দেশের বিদ্যুৎ খাত উন্নয়নে চারটি দাতা সংস্থা বাংলাদেশকে সহজ শর্তে ১৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেবে। সরকারের সাথে আলোচনার মাধ্যমে দাতা সংস্থাগুলো এ টাকা দিতে রাজি হয়েছে। এ ব্যাপারে খুব তাড়াতাড়িই ঋণপ্রদানকারীদের সাথে চুক্তি করতে যাচ্ছে সরকার। দাতা গোষ্ঠির এ ঋণের টাকা দেশের বিদ্যুৎ খাতকে আরো শক্তিশালী করবে। ফলে বিদ্যমান বিদ্যুৎ সঙ্কট অনেকাংশেই লাঘব করতে পারবে বিদ্যুৎ বিভাগ।সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, যে দাতা সংস্থাগুলো এদেশের বিদ্যুৎ খাতে সহজ শর্তে ঋণ দিতে রাজি হয়েছে সেগুলো হচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), ইসলাম উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি), ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (ইআইবি) এবং প্যারিসভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থা এএফডি। দাতা গোষ্ঠিগুলোর প্রতিশ্র�ত ঋণের মধ্যে এডিবি একাই দেবে ৭০ কোটি ডলার। যা মোট ঋণের ৫৬ শতাংশ। আর অপর ৩টি সংস্থা দেবে বাকি টাকা। তবে দাতাদের এ ঋণের সাথে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে সরকারও নিজস্ব তহবিল থেকে ২২ কোটি ডলারের যোগান দেবে। মূলত দেশের বিদ্যুৎ প্লান্টের সক্ষমতা বৃদ্ধি, সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়াতেই এ টাকা খরচ করা হবে। সরকারের সাথে দাতা গোষ্ঠির চুক্তির পর ৩ ধাপে এ ঋণের টাকা ছাড় করা হবে। তবে অর্থ ছাড়ের ব্যাপাওে দাতাদের সাথে আলোচনার দরকার রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন। কারণ চূড়ান্ত আলোচনা শেষে সংশ্লিষ্ট দাতা গোষ্ঠির বোর্ড সভায় ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করবে। এরপরই টাকা ছাড় করবে দাতারা।সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত যে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য দাতা গোষ্ঠি থেকে সহজ শর্তে ঋণ নেয়া হচ্ছে তার সফল বাস্তবায়ন হলে দেশের জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডে বাড়তি ৭শ� মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হবে। এজন্য আগামী ৩ বছরের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আর দাতা গোষ্ঠিও সরকারের এ প্রস্তাব গ্রহণ করার পরই অর্থায়নের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক্ষেত্রে দাতারাও সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ৩ পর্যায়ে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। প্রস্তাবিত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রথম ধাপে চলমান কয়েকটি বিদ্যুৎ প্লান্টকে ওপেন সাইকেল থেকে কম্বাইন্ড সাইকেলে রূপান্তরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো হবে। দ্বিতীয় দাপে উন্নতি করা হবে ট্রান্সমিশন বা সঞ্চালন ব্যবস্থার। আর শেষ পর্যায়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নতির কথা বলা হয়েছে। এসব পরিকল্পনার পাশাপাশি দাতারা সেচ ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ ব্যবহার নিরুৎসাহী করতে সারাদেশে ২শ� সোলার প্লান্ট নির্মাণেও অর্থায়ন করবে।সূত্র আরো জানায়, প্রস্তাবিত কর্মপরিকল্পনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে খুলনা পাওয়ার প্লান্ট, বাংলাদেশ পাওয়ার প্লান্ট ও শাহাজীবাজার পাওয়ার প্লান্টকে ওপেন সাইকেল থেকে সম্বাইন্ড সাইকেলে পরিণত কওে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। ২য় ও ৩য় ধাপে বিদ্যুতের সঞ্চালন ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল, চন্দ্রঘোনা-রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-নরসিংদী পর্যন্ত ৩১৫ কিলোমিটার নতুন বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিদ্যুৎ খাতের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্যই অর্থায়ন করছে দাতারা। ফেয়ার নিউজ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়