Monday, July 23

শেষ শয্যার অপেক্ষায় হিমঘরে হুমায়ূনের লাশ

নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জানাজা সোমবার দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার দাফনের আগে পর্যন্ত বরেণ্য এ লেখকের মরদেহ বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। তাকে কোথায় দাফন করা হবে সে সিদ্ধান্ত নেবে তার পরিবারের সদস্যরা। ঈদগাহ ময়দানের প্রায় অর্ধেকটাজুড়ে কয়েক হাজার মানুষ হুমায়ূনের জানাজায় অংশ নেন। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানাজা পরিচালনা করেন। জানাজা শুরুর আগে হুমায়ূনের বড় ছেলে নুহাশ রীতি অনুযায়ী সবার কাছে বাবার হয়ে ক্ষমা চেয়ে নেন।হুমায়ুনের মরদেহ নিয়ে দেশে ফিরে তাঁর স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন জানান, তার শেষ ইচ্ছা ছিলো নুহাশ পল্লীতে যেন তাঁকে কবর দেয়া হয়। নুহাশপল্লীর মাটির প্রত্যেকটি ইঞ্চি তার চেনা, প্রতিটি ঘাস তার চেনা। আপনারা দয়া করে তাকে সেখানেই দাফনের ব্যবস্থা করুন। উনাকে আর কষ্ট দেবেন না। অন্য কোথাও নিয়ে গেলে সে ভয় পাবে। অচেনা জায়গায় ও ভয় পায়।যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরার পর হুমায়ুনের ভাই কথা সাহিত্যিক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেছেন, হুমায়ূন শুধু পরিবারের নয়, গোটা জাতির। আলোচনা করেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।আহসান হাবীব সাংবাদিকদের বলেন, কোনো সমস্যা না থাকলে আমরা আজই উনাকে দাফন করতে চাই। আমাদের মায়ের ইচ্ছা, মিরপুর বা বনানীতে এটা হোক।দেশে আনার পর হুমায়ূন আহমেদের মরদেহ প্রথমে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়। শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের করা অস্থায়ী মঞ্চে দুপুর ২টা পর্যন্ত মরদেহ রাখা হয়।প্রথমেই রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের পক্ষে তার সামরিক সচিব ও পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার দুই কর্মকর্তা হুমায়ূন আহমেদের মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এবং তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদসহ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দরা শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। পরে একে একে শ্রদ্ধা জানান সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিশিষ্টজনরা। এছাড়া ছেলেকে শেষবারের মতো দেখতে শহীদ মিনারে যান হুমায়ূন আহমেদের রত�গর্ভা জননী আয়েশা ফয়েজ।প্রিয় লেখককে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে সকাল থেকেই শহীদ মিনার এলাকা জনস্রোতে রূপ নেয়। এ সময় হুমায়ূন আহমেদের সহকর্মী, শুভানুধ্যায়ী এবং গুণমুগ্ধরাসহ হাজার হাজার জনতা ভিড় করেন স্মৃতির মিনারে। তারা জানান, গুণী এ মানুষটি সাহিত্য জগতে একটি স্বতন্ত্র ধারার সৃষ্টি করেছিলেন। এছাড়া শ্রদ্ধা জানানোর পর্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে দোয়েল চত্বর, শিববাড়ী মোড়, জগন্নাথ হল ক্রসিং এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখে পুলিশ। শ্রদ্ধা জানাতে দোয়েল চত্বর, ঢাকা মেডিকেল কলেজের রুমানা চত্বর এলাকা দিয়ে ঢুকে জগন্নাথ হল ক্রসিং এবং শিববাড়ী ক্রসিং দিয়ে বের হতে হয়। আর শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আশপাশে ৪টি সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর সাধারণ মানুষ এই কিংবদন্তি লেখকের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শুরু করেন। বিপুলসংখ্যক ভক্ত, শুভাকাক্সক্ষী, পাঠকসহ সর্বস্তরের মানুষ দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে হুমায়ূন আহমেদের প্রতি তাঁদের শেষশ্রদ্ধা নিবেদন করেন। স্বদেশের মাটিতে হুমায়ূনসোমবার সকাল ৮টা ৫৬ মিনিটে তার কফিনবাহী বিমানটি শাহজালাল বিমানবন্দরে হুমায়ূন আহমেদের মরদেহ পৌঁছায়। সুসজ্জিত একদল পুলিশ সদস্য কাঁধে করে বিমান থেকে তার কফিন নামিয়ে নিয়ে যান ফুলে ফুলে সাজানো একটি অ্যাম্বুলেন্সে। একই বিমানে স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, দুই ছেলে নিষাদ ও নিনিত, শাওনের মা তহুরা আলী, বোন সেঁজুতি এম আফরোজ এবং পারিবারিক বন্ধু প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম পৌঁছান। আহসান হাবীব, মুহম্মদ জাফর ইকবাল, তাদের দুই বোন এবং পরিবারের ঘনিষ্ঠজনরা সকালেই বিমানবন্দরে যান। এছাড়া বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক ও ভক্তরা বিমানবন্দরের বাইরে ভিড় করেন।রোববার সকাল ৯টা ২৬ মিনিটে হুমায়ূন আহমেদের মরদেহ নিয়ে তার স্বজনরা এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে জন এফ কেনেডি বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। প্রিয় লেখককে শেষবারের মতো বিদায় জানাতে বিমানবন্দরে জড়ো হয়েছিলেন কয়েকশ প্রবাসী বাংলাদেশি। ফুল আর অশ্র�তে শেষ শ্রদ্ধাজননন্দিত কথা সাহিত্যিক, নাট্যকার কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদেকে শেষ বিদায় জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হওয়া ভক্ত, পাঠক, বন্ধু, সহকর্মী, ছাত্র বা স্বজন- কারো অশ্র�ই বাঁধ মানেনি। হুমায়ূনের কফিন রাখা হয় শহীদ মিনার চত্বরের উত্তর পাশে নির্মিত শোক মঞ্চে। সেখানে শ্রদ্ধা জানায় সর্বস্তরের মানুষ।শোক মঞ্চে হুমায়ূনের মা আয়েশা ফয়েজ এবং তারপর লেখকের দ্বিতীয় স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন উপস্থিত হন শোক মঞ্চে। এ সময় তরুণ নুহাশকে কফিন জড়িয়ে ধরে অঝোর ধারায় কাঁদতে দেখা যায়, যার পরনে ছিল বাবার সৃষ্ট চরিত্র হিমুর সেই হলুদ পাঞ্জাবি। হুমায়ূনের দীর্ঘদিনের বন্ধু প্রবীণ সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী ও সাহিত্যিক সৈয়দ শামসুল হকও কফিনের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আওয়ামী লীগের পক্ষে জাতীয় সংসদের উপনেতা ও দলের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ ও জাহাঙ্গীর কবির নানক ফুল দিয়ে হুমায়ূনের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান।প্রধান বিরোধী দল বিএনপির পক্ষ থেকে হুমায়ূনের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, রুহুল কবির রিজভী, আব্দুস সালাম ও খায়রুল কবির খোকন।অর্থমন্ত্রী আবুল মা�ল আব্দুল মুহিত, সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খান, এ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. শওকত হোসেন, আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, পূর্ত প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খান, নারী ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শিরিন শারমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এমিরেটার্স অধ্যাপক আনিসজ্জামান, বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষে একেএম শহীদুল হক, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ-ডিএমপির পক্ষে কমিশনার বেনজির আহমদ, ফরিদুন নাহার লাইলী এমপি, কবি হাসান হাফিজ, যুবলীগের পক্ষে সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ, শিল্পী কুদ্দুছ বয়াতী, কবি নাসির আহমেদ, বুয়েট উপাচার্য এসএম নজুরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আনোয়ার হোসেন, পুলিশের অতিরিক্ত আইজি শহীদুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বেনজির আহমেদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরা। আর বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। হুমায়ূন আহমেদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসে এই অনুভূতি প্রকাশ করলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইকবাল মাহমুদ। কদম ফুল হাতে সকাল ১০টা থেকে সারিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। শহীদ মিনারে আগত মানুষের অধিকাংশই তরুণ-তরুণী। তাঁদের অনেকের হাতে হুমায়ূন আহমেদের প্রিয় কদম ফুল। এ ছাড়া গোলাপসহ নানা ফুলে ভরে উঠছে লেখকের কফিন।কিছু প্রতিক্রিয়াশিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, হুমায়ূন আহমেদ আমাদের নাটক ও নাট্যতত্ত্বের চর্চা শিখিয়েছেন। আমরা তার কর্মময় জীবনের নানা কর্মকাণ্ড প্রতিনিয়ত শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবো। পরবর্তী প্রজন্মকে আমরা তার কর্মময় জীবনের কর্মকাণ্ড সঠিকভাবে উপস্থাপন করবো। তার জীবন আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে জানার জন্য পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা আমরা করবো।বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক ম হামিদ বলেন, বাংলা নাটকের নতুন করে পথশ্রষ্ঠা হুমায়ূন আহমেদকে আমরা হারিয়ে টেলিভিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা যেন অনেক কিছু হারিয়ে ফেললাম। টেলিভিশন নাটকের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে শিখিয়েছেন হুমায়ূন আহমেদ। সাজেদা চৌধুরী বলেন, রবীন্দ্রনাথ, শরৎচদ্র ও শামসুর রাহমানের মতো হুমায়ূন আহমেদও আমাদের সাহিত্যে অমূল্য অবদান রেখে গেছেন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, হুমায়ূন এমন লেখক ছিলেন যে তার বই আমি বইমেলা থেকে কিনে আনার পর পড়া শেষ না করে থাকতে পারিনি। শুধু সাহিত্য নয়, চলচ্চিত্র, নাটকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তিনি তার বিচক্ষণ বিচরণ রেখে গেছেন। ব্যাক্তিগতভাবেও তিনি ছিলেন আমার খুব কাছের।খাদ্যমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, সাহিত্য, চলচ্চিত্র নাটকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনবদ্য অবদান রেখে হুমায়ূন চলে গেলেন। অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল।হুমায়ূন আহমেদের অবদান জাতি চিরদিন স্মরণে রাখবে বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মণি।কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, হুমায়ূন আহমেদ বিষয়ে কথা বলা আজ সত্যিই আমার পক্ষে অনেক কষ্টের। আমি বাবার মৃত্যুর পর অনেক দিন বাকরুদ্ধ ছিলাম, হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুতেও সেই অবস্থা হয়েছে। শরীরের চেয়েও কোটি গুণ বড় ছিল হুমায়ূন আহমেদের হৃদয়। তিনি জীবন যাপন করতেন সম্রাটের মতো। �তুই রাজাকার� অমর সংলাপ তিনিই প্রতিষ্ঠিত করেছেন।জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেন, তার মৃত্যুতে অন্ধকার অনুভূত হচ্ছে।জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল(জাসদ)�র সভাপতি হাসানুল হক ইনু জানান, হুমায়ূন আহমেদের সব বই যাতে ই-বুকে রূপান্তর করা যায়, সবাই যাতে তাঁর বই পড়তে সেজন্য সংসদীয় কমিটির বৈঠকে সেই দাবি জানাবো সরকারের কাছে।আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ ও বিএনপি�র স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, হুমায়ূন আহমেদ বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ট সন্তানদের একজন। তাঁর মৃত্যুতে সারাদেশ আজ শোকে ম্তব্ধ। এই মহান সন্তানের সৃষ্টি সকলদল-মত রাজনীতির উর্ধ্বে।নাট্যজন আতাউর রহমান বলেন, হুমায়ূন আহমেদ ৩শ� মতো বই লিখে গেছেন। বেঁচে থাকলে তিনি (হুমায়ূন আহমেদ) রবীন্দ্রনাথের সমান বই হয়তো লিখে যেতে পারতেন। বাঙালি যতদিন বেঁচে থাকবে, হুমায়ূন আহমেদও ততদিন বেঁচে থাকবেন।শিল্পী মোস্তফা মনোয়ার বলেন, হুমায়ূন আহমেদ মার্জিত রুচির রসিকতা করতেন তার রচনায়, নাটকে, চলচ্চিত্রে।বাবার কফিনের সামনে শিলাবাবার লাশের পাশে তার আদরের মেয়ে শিলা। দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ কেন্দ্রীয় শহীদমিনারে তার বাবাকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানান। নন্দিত হুমায়ূনের কফিনের পাশে শিলা ছাড়াও তার বোন নোভা, ভাই নুহাশ, পরিবারের আর সব সদস্য। শেকা বিহবল শিলা বিরামহীন কাঁদেন। কতো লেখায় কতোভাবে যে আদরের মেয়ে শিলার নাম এনেছেন হুমায়ূন। সেই বাবা এখন শিলার সামনে প্রাণহীন। ছেলের কফিনে মাথা রাখলেন মাকেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সকাল ১১টায় আসেন রত�গর্ভা আয়েশা ফয়েজ। তার সদ্য প্রয়াত ছেলেকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসা অগণিত মানুষের ভিড় ঠেলে এগিয়ে গেলেন কফিনের কাছে। আয়েশা ফয়েজ বলেন, হুমায়ূনরা নিউইয়র্কে যাওয়ার পর থেকে টেলিফোনে তাদের সঙ্গে প্রায়ই কথা হতো। এখন ছেলের সঙ্গে সামনাসামনি কথা বলতে পেরে ভালো লাগছে। আল্লাহ যেন আমার জীবনের বিনিময়ে হলেও ছেলেটাকে সুস্থ করে দেন।নির্বাক নুহাশবাবার লাশের কাছে গিয়ে নুহাশ ছিল নির্বাক। হলুদ পাঞ্জাবী গায়ে বাবার সৃষ্টি করা চরিত্র হিমু সাজে নুহাশ কেবল তাকিয়ে ছিল বাবার লাশের দিকে। পিতার মৃত্যু শোক যেন তার সমস্ত মন নিঙ্গরে নিয়ে গেছে সব আনন্দ, উচ্ছ্বাস। তার শুকনো নির্বাক দৃষ্টি যেন চিৎকার করে বলছে �বাবা একবার উঠে দেখ আমি তোমার নুহাশ, আমি এসেছি তোমার প্রিয় চরিত্র হিমু সেজে।�মন্ত্রিসভার শোককথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদ ও স্থপতি মাজহারুল ইসলামের মৃত্যুতে মন্ত্রিসভায় সর্বসম্মতিক্রমে শোকপ্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা এই শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন। পরে মন্ত্রিসভার সদস্যরা সর্বসম্মতিক্রমে তা অনুমোদন করেন।শ্রদ্ধা জানালেন কুতুবপুরবাসীরাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেশবরেণ্য লেখক হুমায়ূন আহমেদকে শেষ শ্রদ্ধা জানালেন কেন্দুয়ার কুতুবপুরবাসী। এ সময় তাঁর প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও উপস্থিত ছিলেন। জনপ্রিয় এই সাহিত্যিককে শ্রদ্ধা জানাতে তাঁর পৈত্রিক নিবাস কুতুবপুর থেকে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ সোমবার সকাল থেকেই ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলে আসেন। কুতুবপুরবাসী পক্ষে হুমায়ূন আহমেদের চাচা শিক্ষক আলতাফুর রহমান এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত স্কুল �শহীদস্মৃতি বিদ্যাপীঠ�-এর প্রধানশিক্ষক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ২০ মিনিটে হুমায়ূন আহমেদ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ম্যানহাটন বেলভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে এ নাট্যনির্মাতার বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর। খবর:-ফেয়ার নিউজ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়