ছিলেন আক্রমণাত্মক। প্রথম ৪টি স্কোরিং শটই ছিল ‘বাউন্ডারি’ বা চার।
তবে অর্ধশতক থেকে শতকে পৌঁছাতে ৭৫টি বল খেলতে হয় টেন্ডুলকারকে। অতিরিক্ত সতর্কতাই তার কারণ। এ সময় মাত্র তিনটি চার আসে তার ব্যাট থেকে।
মাশরাফি বিন মর্তুজার করা ৩৪তম ওভারে তো কোনো রানই নিতে পারেননি। মেডেন নেয়া মাশরাফির বলেই আউট হয়ে শেষ পর্যন্ত তিনি প্যাভিলিয়নে ফেরেন।
৪৭তম ওভারের পঞ্চম বলটি ছিল স্নোয়ার। টেন্ডুলকার ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বল তার ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে। বাংলাদেশের বিপক্ষে জীবনের শেষ ইনিংস খেলে যখন ফিরছেন, গ্যালারি ভরা দর্শক উঠে দাঁড়িয়ে করতালি দিয়ে তাকে সম্মান জানাতে ব্যস্ত।
শততম শতকের ম্যাচটি তবু হয়তো মনে রাখতে চাইবেন না টেন্ডুলকার। তিনি শতক করলেও সেদিন জিততে পারেনি ভারত।
টেন্ডুলকারের শতকের সুবাদে ৫ উইকেটে ২৮৯ রানের ভালো সংগ্রহ গড়ে ওয়ানডের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু তামিম ইকবাল (৭০), জহুরুল ইসলাম (৫৩) ও নাসির হোসেনের (৫৪) তিনটি অর্ধশতক এবং সাকিব (৩১ বলে ৪৯) ও অধিনায়ক মুশফিকের (২৫ বলে অপরাজিত ৪৬) দুটো আক্রমণাত্মক ইনিংস চার বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের জয় এনে দেয় বাংলাদেশকে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বাদশ ওয়ানডে খেলে সেটাই ছিল টেন্ডুলকারের প্রথম শতক। এর আগে ২০০৪ সালের জুলাইয়ে কলম্বোয় অপরাজিত ৮২ রান ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে তার সেরা ইনিংস। মিরপুরের শতকের সুবাদে সব টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে শতক করার কীর্তিও গড়েন তিনি।
টেন্ডুলকারের ১০০টি শতকের অনেক পেছনে থেকে অবসরে গেছেন অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার শতকের সংখ্যা ৭১টি। এই তালিকায় ৬১টি শতক নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার জ্যাক ক্যালিস। প্রত্যেক রেকর্ডের জন্ম ভাঙ্গার জন্য। তবে টেন্ডুলকারের এই অবিশ্বাস্য রেকর্ডের গায়ে চিরস্থায়ী ছাপ মেরেই দেয়া যায়। কারণ যে ভাবে সেরা সেরা ক্রিকেটাররা ইনজুরিতে পড়ে তাদের ক্যারিয়ার সংক্ষিপ্ত করে ফেলছেন। তাতে করে নতুন কোন ক্রিকেটার বের হয়ে আসা এক কথায় অসম্ভব। এর ফলে শচীন টেন্ডুলকরের রেকর্ড ভাঙ্গা কোন কালে যে সম্ভব হবে বা আদৌ হবে কিনা তা সময়ই বলে দিবে। তবে ক্রিকেটবোদ্ধারা মনে করছেন, এটা বোধ হয় অসম্ভব বলা চলে।----ডিনিউজ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়