ভারতের সাথে বাংলাদেশের একতরফা বাণিজ্য ঘাটতি ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। মূলত বিভিন্ন ধরনের অশুল্ক বাধার কারণেই ভারতের বাজারে ৬১ পণ্যের শুল্কমুক্ত রফতানি সুবিধা আশানুরূপ কাজে আসছে না। সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরেও ভারতীয় বাজার থেকে এদেশের রফতানি আয় কমেছে আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় দেড় কোটি ডলার। ২০১১-�১২ অর্থবছরে ভারতে রফতানি হয়েছে মাত্র ৪৯ কোটি ৯৪ লাখ ডলারের পণ্য। অথচ ২০১০-�১১ অর্থবছরে রফতানির পরিমাণ ছিল ৫১ কোটি ২০ লাখ ডলার। তাছাড়া গতবছরের সেপ্টেম্বর থেকে ভারতে বাংলাদেশী পণ্যের শুল্কমুক্ত রফতানি সুবিধা ঘোষণার পর থেকে সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরের জুন মাস পর্যন্ত ১০ মাসে ভারতীয় বাজার থেকে রফতানি আয় কমেছে ৭৬ লাখ ডলার। এর বিপরীতে গত অর্থবছরে ভারতে রফতানির তুলনায় আমদানি বেড়েছে ৮ গুণেরও বেশি।সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ২০১০-�১১ অর্থবছরে ভারতের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৪০৬ কোটি ডলার। আর গত ৩ অর্থবছরের মধ্যে ২০০৮-�০৯ অর্থবছরে ভারতের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ২৫৮ কোটি ডলার, ২০০৯-�১০ অর্থবছরে এ পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ২৯০ কোটি ডলার্ েবেং ২০১০-�১১ অর্থবছরে তা গিয়ে ঠেকে ৪০৬ কোটি ডলারে। কাগজে-কলমে ভারত বাংলাদেশী বেশি কিছু পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা ঘোষণা করলেও বিভিন্ন ধরনের অশুল্ক বাধার কারণে সেদেশে রফতানি বাড়ানো যাচ্ছে না। যদিও ভারতের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে দু�দেশের মধ্যে যৌথ ইশতেহার স্বাক্ষরিত হয়েছে। কিন্তু তাতেও বাণিজ্য ঘাটতি কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বরং বাংলাদেশী পণ্যের ভারত প্রবেশের শুল্কমুক্ত সুবিধা ঘোষণার পর থেকেই সেদেশে রফতানির পরিমাণ কমে গেছে। এক্ষেত্রে এদেশের পোশাক ও নিটওয়্যার রফতানিকারকদের অভিযোগ, ভারতের বাজারে বাংলাদেশী ফুলহাতা গেঞ্জি, হাইনেক গেঞ্জির ব্যাপক চাহিদা থাকলেও এসব পণ্যকে শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায় রাখা হয়নি। ফলে এখনো ৪২ শতাংশ শুল্ক দিয়েই এসব পণ্য ভারতে রফতানি করতে হচ্ছে।সূত্র জানায়, ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিক আমদানির বাইরে বিভিন্নভাবে প্রায় সমপরিমাণ পণ্য এদেশে প্রবেশ করছে। এর ফলে ভারতের সাথে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ সরকারি হিসাবের অনেক বেশি। মূলত দু�দেশের মধ্যে দীর্ঘ সীমান্তের কারণে কোনোভাবেই চোরাচালানের মাধ্যমে আসা ভারতীয় পণ্যের আগ্রাসন রোধ করা যাচ্ছে না। এ কারণে ভারত সরকার কিছু সংখ্যক বাংলাদেশী পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা দিলেও তা আটকে যাচ্ছে অশুল্ক বাধায়। পাশাপাশি ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গড় ৮ শতাংশ থেকে ৬ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে এসেছে। এ কারণেও ভারতে বাংলাদেশের পণ্যের চাহিদা কমে গেছে।সূত্র আরো জানায়, শূন্য শুল্ক সত্ত্বেও ভারতে বাংলাদেশী পণ্যের রফতানি বাড়ানো যাচ্ছে না। এজন্য রফতানির ক্ষেত্রে এদেশের সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। একই সাথে সরকারকে নজর দিতে অশুল্ক বাধার দিকেও। অনেক রফতানিকারকের অভিযোগ, ভারত বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে এখনো কিছু অশুল্ক বাধা জিইয়ে রেখেছে। এর মধ্যে রয়েছে টেস্টিং, লেবেলিং, কাস্টমস সমস্যা ইত্যাদি। পেট্রাপোল দিয়ে বাংলাদেশী কোনো পণ্য ভারতে ঢুকলে সে পণ্যের মান যাচাইয়ের জন্য তা দিল্লি পাঠানো হয়। এ কার্যক্রমে রয়েছে দীর্ঘ আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। একই সাথে ভারত বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের ভিসা না দিয়েও এক ধরনের অশুল্ক বাধা তৈরি করে রাখছে। খবর:-ফেয়ার নিউজ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়