Friday, June 15

আজ পয়লা আষাঢ়

পয়লা আষাঢ় আজ। জলবতী বর্ষার প্রথম দিন। কবিগুরু বলেন, ‘নীল নবঘনে আষাঢ়গগনে তিল ঠাঁই আর নাহি রে.....। গুরু-গুরু মেঘের গর্জন, মাঝেমধ্যে বিদ্যুৎ চমক, যখন-তখন ঝলমলে আকাশজুড়ে মেঘের ঘনঘটা আর অঝোরধারার বর্ষণ- এই হলো বাংলায় বর্ষার চিরচেনা রূপ।
ঋতুর হিসেবে আষাঢ়-শ্রাবণ দুই মাস বর্ষা বলে গণ্য হলেও প্রকৃতপক্ষে জুন মাসের হাত ধরে নেমে পড়ে বর্ষা। এ সময় থেকেই জলীয়বাষ্পবাহী দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হয়ে ওঠে। থাকে প্রায় আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত, যার পরিণাম প্রচুর বৃষ্টিপাত। বছরের প্রায় ৮০ শতাংশ বৃষ্টিই হয় বর্ষায়।এই অনাবিল বৃষ্টিধারা আর্দ্র-কোমল করে তোলে গ্রীষ্মের খরতাপে দগ্ধ ধরাতল। প্রকৃতিতে প্রাণসঞ্চার করে স্নিগ্ধ করে তোলে বাংলার নিসর্গ।
প্রচুর বৃষ্টিপাতে নদ-নদী, বিল-ঝিল ভরে ওঠে। ব্যাঙের ডাকে মুখর হয় গ্রামীণ পরিবেশ। টিনের চালে বৃষ্টির শব্দ সৃষ্টি করে চলে এক ভিন্ন সংগীত। গ্রামীণ জনজীবনে যোগ হয় বর্ষার নতুন পানিতে মাছ ধরার আনন্দ। বন্যায় নদী-তীরবর্তী অঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে জীবনযাত্রায় দুর্ভোগ সৃষ্টি করে। তবে বন্যাবাহিত পলি বাড়ায় জমি হয় উর্বরা। এসব কারণে কৃষিপ্রধান আমাদের এই দেশে বর্ষার গুরুত্ব ব্যাপক।
বাঙালির মানসে, সৃজনেও বর্ষার প্রভাব-প্রতিক্রিয়া সুদূরপ্রসারী। কাব্য, সংগীত, সাহিত্য, চিত্রকলায় বর্ষা বৈচিত্র্যময়; রূপে, ছন্দে, স্পন্দনে উদ্ভাসিত। বিশেষত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংগীত ও কাব্যের একটা বিরাট অংশ বর্ষাবন্দনায় মুখরিত।
বিদগ্ধজনেরা বলেন, বাংলার বর্ষাকে কবিগুরু নতুন করে আবিষ্কার করেছেন। ‘বাদল-দিনের প্রথম কদম ফুল’, ‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’, ‘মন মোর মেঘের সঙ্গী’, ‘হূদয় আমার নাচে রে আজিকে’, ‘মেঘের পরে মেঘ জমেছে’ থেকে শুরু করে ‘এমন দিনে তারে বলা যায়’ এমন অজস্র গানে, কবিতায় বর্ষার যে চিত্রকল্প তিনি সৃজন করেছেন, তা বাদ দিয়ে যেন বাংলায় বর্ষার পূর্ণতা পায় না। সূত্র খুলনা নিউজ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়